মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুতেরেস। —ফাইল চিত্র।
মস্কো ঘুরে ইউক্রেনে পৌঁছলেন রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুতেরেস। গত কাল রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দেখা করেছিলেন তিনি। শোনা গিয়েছে, রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘর্ষে সাধারণ মানুষকে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে উদ্ধারের বিষয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জের মধ্যস্থতার শর্তে রাজি হয়েছেন পুতিন। কিন্তু এটুকুই অবস্থান। রাশিয়াকে সরাসরি আক্রমণ করে কিছু বললেন না গুতেরেস। যুদ্ধ বন্ধ করার বিষয়েও জোর দিতে শোনা গেল না তাঁকে।
রাশিয়া থেকে পোল্যান্ড হয়ে ইউক্রেনের রাজধানী কিভে পৌঁছন গুতেরেস। টুইট করেন, ‘‘মস্কো সফর সেরে ইউক্রেনে পৌঁছেছি। সাধারণ মানুষের কাছে ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দেওয়া, তাঁদের নিরাপদে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে উদ্ধার করে আনা, এ সবই আমরা চালিয়ে যাব। যত তাড়াতাড়ি যুদ্ধ থামে, ততই মঙ্গল। ...ইউক্রেনের জন্য, রাশিয়ার জন্য এবং সর্বোপরি পৃথিবীর জন্য।’’
কিভের আশপাশে যে সব অঞ্চল রুশ বাহিনীর দখলে ছিল, জায়গাগুলি ঘুরে দেখেন গুতেরেস। রাজধানীর উত্তর-পশ্চিমে বোরোডিয়াঙ্কা শহরে গিয়ে এলাকা পরিদর্শন করে সাংবাদিক বৈঠক করেন তিনি। রুশ গোলায় ধ্বংস হয়ে যাওয়া একটি আবাসনের সামনে দাঁড়িয়ে গুতেরেস সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘একবিংশ শতকে এই যুদ্ধ মেনে নেওয়া যায় না! কোনও যুক্তি নেই।’’ এর পরে তিনি বুচা শহরেও যান। মারিয়ুপোলের পরে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এই শহর। শোনা যায়, এই বুচায় এমন একটি পরিবারও নেই, যার কোনও এক জন সদস্য প্রাণ হারাননি যুদ্ধে। গণকবরের সামনে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, ‘‘যুদ্ধ করাটাই একটা অপরাধ।’’ বোরোডিয়াঙ্কা ও বুচার পরে ইরপিনে যান গুতেরেস। সব ক’টি শহরেই যুদ্ধের ক্ষত টাটকা। কিভের আশপাশের এলাকা থেকে সেনা প্রত্যাহার করেছে রাশিয়া। জায়গাগুলি ছেড়ে যাওয়ার সময়ে নিধনযজ্ঞ চালিয়ে গিয়েছে। ধ্বংসস্তূপের মধ্যেই স্বাভাবিক জীবনে ফেরার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বাসিন্দারা। সংবাদমাধ্যম আজ শহরগুলিতে গিয়ে দেখেন, অল্প একটু বাজার বসেছে। মাংস-সব্জি বিক্রি হচ্ছে। বিদ্যুতের খুঁটি মেরামতের কাজ চলছে। কিভের আঞ্চলিক বাহিনীর প্রধান ওলেকজ়ান্ডার পাভলিয়ুক বলেন, ‘‘রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিবের সবটা নিজের চোখে দেখা দরকার ছিল। রাশিয়াকে থামাতে এটা জরুরি।’’
ইউক্রেন ও তার বন্ধু দেশগুলিকে হুমকি দিয়েই চলেছে রাশিয়া। মস্কোর সঙ্গে শত্রুতার আঁচ ইতিমধ্যেই টের পাচ্ছে বুলগেরিয়া। আজ ইউক্রেন বলেছে, ‘‘রাশিয়া আমাদের সাধারণ মানুষকে হত্যা করছে। খুনিদের হাত থেকে আত্মরক্ষায় আমরাও হামলা চালাবো। ওদের ঘাঁটি ভাঙব, অস্ত্রভান্ডারও দুরমুশ করব।’’