ভ্লাদিমির পুতিন। ছবি: সংগৃহীত।
রাশিয়াকে ‘ময়লা’ মুক্ত করবেন, হুমকি দিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। একটি টেলি সম্প্রচারিত বার্তায় পুতিনকে তাঁর স্বভাবসিদ্ধ শীতল কণ্ঠে বলতে শোনা গিয়েছে, রাশিয়া থেকে তিনি কিছু ময়লা এবং বিশ্বাসঘাতকদের বিদায় করতে চান। পুতিন বলেছেন, ‘‘মুখে ভুল করে মাছি ঢুকে গেলে যে ভাবে ফেলি, ওদেরও ঠিক সে ভাবেই বের করে ফেলব।’’
গত তিন সপ্তাহ ধরে অর্থনৈতিক সঙ্কটের মধ্যে দিয়ে চলেছে রাশিয়া। ইউক্রেনের বিরুদ্ধে পুতিনের যুদ্ধ ঘোষণার পর থেকেই আমেরিকা-সহ পশ্চিমের দেশগুলি রাশিয়ার বিভিন্ন অর্থনৈতিক সাহায্য বন্ধ করে দিয়েছে। পুতিনের ক্ষোভের কারণ সেটিই, বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক রাজনীতির পর্যবেক্ষকদের একাংশ। পুতিনের কথা আগামী দিনে বড় সঙ্ঘাতের অশুভ ইঙ্গিতও পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন তাঁরা। টেলিসম্প্রচারিত ওই বক্তৃতায় পুতিন সরাসরি আমেরিকা এবং তার সহযোগী পশ্চিমের দেশগুলিকে দায়ী করেছেন রাশিয়ার দুর্দিনের জন্য। পশ্চিমী শক্তিগুলি রাশিয়াকে ধ্বংসের পথে ঠেলে দিচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন পুতিন।
বৃহস্পতিবারই পুতিনকে ‘যুদ্ধ অপরাধী’ বলে মন্তব্য করেছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। পাল্টা পুতিনের অভিযোগ, আমেরিকা এবং তার সহযোগীদের মদতে রাশিয়ায় থেকেই রাশিয়ার বিরুদ্ধে কাজ করছেন কেউ কেউ। তাদের ‘বিশ্বাসঘাতক’ এবং ‘দেশের ময়লা’ বলে মন্তব্য করে পুতিন জানিয়েছেন, তিনি অবিলম্বে রাশিয়ার সাফাই অভিযানে নামবেন। পুতিন বলেছেন, এই দেশদ্রোহীদের সহজেই চেনা যাবে। আর যখন চেনা যাবে তখন মুখের ভিতর ঢুকে যাওয়া মাছির মতোই রাশিয়া ছুড়ে ফেলবে ওই বিশ্বাসঘাতকদের। বিষয়টিকে রাশিয়ার আত্মশোধনের প্রক্রিয়া বলেও ব্যাখ্যা করেছেন পুতিন। তিনি জানিয়েছেন, এই আত্মশোধনের মাধ্যমেই নিজেদের আরও শক্তিশালী করে গড়ে তুলতে পারবে রাশিয়া।
ঘটনাচক্রে, দিন কয়েক আগেই রাশিয়ার একটি টিভি চ্যানেলে সংবাদ পরিবেশন থামিয়ে একটি যুদ্ধ বিরোধী বিক্ষোভ দেখানো হয়। যুদ্ধ থামানোর দাবিতে ওই বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন রাশিয়ানরাই। তাঁদের হাতের প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল প্রশাসন মিথ্যে কথা বলছে। ভুল বোঝাচ্ছে। পরে চ্যানেলের এক প্রযোজককেও একই পোস্টার নিয়ে দাঁড়াতে দেখা যায় ক্যামেরার সামনে। পুতিনের লক্ষ্য কি তাঁরাই? এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
উল্লেখ্য, গত কয়েক দিন ধরেই রাশিয়ার সরকার বিরোধী বিক্ষোভ ক্রমশ দৃঢ় হচ্ছে। রাশিয়ানদের একাংশ বরাবরই ইউক্রেনের বিরুদ্ধে পুতিনের সেনা অভিযানের সমালোচনা করে এসেছেন। তাঁদের অভিযোগ ছিল, পুতিন মুখে ইউক্রেনের সেনার বিরুদ্ধে অভিযানের কথা বললেও কার্যক্ষেত্রে তাঁরা নিরপরাধ সাধারণ মানুষকে হত্যা করছে। পুতিনের টেলিবার্তায় আশঙ্কা, তবে কি দেশের মানুষের বিরুদ্ধেও এ বার খড়্গহস্ত হবেন রুশ প্রেসিডেন্ট?