রবিবারই সরকার ঘোষণা করেছিল, নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর খুচরো বিক্রিতে নিয়ন্ত্রণ জারি করা হল।
রুশ ট্যাঙ্ক ও সাঁজোয়া গাড়ির বহর যখন সীমান্ত পেরিয়ে ইউক্রেনের কিভ, খারকিভ, সুমি বা মারিয়ুপোলের দিকে এগিয়ে চলেছে, দেশে চরম সঙ্কটে পড়েছেন রাশিয়ার সাধারণ মানুষ। রবিবারই সরকার ঘোষণা করেছিল, নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর খুচরো বিক্রিতে নিয়ন্ত্রণ জারি করা হল। সোমবার থেকে তা কার্যকর হওয়ায় প্রমাদ গুনছেন সাধারণ মানুষ।
যে রাশিয়া ইউরোপ, আফ্রিকা এবং এশিয়া মহাদেশের একটা বিরাট অংশের ‘রুটির ঝুড়ি’ নামে পরিচিত, তার বাসিন্দাদেরই এখন ঢালাও রুটি কেনার সুযোগ রইল না। সঙ্গে আটা, চিনি, ময়দা, ভোজ্য তোল বা চালের ঢালাও খুচরো বিক্রিতে রাশ টানা হয়েছে। রাশিয়ায় নিত্যপ্রয়োজনীয় এই সব সামগ্রীর মজুত এবং বাজারদর নিয়ন্ত্রণ করে সরকার। সোভিয়েতের পতনের পরে অবাধ বাজার অর্থনীতির ঢেউয়ে এই সব সামগ্রীর দর সাধারণের নাগালের বহু গুণ বাইরে চলে গিয়েছিল। এর জন্য ব্যবসায়ীদের মজুতদারি ও কালোবাজারিকে দায়ী করে ভ্লাদিমির পুতিন সরকার নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মজুত ও দর নিয়ন্ত্রণ সরকারের হাতে নিয়ে আসে। অন্য অনেক কারণের সঙ্গে এই সিদ্ধান্তও দশকের পর দশক পুতিনের শাসন ধরে রাখার অন্যতম কারণ বলে মনে করা হয়। যুদ্ধের ফলে এক দিকে যেমন সাধারণের মধ্যে বাড়তি জিনিস কিনে জমিয়ে রাখার প্রবণতা বেড়েছে, একই সঙ্গে পরে অনেক দাম পাওয়ার লোভে ব্যবসায়ীদের মধ্যে মজুতদারি বেড়েছে। পুতিন সরকার জানিয়েছে, দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর কালোবাজারি রুখতেই খুচরো বিক্রিতে রাশ টানা হল। এমন নয় যে মানুষ দোকানে গিয়ে জিনিস পাচ্ছেন না, কিন্তু সরকারি ঘোষণাই তাঁদের আতঙ্কিত করে তুলেছে।
ইতিমধ্যে রুবলের দাম ডলারের নিরিখে তলানিতে এসে পৌঁছেছে। এ দিকে হু-হু করে বাড়ছে দ্রব্যমূল্য। তার উপরে চাল, আটা, তেলের মতো সামগ্রী কেনাকাটায় নিয়ন্ত্রণ চাপায় সাধারণ মানুষ তটস্থ।