শনিবার রুশ বিমান হামলার পরে ইউক্রেনের ডনেৎস্ক অঞ্চলে। পিটিআই।
পূর্ব ও দক্ষিণ ইউক্রেনে রুশ হামলার রোষ আজও অব্যাহত। কৃষ্ণসাগরের তীরে দক্ষিণের বন্দর-শহর ওডেসায় আজ দিনভর একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র হানা চলেছে। দিনের শুরুতে অন্তত চারটি ক্ষেপণাস্ত্র আছড়ে পড়ার খবর মিলেছে। হতাহতের খবর জানা যায়নি। হামলা চলেছে সুমিতেও। একই অবস্থা খারকিভের। ভয়াবহ গোলাবর্ষণ চলেছে খারকিভ অঞ্চলে। এখানকার জাতীয় জাদুঘরেও ক্ষেপণাস্ত্র এসে পড়েছে।
তবে আমেরিকান সেনাবাহিনীর বিশেষজ্ঞ মহলের দাবি, শীঘ্রই খারকিভকে রুশ হামলার ভয় থেকে মুক্ত করতে সফল হবে ইউক্রেন। অন্য দিকে, ইউক্রেনের প্রশাসন জানিয়েছে, মারিয়ুপোলের ইস্পাত কারখানায় কয়েক সপ্তাহ ধরে আটকে থাকা লোকজনের মধ্যে সমস্ত মহিলা, শিশু ও বয়স্কদের বার করে আনা সম্ভব হয়েছে।
সামরিক অস্ত্র সরবরাহের পাশাপাশি যুদ্ধক্ষেত্রে ‘শত্রুপক্ষের’ অবস্থান, পরবর্তী রণকৌশল, এমন নানা গুরুত্বপূর্ণ খবর দিয়ে ইউক্রেনকে সাহায্য করে চলেছে আমেরিকা। কাল তারা নিজেরাই ঘোষণা করেছে, তাদেরই দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কৃষ্ণসাগরে রুশ যুদ্ধজাহাজ মস্কোভাকে ধ্বংস করতে সফল হয় ইউক্রেন। আজ আমেরিকান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আরও ১৫ কোটি ডলারের অস্ত্র ইউক্রেনে পাঠানোর কথা ঘোষণা করেছেন। বাইডেন বলেন, ‘‘নিরাপত্তা খাতে সাহায্য হিসেবে ইউক্রেনকে আরও অস্ত্র পাঠানো হচ্ছে। এর মধ্যে শত্রুর অস্ত্রের অবস্থান নির্ধারণকারী রেডার ও ওই জাতীয় অন্যান্য সরঞ্জাম রয়েছে।’’
এর আগেও বাইডেন সরকার ৩৪০ কোটি ডলার মূল্যের অস্ত্র ও অন্যান্য যুদ্ধসামগ্রী পাঠিয়েছে ইউক্রেনে। সূত্রের খবর, ইউক্রেনকে সাহায্য করতে আমেরিকান কংগ্রেসে ৩৩০০ কোটি ডলারের অনুমোদন দাবি করেছেন বাইডেন। আগামী কাল জি৭-এর সদস্য দেশগুলি ভার্চুয়াল বৈঠকে বসবে। অনলাইনে উপস্থিত থাকবেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কিও। যুদ্ধে ইউক্রেনের পাশে কী ভাবে থাকা যায়, রুশ-বিরোধিতার কৌশলই বা কী হবে, জ্বালানি সমস্যা কী ভাবে মোকাবিলা করা যায়, সব নিয়েই কথা হবে বৈঠকে।
ইউরোপের সব দেশের সম্পর্ক সরল করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন জ়েলেনস্কিও। এর মধ্যে উপরের তালিকায় জার্মানি। তাদের অনিচ্ছাতেই ইউরোপীয় ইউনিয়নে জায়গা হয়নি ইউক্রেনের। রুশ-বিরোধিতাতেও কিছুটা অনাগ্রহী ছিল জার্মানি। এখন অবশ্য তারাও অস্ত্র-সাহায্য পাঠাচ্ছে ইউক্রেনকে।
গত কাল জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শোলৎজ়কে ৯ মে বিজয় দিবসে কিভে আসার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন জ়েলেনস্কি। তার উত্তর অবশ্য মেলেনি। কিন্তু বার্লিন পুলিশ আজ ঘোষণা করেছে, বিজয় দিবসে রাশিয়া বা ইউক্রেন, কোনও দেশেরই পতাকা উড়বে না এই শহরের দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের স্মৃতিসৌধগুলিতে। জার্মানিতে ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূত অ্যান্ড্রি মেলনিক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, ‘‘আমরা স্তম্ভিত। এটা ইউক্রেন ও ইউক্রেনের মানুষের গালে চড়!’’