Boris Johnson

Boris Johnson: ক্ষেপণাস্ত্র হামলা কিভে, বরিসের উপরে রুশ নিষেধাজ্ঞা 

ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের রাশিয়ায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে মস্কো। ব্রিটেনের আরও কিছু মন্ত্রীর উপরেও নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০২২ ০৫:৪৫
Share:

রুশ হানায় জ্বলছে খারকিভ। রাস্তায় ব্যস্ত দমকলকর্মীরা। শনিবার। ছবি: রয়টার্স

গত দু’সপ্তাহ একেবারে শান্ত হয়ে গিয়েছিল কিভ। আশপাশের যে অঞ্চলগুলোতে রুশ সেনাবাহিনী দখল নিয়েছিল, ক্রমে তারাও সেখান থেকে পিছু হটেছিল। সকলে বলছিল, গোটা ইউক্রেনের আশা ছেড়ে পূর্ব দিকের উপরে নজর দিচ্ছে রাশিয়া। কিন্তু দু’দিন আগে ইউক্রেনের ক্ষেপণাস্ত্রে রুশ যুদ্ধজাহাজ মস্কভা ধ্বংস হওয়ার পর থেকে ফের অশান্ত কিভ। কিভ-নেতৃত্বকে সরাসরি হুমকি ছুড়ে দিয়ে ইউক্রেনের রাজধানীতে আজ একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাল মস্কো।

Advertisement

মস্কভা ধ্বংস করেছিল ইউক্রেন নেপচুন ক্ষেপণাস্ত্র। প্রথমেই কিভের কাছে ওই ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির কারখানায় পাল্টা রকেট ছোড়ে রাশিয়া। গত কালের সেই ঘটনার পরে শুক্রবার রাতভর হামলা চলেছে কিভে। রাজধানীর মেয়র ভিটালি ক্লিৎসকো জানিয়েছেন, কিভের উপকণ্ঠে ডারনিৎস্কিতে একাধিক বিস্ফোরণ ঘটেছে। উদ্ধারকারী দল ও স্বাস্থ্যকর্মীদের পাঠানো হয়েছে সেখানে। হতাহতের খবর এখনও জানা নেই। তবে পরপর হামলায় ফের আতঙ্ক গ্রাস করছে কিভকে। অ্যানা বুডকো নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘শব্দ শুনলেই ভয় লাগে। গাড়ির দরজা বন্ধ করলেও আওয়াজে কেঁপে উঠি। সবসময় যেন একটা ভয় ঘিরে রেখেছে। প্রতিনিয়ত সেই আতঙ্ক জয় করার চেষ্টা করছি। বোঝাতে পারব না ঠিক...।’’ আজ দিনের শুরুতে কিভেও ক্ষেপণাস্ত্র হানা চলেছে। ক্লিৎসকো জানিয়েছেন, এক জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। অনেকে আহত। মেয়র বলেন, ‘‘ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধী ব্যবস্থা রক্ষা করার চেষ্টা করছে। কিন্তু শত্রুরা নির্মম, নির্দয়।’’

মস্কভা ধ্বংসের পর থেকেই আরও বিধ্বংসী হয়ে উঠেছে রাশিয়া। তাদের বক্তব্য, ইউক্রেনের এই দুঃসাহস ও শক্তির পিছনে রয়েছে পশ্চিমের দেশগুলির মদত। গত কাল রাশিয়ার সরকারি টিভি চ্যানেলে বলা হয়েছে, সরাসরি না-হলেও নেটোর বিরুদ্ধেই লড়াই চলছে, একে ‘তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ’ও বলা যায়। আজ ফের ক্রেমলিনের হুঁশিয়ারি, পশ্চিমের দেশগুলো যদি ইউক্রেনকে এ ভাবে অস্ত্র সরবরাহ করতে থাকে, তার পরিণতি হবে ‘অকল্পনীয়’। একটি কূটনৈতিক বিবৃতিতে মস্কো বলেছে, ‘‘আমেরিকা ও নেটো অত্যন্ত শক্তিশালী অস্ত্র কিভের হাতে তুলে দিচ্ছে। এতে শুধুমাত্র আগুনে ঘি ফেলা হচ্ছে। এর পরিণতি এমন হবে, যা কেউ অনুমান পর্যন্ত করতে পারছে না।’’

Advertisement

আজ ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের রাশিয়ায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে মস্কো। তিনি ছাড়াও ব্রিটেনের আরও কিছু মন্ত্রীর উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। যেমন, ঋষি সুনক, প্রীতি পটেল, বেন ওয়ালেস, লিজ় ট্রাস, ডোমিনিক রাব, প্রাক্তন মন্ত্রী টেরেসা মে-সহ আরও অনেকে। ইউক্রেনের পাশে দাঁড়ানোর জন্যই বরিস ও তাঁর মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ করেছে রাশিয়া। একটি বিবৃতিতে তারা জানিয়েছেন, ‘‘আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে রাশিয়াকে একঘরে করে দেওয়ার জন্য টানা রাজনৈতিক প্রচার চালিয়ে গিয়েছে লন্ডন। তাদের সিদ্ধান্তের জন্যই এ দেশের অভ্যন্তরে অর্থনৈতিক পরিকাঠামোর শ্বাসরুদ্ধ করার মতো অবস্থা।’’ মার্চ মাসে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের উপরে একই নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে রাশিয়া।

মস্কোর দাবি, এ হল তাদের ‘বিশেষ সেনা অভিযান’। ইউক্রেনের আগ্রাসন নয়। আজও দিনভর হামলা চলেছে। দক্ষিণে মারিয়ুপোল, উত্তর-পূর্বে খারকিভ আজও জ্বলছে। খারকিভে আজ রুশ গোলাবর্ষণে ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে একটি সাত মাসের শিশুও রয়েছে। বুচা-সহ কিভের আশপাশের অঞ্চলগুলি থেকে ৯০০-রও বেশি মৃতদেহ মিলেছে। বেশির ভাগকেই গুলি করে মেরেছে রুশ সেনা। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি আজ ঘোষণা করেন, অন্তত ৩ হাজার সেনা নিহত হয়েছেন। জখম ১০ হাজারেরও বেশি। জ়েলেনস্কি বলেন, ‘‘আহতদের মধ্যে কত জন বাঁচবেন, জানা নেই।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement