সম্প্রতি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কিও পশ্চিমের কাছে আর্জি জানিয়েছিলেন। ফাইল ছবি
ইউক্রেনে সেনা আগ্রাসন চালানোয় রাশিয়ার উপরে অসংখ্য আর্থিক নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে ইউরোপ-আমেরিকা। রুশ নেতা-মন্ত্রী-শিল্পপতিদের অনেককে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে তারা। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে তাঁদের বিদেশে থাকা বিপুল সম্পত্তি। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ব্যবসা-বাণিজ্য। এ বারে আরও এক ধাপ কঠোর হওয়ার কথা ভাবছে ইউরোপ। বর্তমানে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)-এর সভাপতিত্ব করছে চেক প্রজাতন্ত্র। তারা জানিয়েছে, এ বারে রুশ পর্যটকদের ভিসা দেওয়ায় নিষাধাজ্ঞা জারি হবে।
চেক বিদেশমন্ত্রী জান লিপাভস্কি একটি বিবৃতি জারি করে বলেন, ‘‘শীঘ্রই ইইউ-এর সব সদস্য দেশের পক্ষ থেকে রুশদের ভিসা দেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে। এটি হবে পরবর্তী কার্যকরী পদক্ষেপ।’’ অগস্টের শেষে প্রাগে একটি বৈঠকে ইইউ-এর বিদেশমন্ত্রীদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে। তার পরেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। লিপাভস্কির কথায়, ‘‘রুশ আগ্রাসনের এই সময়ে, বিশেষ করে মস্কো যে ভাবে হামলার গতিবেগ বাড়িয়েই চলেছে, তাতে রুশ নাগরিকদের সাধারণ পর্যটন নিয়েও আর ভাবা সম্ভব নয়।’’
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কিও পশ্চিমের কাছে আর্জি জানিয়েছিলেন, রুশ পর্যটকদের উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হোক। একটি আমেরিকান দৈনিককে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘‘রুশরা যতক্ষণ না তাঁদের দর্শন পরিবর্তন করছেন, ততক্ষণ তাঁদের নিজেদের জগতেই থাকা উচিত।’’
চেক প্রজাতন্ত্র দীর্ঘদিন আগেই সেই কাজ করেছে। যুদ্ধ শুরু হওয়ার এক দিন পর থেকেই, অর্থাৎ ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকেই তারা সাধারণ রুশদের ভিসা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। কিন্তু ফিনল্যান্ড দিয়ে ঢুকে গোটা ইউরোপেই ঘুরে বেড়াচ্ছেন অসংখ্য রুশ পর্যটক। শেনজ়েন অঞ্চলে রুশদের ভিসা লাগে না। একবার সে অঞ্চলে ঢুকলে, সেখান থেকে গোটা মহাদেশেই অবাধ যাতায়াত। চেক প্রজাতন্ত্রের বক্তব্য, এর মধ্যে রুশ গুপ্তচরেরাও থাকতে পারে। ফিনল্যান্ডের বিদেশমন্ত্রীপেকা হাভিস্তো গত সপ্তাহে জানিয়েছেন, রাশিয়ার নাগরিকদের ভিসা দেওয়ার বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে আনবেন তাঁরা। রুশ সীমান্ত ঘেঁষা এস্টোনিয়ার প্রধানমন্ত্রী কাজা কালাসও গত সপ্তাহে জানিয়েছেন, ইইউ-এর উচিত অবিলম্বে রুশদের ভিসা দেওয়া বন্ধ করা। এই দাবিকে সমর্থন জানিয়ে লিপাভস্কি বলেছেন, ‘‘এই কাজ করা হলে রাশিয়ার কাছে সরাসরি একটা স্পষ্ট বার্তাও পৌঁছবে।’’