(বাঁ দিকে) মঙ্গলবার মস্কোয় স্কুটার-বোমা ফাটার পর বিস্ফোরণস্থলের অবস্থা। রাশিয়ার সেনার লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইগর কিরলভ (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
মস্কোয় বিস্ফোরণে মৃত্যু হল রুশ সেনার রাসায়নিক অস্ত্র বিভাগের প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইগর কিরিলভের। মস্কোর একটি আবাসনের বাইরে স্কুটারের মধ্যে বোমা লুকিয়ে রাখা ছিল। সেই বোমা ফেটে মৃত্যু হয় রুশ সেনা জেনারেলের। মঙ্গলবার সকালের ওই বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছে ইগরের সহকারীরও। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ইউক্রেনের সেনার উপর রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে কিরিলভের উপর। তবে কারা স্কুটারে বোমা রেখে দিয়েছিলেন, সে বিষয়টি এখনও স্পষ্ট নয়। স্কুটার-বোমা বিস্ফোরণের তদন্ত শুরু করেছে রাশিয়া।
যে ভাবে স্কুটার-বোমা ফেটে কিরিলভের মৃত্যু হয়েছে, তাতে এটি একটি পরিকল্পিত হামলা বলেই প্রাথমিক ভাবে মনে করছে রাশিয়া। সেনা জেনারেলকে হত্যার পরিকল্পনা করেই স্কুটারে বোমা লুকিয়ে রাখা ছিল বলে সন্দেহ ক্রেমলিনের। গত তিন বছর ধরে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়ে রয়েছে। সংবাদমাধ্যম ‘দ্য গার্ডিয়ান’ জানিয়েছে, এই তিন বছরে এমন বড় মাপের কোনও সেনা আধিকারিক খুন হননি। আপাতত দুই আধিকারিককে খুনের অভিযোগে ফৌজদারি মামলা দায়ের করেছে রাশিয়ার তদন্তকারী সংস্থা। তবে রাশিয়ার সংবাদমাধ্যমগুলিকে সে দেশের তদন্তকারী সংস্থার সূত্র জানিয়েছে, পরে এটির সঙ্গে জঙ্গি হামলার মামলাও যুক্ত করা হতে পারে। এই বিস্ফোরণের বিষয়ে ইউক্রেনের তরফে এখনও পর্যন্ত কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
ঘটনাচক্রে, মস্কোয় এই স্কুটার-বোমা বিস্ফোরণের এক দিন আগেই ইউক্রেনের নিরাপত্তা সংস্থা এসবিইউ গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে কিরিলভের বিরুদ্ধে। তাঁর বিরুদ্ধে ‘যুদ্ধাপরাধ’-এর অভিযোগ তোলা হয়েছে। শুধু কিরিলভই নন, রাশিয়ার বহু সামরিক কর্তা এবং সরকারি আধিকারিকের বিরুদ্ধে ‘যুদ্ধাপরাধ’-এর অভিযোগ তুলেছে ইউক্রেন। তবে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ায় কোনও গুপ্তহত্যা বা সামরিক ঘাঁটিতে হামলার বিষয়ে তেমন কোনও তথ্য প্রকাশ্যে আসেনি।
ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ পরিস্থিতিতে রাশিয়া রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করেছে বলে একাধিক বার অভিযোগ উঠেছে। তবে সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে রাশিয়া। আমেরিকাও অতীতে দাবি করেছে, যুদ্ধক্ষেত্রে ‘ক্লোরোপিকরিন’ নামে একটি রাসায়নিক ব্যবহার করেছে রুশ বাহিনী, যা প্রতিপক্ষের সেনার শ্বাসরোধ করে, এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত ঘটাতে পারে। সেই অভিযোগও অস্বীকার করেছে ক্রেমলিন।