ইউক্রেন সঙ্কটের সময়ে পোলান্ড-সহ পূর্ব ইউরোপের কয়েকটি দেশে অতিরিক্ত সেনা পাঠিয়েছে আমেরিকা। শুক্রবার পোলান্ডের আমেরিকান সেনা ঘাঁটিতে সেনাদের সঙ্গে দেখা করেন আমেরিকান প্রতিরক্ষাসচিব লয়েড অস্টিন। রয়টার্স ।
প্রায় হুমকির সুরেই গত কাল রাষ্ট্রপুঞ্জের বৈঠকে আমেরিকান বিদেশসচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন রাশিয়াকে উদ্দেশ করে বলেছিলেন, মস্কো যেন সরাসরি জানায় যে ইউক্রেনের উপরে রুশ বাহিনী হামলা চালাবে না। মস্কো তার জবাব তো দেয়ইনি, উল্টে পরমাণু যুদ্ধের জন্য মহড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে তারা। আগামী কাল থেকেই সেই মহড়া শুরু হওয়ার কথা। ইউক্রেন সীমান্তে উত্তেজনার আবহে রাশিয়ার এই সিদ্ধান্ত পরিস্থিতি আরও জটিল করবে বলে মত পশ্চিমী দেশগুলির। তবে রুশ বিদেশ মন্ত্রক আজ সেই দাবি উড়িয়ে দিয়েছে। উল্টে তাদের বক্তব্য, তাদের পরমাণু যুদ্ধাস্ত্রের মহড়ার সঙ্গে পরিস্থিতি জটিল হওয়ার কোনও সম্পর্ক নেই। কারণ এটা তাদের সামগ্রিক মহড়ারই একটা অংশ। সব বিষয়ে তারা স্বচ্ছ বলেও আজ দাবি করেছে ক্রেমলিন।
এই অবস্থায় আজ আবার আমেরিকান প্রতিরক্ষাসচিব লয়েড অস্টিন রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে ফোন করে সীমান্ত থেকে রুশ সেনা প্রত্যাহারের বার্তা দেন। যদিও রাশিয়া যে কোনও মুহূর্তে ইউক্রেনে আক্রমণ করতে পারে বলে কাল আমেরিকান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যে বার্তা দিয়েছিলেন, তার প্রেক্ষিতে ইউক্রেন সীমান্তে আরও সেনা মোতায়েনের প্রস্ততি নিচ্ছে নেটো বাহিনীও।
আজ বিকেলে এয়ার ইন্ডিয়ার তরফে জানানো হয়েছে, আগামী সপ্তাহে তিন দিন তারা বিশেষ উড়ান চালাবে যাতে ইউক্রেনে বসবাসকারী ভারতীয়েরা দেশে ফিরতে পারেন। আগামী ২২, ২৪ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি ওই বিশেষ উড়ান চালানো হবে বলে জানিয়েছে উড়ান সংস্থাটি।
এ দিকে, গত কালই রাষ্ট্রপুঞ্জে ভারত জানিয়েছে যে, ইউক্রেন ও রাশিয়ার সীমান্ত সমস্যার যাতে কূটনৈতিক পথে সমাধান হয়, তা তারা একান্ত ভাবে চাইছে। রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি টিএস তিরুমূর্তি বলেছেন, ‘‘এখন প্রয়োজন শান্ত ও গঠনমূলক কূটনীতির। যা দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা কমাতে সাহায্য করবে।’’ এই বিষয়ে ভারতের ‘ভারসাম্যপূর্ণ ও নিরপেক্ষ’ অবস্থানকে স্বাগত জানিয়েছে রাশিয়া। রাশিয়া ও ইউক্রেনের আধিকারিকদের সঙ্গে ভারত সরকার এ নিয়ে যোগাযোগ রেখেছে বলেও জানান তিরুমূর্তি। দু’দেশের মধ্যে চাপানউতোর কমাতে ভারতকে যদি সদর্থক কোনও ভূমিকা নিতে হয়, তাতে তাঁরা প্রস্তুত বলেও রাষ্ট্রপুঞ্জে জানিয়েছেন তিরুমূর্তি।
তবে আজ দিনভরই উত্তেজনার আবহ ছিল ইউক্রেন ও রাশিয়া সীমান্তে। রুশপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদীরা দাবি করেছে, দফায় দফায় তাদের ঘাঁটির দিকে বোমাবর্ষণ করেছে ইউক্রেনের সেনা। রাশিয়ার সরকারও আজ ইউক্রেনে বাহিনীর দিকে লাগাতার বোমাবর্ষণের অভিযোগ তুলেছে। কিভ অবশ্য অভিযোগ স্বীকার করেনি। উল্টে, বাইডেনের সুরে সুর মিলিয়েই ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক আজ অভিযোগ করেছে যে প্রতিশ্রুতি মতো রাশিয়া সীমান্ত থেকে আদৌ বাহিনী সরায়নি। আমেরিকান গোয়েন্দারা জানাচ্ছেন, এই মুহূর্তে ইউক্রেন সীমান্তে কম করে ১ লক্ষ ৯০ হাজার সেনা মজুত রেখেছে রাশিয়া। ইউক্রেন পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে আজ ইউরোপের দেশগুলির সঙ্গে ভিডিয়ো বৈঠকে বসবেন
বাইডেন।