ফাইল ছবি।
কিভ ও চেরনিহিভে সেনা তৎপরতা কমানোর কথা ঘোষণা করেছে মস্কো। অবশেষে সামান্য হলেও আশার আলো দেখতে পাওয়া যাচ্ছে বলে মনে করছেন অনেকে। কিন্তু রাশিয়ার এই ঘোষণাকে ‘বোকা বানানোর বন্দোবস্ত’ বলে দাবি করল আমেরিকা। হোয়াইট হাউসের মতে, এটা মস্কোর কৌশলগত বদল মাত্র। এর সঙ্গে যুদ্ধের তীব্রতা কমার বিন্দুমাত্র কোনও সম্পর্ক নেই। আসলে এমন গালভরা কথা বলে দুনিয়ার নজর ঘোরাতে চান রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, মনে করছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
মঙ্গলবার ইস্তানবুলে মুখোমুখি আলোচনায় বসেছিল রাশিয়া ও ইউক্রেন। সেই বৈঠক শেষে রাশিয়ার উপ-প্রতিরক্ষা মন্ত্রী জানান, ইউক্রেনের রাজধানী কিভ ও চেরনিহিভে সেনা তৎপরতা ক্রমশ কমানো হবে। আর একেই ‘তামাশা’ বলে দাবি করছে আমেরিকা। মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসে পেন্টাগনের প্রেস সচিব জন কিরবি বলেন, ‘‘এটা আসলে রাশিয়ার যুদ্ধ পরিকল্পনায় কৌশলগত পরিবর্তন। এর সঙ্গে সেনা প্রত্যাহারের কোনও সম্পর্কই নেই। এ বার মস্কোর নিশানায় আসতে চলেছে ইউক্রেনের বাকি অংশ। পাশাপাশি কিভেও হামলার তীব্রতা কমার কোনও আশা নেই।’’ কিরবির মতে, মস্কো কিভ দখলের প্রয়াসে বার বার ব্যর্থ হওয়ার পর নতুন রণকৌশল নিয়ে ঝাঁপাচ্ছে।
এ দিকে তুরস্কের রাজধানী ইস্তানবুলে শান্তি বৈঠকে বেশ কিছু সূত্র বেরিয়ে এসেছে বলে মনে করা হচ্ছে। রাশিয়ার তরফের মুখ্য মধ্যস্থতাকারী ভ্লাদিমির মেদিনস্কি আলোচনাকে গঠনমূলক হিসেবে অভিহিত করেছেন। এই প্রেক্ষিতেই আমেরিকার সেক্রেটারি অব স্টেট অ্যান্টনি ব্লিনকিন বলেছেন, ‘‘এটা আসলে শান্তি বার্তার আড়ালে আরও ভয়ঙ্কর আক্রমণের রুশ কৌশল।’’
পেন্টাগনের মতে, খুব সামান্য সংখ্যক সেনাকে কিভ ও পাশ্ববর্তী এলাকা থেকে সরিয়ে অন্যত্র নিয়ে যাবে রাশিয়া। এতে হামলার তীব্রতায় কোনও ফারাক হওয়ার সম্ভাবনা নেই। বরং ইউক্রেনের অন্যত্র একই মাত্রার হামলা শুরু হল বলে।
বেলারুশের শান্তি আলোচনা থেকে ইস্তানবুল— ইউক্রেনের আলোচনার অভিমুখের একটা স্পষ্ট বদল টের পাচ্ছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা। নেটোর মুখাপেক্ষী হওয়ার বদলে ইস্তানবুলে বহুদেশীয় নজরদার সমিতি তৈরির ব্যাপারে জোর দিচ্ছেন জেলেনস্কির দেশের প্রতিনিধিরা। অর্থাৎ আমেরিকা ও পশ্চিমী দেশগুলি যে প্রকৃত অর্থে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে ময়দানে নামবে না, সে ব্যাপারে কার্যত নিশ্চিত হয়েছে কিভ। তারই ফলশ্রুতিতে কি ক্রমশ নরম অবস্থানের পথে জেলেনস্কি? আর তা আঁচ করতে পেরেই কি এমন প্রতিক্রিয়া ওয়াশিংটনের? প্রশ্ন থাকছে।