দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল। —ফাইল চিত্র।
আবগারি মামলায় ধৃত দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়ালের অন্তর্বর্তী জামিন মঞ্জুর করল সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতি সঞ্জীব খন্না এবং বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের ডিভিশন বেঞ্চ শুক্রবার এই নির্দেশ দিয়েছে। আম আদমি পার্টি (আপ)-র প্রধানকে গ্রেফতারি কেন্দ্রীয় সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর বেআইনি পদক্ষেপ কি না, সে সম্পর্কে কেজরীর আবেদনের প্রেক্ষিতেই এই নির্দেশ। যদিও কেজরী এখন সিবিআই হেফাজতে থাকায় সেই মামলায় পৃথক ভাবে জামিন নিতে হবে তাঁকে। আগামী ১৭ জুলাই সেই মামলার শুনানি হবে দিল্লি হাই কোর্টে। তার আগে তিহাড় থেকে মুক্তি পাচ্ছেন না কেজরী।
উল্লেখ্য, ইডির গ্রেফতারি বেআইনি, এমন দাবি করে দিল্লি হাই কোর্টে মামলা করেছিলেন কেজরী। কিন্তু হাই কোর্ট জানিয়ে দিয়েছিল, ইডির গ্রেফতারি বেআইনি নয়। উচ্চ আদালতের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন আম আদমি পার্টির (আপ) প্রধান। শুনানি পর্বের শেষে গত ১৭ মে রায় সংরক্ষিত রেখেছিল দুই বিচারপতির বেঞ্চ। শুক্রে সুপ্রিম কোর্টে নির্দেশের পরে কেজরীর আইনজীবী বিবেক জৈন বলেন, ‘‘আমরা শীর্ষ আদালতকে বলেছিলাম, প্রয়োজনীয় নথি ও তথ্য় ছাড়াই গ্রেফতারি হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট সেই যুক্তির ভিত্তিতেই অন্তর্বর্তী জামিন দিয়েছে। ১৭ জুলাই দিল্লি হাই কোর্টকেও আমরা একই কথা বলব।’’
গত ২১ মার্চ আবগারি দুর্নীতি মামলায় কেজরীকে গ্রেফতার করেছিল ইডি। তিনি মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেননি। ফলে দেশের ইতিহাসে তিনিই প্রথম মুখ্যমন্ত্রী, যাঁকে পদে থাকাকালীন গ্রেফতার করা হয়। এর পর লোকসভা ভোটের সময়ে তাঁকে কিছু দিনের জন্য অন্তর্বর্তী জামিন দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। তার মেয়াদ শেষ হলে ২ জুন আবার তিহাড় জেলে গিয়ে আত্মসমর্পণ করেছিলেন কেজরী।
গত ২০ জুন দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালত কেজরীর স্থায়ী জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেছিল। ইডির তরফে বৃহস্পতিবার কেজরীর জামিন ৪৮ ঘণ্টা পিছিয়ে দেওয়ার আবেদন করা হলেও বিচারক ন্যায় বিন্দু এক লক্ষ টাকার বন্ডে জামিন দিয়েছিলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে দিল্লি হাই কোর্টে আবেদন করেছিল ওই মামলার তদন্তকারী সংস্থা ইডি। আবগারি দুর্নীতিতে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী ১০০ কোটি টাকার ঘুষ চেয়েছিলেন বলেও হাই কোর্টকে জানায় ইডি।
পাশাপাশি, দিল্লি হাই কোর্টে ইডির তরফে অভিযোগ করা হয়, ‘বেআইনি আর্থিক লেনদেন প্রতিরোধ আইন’ (পিএমএলএ)-এর ৪৫ নম্বর ধারা অনুযায়ী জামিনের বিরোধিতা করে জমা দেওয়া নথিগুলি যথাযথ ভাবে বিবেচনা করার কথা ছিল রাউস অ্যাভিনিউ আদালতের। কিন্তু বিচারক বিন্দু তা করেননি। গত ২৫ জুন ইডির আবেদন মেনে বিচারপতি সুধীরকুমার জৈন এবং বিচারপতি রবীন্দ্র দুদেজার অবকাশকালীন বেঞ্চ কেজরীর জামিন খারিজ করে দেয়।
এর পরে গত ২৫ জুন তিহাড়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের পরে জেলবন্দি কেজরীকে রাউস অ্যাভিনিউ আদালতের অনুমোদনে হেফাজতে নেয় আবগারি মামলার আর এক তদন্তকারী কেন্দ্রীয় সংস্থা সিবিআই। ঘটনাচক্রে, সেই মেয়াদ শেষ হয়েছে শুক্রবার। সিবিআই হেফাজতকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কেজরী রাউস অ্যাভিনিউ আদালতে আবেদন জানালেও তা খারিজ হয়ে গিয়েছিল। তার পর দিল্লি হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি।