গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
ইউক্রেন যুদ্ধের আবহেই জার্মানির মাটিতে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র বসানোর কাজ করেছে আমেরিকা। নেটো জোটের দুই সদস্যরাষ্ট্রের এই তৎপরতা নিয়ে শুক্রবার কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে রাশিয়া। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সরকারের অভিযোগ, এর ফলে ইউরোপের মাটিতে আবার ঠান্ডা যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হবে।
আমেরিকা এবং জার্মানি বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনে নেটোর বৈঠকের পরে যৌথ বিবৃতিতে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের কথা জানিয়েছিল। বিবৃতিতে বলা হয়, ২০২৬ সালের গোড়া থেকে জার্মানির মাটিতে পর্যায়ক্রমে টোমাহক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র বিধ্বংসী এসএম-৬ এবং হাইপারসনিক (শব্দের চেয়ে অন্তত পাঁচ গুণ বেশি গতিবেগসম্পন্ন) ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের কাজ শুরু হবে।
ইউরোপের বিভিন্ন নেটো জোটভুক্ত দেশে আমেরিকা যে সব ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে, সেগুলির চেয়ে ওই ক্ষেপণাস্ত্রগুলির পাল্লা বেশি। পূর্ব ও পশ্চিম ইউরোপে এই ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন থেকে বিরত থাকার বিষয়ে ১৯৮৮ সালে আমেরিকা এবং তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের (বর্তমান রাশিয়া তারই অংশ) মধ্যে একটি চুক্তি হয়েছিল। বস্তুত, ওই ঘটনাই ইউরোপে ঠান্ডা যুদ্ধের অবসানের সূচনা করেছিল। কিন্তু কয়েক বছর আগে চুক্তিটি বাতিল হয়ে গিয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে জার্মানির মাটিতে আমেরিকার ক্ষেপণাস্ত্র ফেরানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেশকভ। তিনি বলেন, ‘‘এর ফলে আবার ঠান্ডা যুদ্ধ এবং প্রত্যক্ষ সঙ্ঘাতের পরিস্থিতি তৈরি হবে।’’ ওয়াশিংটনে নেটোর ওই বৈঠকে ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের বিষয়ে ফ্রান্স এবং পোল্যান্ডের সঙ্গেও সমঝোতা করেছেন জার্মানির প্রতিরক্ষামন্ত্রী বরিস পিস্টোরিয়াস। তিনি বলেন, ‘‘আমেরিকা চায় আমরাও দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র নির্মাণ এবং মোতায়েন করি।’’ জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ স্কোলজ ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন।