ট্রেনে চেপে জন্মভূমি ছেড়ে পোল্যান্ডে পৌঁছল ইউক্রেনীয় শিশু। বৃহস্পতিবার শেমিশেলে। ছবি: রয়টার্স।
যাঁরা যুদ্ধের পথ বেছে নেন, তাঁদের হারতেই হয়। গ্রিক পার্লামেন্টে একটি ভার্চুয়াল বক্তৃতায় আজ এমনই বার্তা দিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটার একাধিক অঞ্চল থেকে পিছু হটতে শুরু করেছে রুশ বাহিনী। রাজধানী কিভ ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকা এবং চেরনিহিভ শহর থেকে সম্পূর্ণ রুশ বাহিনীকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। অনেকেই বলছেন, শুধুমাত্র পূর্ব ইউক্রেনকে পাখির চোখ করছে রাশিয়া। আর পেন্টাগনের দাবি, ‘‘ইউক্রেন জিতেও যেতে পারে।’’
আমেরিকার সেনাবাহিনী দাবি করেছে, পরিস্থিতি বুঝে যুদ্ধকৌশলে কিছুটা পরিবর্তন এনেছে রাশিয়া। কিভ, চেরনিহিভ থেকে সম্পূর্ণ সেনা প্রত্যাহার করে দলটিকে বেলারুশ ও রাশিয়ায় ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানে তাদের পুনরায় যুদ্ধের জন্য তৈরি করা হচ্ছে। নতুন করে সামরিক অস্ত্র মজুত করা হচ্ছে। পেন্টাগনের মুখপাত্র জন কারবি সংবাদিক বৈঠকে বলেছেন, ‘‘প্রতিদিন যা ঘটছে, তাতেই প্রমাণ পাচ্ছেন... অবশ্যই ইউক্রেন জিতে যেতে পারে।’’
তবে দেশের বাকি অংশগুলোতে রুশ হামলা অব্যাহত। বিশেষ করে মারিয়ুপোলে। এক ইউক্রেনীয় কমান্ডার জানান, পৃথিবীর বুক থেকে মারিয়ুপোলকে পুরোপুরি মুছে ফেলতে চাইছে রুশ সেনা। মারিয়ুপোলের নৌবাহিনীর উপপ্রধান সেরি ভলনা বলেন, ‘‘যাঁরা সাধারণ মানুষকে সাহায্য করছিলেন, সেনার সেই অংশকে ঘিরে ফেলেছে প্রতিপক্ষরা। জল, খাবার, ওষুধ, কিছুই নেই।’’ প্রায় নিষ্ক্রিয় অবস্থায় আটকে রয়েছেন ভলনাও। তিনি বলেন, ‘‘৪০ দিন হয়ে গেল আমরা কার্যত বন্দি হয়ে রয়েছি। এমন ভাবে ঘিরে ফেলেছে ওরা, কিছু করতে পারছি না। সেনার সংখ্যা বা যুদ্ধাস্ত্র, সবেতেই শত্রুরা আমাদের থেকে বেশি শক্তিশালী।’’ ভলনা বলে চলেন, ‘‘পৃথিবীর বুক থেকে শহরটাকে মুছে ফেলতে চায় ওরা। কোনও কিছু যদি বেঁচে যায় বোমার হাত থেকে, ওরা ট্যাঙ্ক নিয়ে গিয়ে ভেঙে দিচ্ছে।’’
কিভের কাছে বুচা শহরে গণহত্যা প্রসঙ্গে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন আজ বলেন, ‘‘সাধারণ মানুষকে ঠান্ডা মাথায় রীতিমতো পরিকল্পনা করে হত্যা করে হচ্ছে।’’ বুচা-র ঘটনার জেরে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের দুই কন্যার উপরে ইতিমধ্যেই নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে আমেরিকা। জাপান আজ আন্তর্জাতিক আদালতকে বুচার ঘটনার বিচার করতে অনুরোধ করেছে। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, আন্তর্জাতিক আদালত তো রাশিয়াকে যুদ্ধ থামানোর নির্দেশ দিয়েছিল। সেই নির্দেশ উপেক্ষা করায় কিছু হয়েছে কি!