মহম্মদ মুইজ্জু। —ফাইল চিত্র।
মলদ্বীপের মুইজ্জু সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে বড় পদক্ষেপ করার ইঙ্গিত দিয়েছে সে দেশের প্রধান বিরোধী দল ‘মলদ্বীভিয়ান ডেমোক্রেটিক পার্টি (এমডিপি)’। প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জুর বিরুদ্ধে অনাস্থা জানিয়ে ইমপিচমেন্ট (বেআইনি কার্যকলাপের ভিত্তিতে উচ্চ পদে থাকা সরকারি কর্তাকে আনুষ্ঠানিক ভাবে অপসারণ) প্রক্রিয়া শুরু করতে প্রচুর স্বাক্ষরও সংগ্রহ করে ফেলেছে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট মহম্মদ সোলির দল। এই পরিস্থিতিতে মুইজ্জুর পাশে দাঁড়িয়ে বিবৃতি দিল মলদ্বীপের শাসকজোটের দুই শরিকদল। এই দুই দলের মধ্যে মুইজ্জুর নিজের দল পিপলস ন্যাশনাল কংগ্রেস (পিএনসি)-ও রয়েছে।
সোমবার সাংবাদিক বৈঠক করে মলদ্বীপের শাসকজোটের অন্যতম শরিক প্রগ্রেসিভ পার্টি অফ মলদ্বীপ (পিপিএম)-এর সাংসদ আহমেদ সালিম জানান, মুইজ্জুকে অপসারণ করার যাবতীয় চেষ্টা তাঁরা যে কোনও মূল্যে প্রতিহত করবেন। তিনি বলেন, “আমরা বিরোধীদের এই চেষ্টা সফল হতে দেব না। প্রেসিডেন্টকে পদ থেকে সরানোর কথা ভাবার আগে ওদের আগে আমাদের হত্যা করতে হবে।” এই মন্তব্য মুইজ্জু সরকারের শরিক দলটি সরাসরি সংঘাতে যাওয়ার ইঙ্গিত দিল বলে মনে করা হচ্ছে।
রবিবারই মলদ্বীপের পার্লামেন্টে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন সে দেশের বর্তমান শাসক জোটের দুই দল পিএনসি, পিপিএম এবং বিরোধী দল এমডিপি-র সদস্যেরা। মুইজ্জুর মন্ত্রিসভায় সদস্য নিয়োগের জন্য পার্লামেন্টের অনুমোদন আদায় করতে ওই দিন বিশেষ অধিবেশন ডাকা হয়েছিল। কিন্তু মন্ত্রিসভার চার সদস্যকে নিয়োগ করার ব্যাপারে আপত্তি জানায় প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট মহম্মদ সোলির দল। অভিযোগ, মুইজ্জুর দলের সদস্যেরা সোলির দলের সাংসদদের পার্লামেন্টে ঢুকতে বাধা দেন। প্রসঙ্গত, মুইজ্জু প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জিতলেও মলদ্বীপের পার্লামেন্টে এখনও সংখ্যাগরিষ্ঠ দল সোলির এমডিপি।
সম্প্রতি, ভারত-মলদ্বীপের কূটনৈতিক সম্পর্কের টানাপড়েন দেখেছে সারা বিশ্ব, যার সূত্রপাত চলতি মাসের গোড়া থেকে। সম্প্রতি ভারতের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল লক্ষদ্বীপ সফরে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই সফরের বেশ কিছু ছবি এবং ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হয়। অভিযোগ, এর পর মলদ্বীপের তিন মন্ত্রী, মরিয়ম শিউনা, মালশা শরিফ এবং মাহজ়ুম মাজিদ ভারত এবং মোদীকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেন। পরে অবশ্য বিতর্কের মুখে পোস্টগুলি মুছে দেওয়া হয়েছিল। মলদ্বীপের বিরোধী নেতাদের চাপের মুখে তিন মন্ত্রীকে সাসপেন্ড করতে বাধ্য হন প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু। কিন্তু সংঘাতের পরিস্থিতি তাতে প্রশমিত হয়নি। মলদ্বীপের অন্দরেও সমালোচনার মুখে পড়েন মুইজ্জু।