উচ্ছ্বাস: আলাবামায় জয়ের পরে নাতনি কোলে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী ডুগ জোন্স। বুধবার। ছবি:রয়টার্স।
দলের শক্ত ঘাঁটি। তার উপর, প্রার্থীর হয়ে সমানে প্রচার করে গিয়েছেন খোদ প্রেসিডেন্ট। সেই আসনই হারিয়ে বসল রিপাবলিকানরা। সৌজন্যে, কেন্দ্রের মহিলা ভোটার!
জেফ সেশনস অ্যাটর্নি জেনারেল হওয়ার পরে খালি হয়ে গিয়েছিল আলাবামা আসনটি। সেটিরই পুনর্নিবাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী রয় মুরকে হারিয়ে দিলেন ডেমোক্র্যাট ডুগ জোন্স। ১৯৯২-র পরে এই প্রথম অত্যন্ত রক্ষণশীল এই কেন্দ্রে হারল রিপাবলিকানরা। জোন্সের জয়ের পিছনে রয়েছে এই স্টেটের মহিলা ভোটারদের বিপুল সমর্থন। বুথ ফেরত সমীক্ষা বলছে, ৫৮ শতাংশ মহিলা ভোট দিয়েছেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থীকে।
কেন জোন্সকে এত ভোট দিয়েছেন মহিলারা? ভোটদাতারা একবাক্যে উত্তর দিচ্ছেন, ‘‘কারণ তিনি রয় মুর নন।’’ আলাবামা সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি সেই রয় মুর, যাঁর বিরুদ্ধে নভেম্বর মাস থেকে পর পর ন’টি যৌন হেনস্থার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগকারিণীদের মধ্যে একাধিক জনের দাবি, কিশোরী অবস্থাতেই তাঁরা মুরের হেনস্থার শিকার হয়েছিলেন। এক জনের বয়স ছিল ১৪, দু’জনের ১৬। সব অভিযোগ অস্বীকার করেন মুর। তাঁকে সমর্থন জানান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও। জন ম্যাককেন, মিট রোমনির মতো প্রথম সারির রিপাবলিকান নেতারা মুরকে ভোট লড়াই থেকে সরে যেতে বললেও ট্রাম্পের সমর্থন টলেনি। নভেম্বরের শেষ দিকে এক সাংবাদিক ট্রাম্পকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, ‘‘আপনি কি মনে করেন এক জন ডেমোক্র্যাটের থেকে এক জন শিশু যৌন হেনস্থাকারী বেশি ভাল প্রার্থী?’’ প্রেসিডেন্টের সাফাই ছিল, ‘‘মুর তো বলছেন, এ রকম কিছু ঘটেনি। ওঁর কথাও তো বিশ্বাস করতে হবে।’’ তবে হেরে যাওয়ার পরে দ্রুত মুরের সঙ্গে দূরত্ব বাড়িয়েছেন ট্রাম্প। ফল বেরনোর কিছু ক্ষণের মধ্যেই স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে তিনি টুইট করেন, ‘‘আমি তো আগেই বলেছিলাম, মুরের জয়ের আশা ক্ষীণ!’’
চিরকাল রিপাবলিকান প্রার্থীকেই ভোট দিয়ে এসেছেন আলাবামার সান্ড্রা ডেভিস। বুথ ফেরত সমীক্ষায় জানালেন, এ বার ভোট দিয়েছেন ডেমোক্র্যাটদের। ‘‘আলাবামার প্রার্থীর কাণ্ডকারখানা দেখে সারা দেশ বিদ্রুপ করছে। ব্যঙ্গের নিশানায় চলে এসেছি আমরা, মানে এই স্টেটের মহিলা ভোটাররাও!’’ ডুগ জোন্সকে বেছে নেওয়ার পিছনে এই ‘পাপস্খালনের তাগিদই’ কাজ করেছে, জানালেন সান্ড্রার মতো আরও অনেক ভোটার।