তেইশটি দেশকে নিয়ে আজ সকালেই শুরু হয়েছিল শান্তি সম্মেলন ‘কাবুল প্রসেস’। তার কিছু ক্ষণের মধ্যেই ফের সন্ত্রাসবাদী হানা আফগানিস্তানে। আর এ বারের লক্ষ্য কাবুলের ভারতীয় দূতাবাস। কাবুলে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার মনপ্রীত ভোরার বাসভবন, ইন্ডিয়া হাউসের টেনিস কোর্টের উপর সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ জঙ্গিদের ছোড়া একটি রকেট আছড়ে পড়ে। ওই হামলার পরেও ভারতীয় হাইকমিশনের কর্মীরা অবশ্য নিরাপদেই রয়েছেন।
ইন্ডিয়া হাউসে মনপ্রীত ভোরা ও দূতাবাসের অন্য কর্মীরা থাকেন। ভোরা জানিয়েছেন, রকেট হানায় ইন্ডিয়া হাউস ও এখানকার কর্মীদের কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। ঘটনার জেরে দূতাবাস ঘিরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে। হামলার পিছনে হাত থাকা জঙ্গিদের খুঁজে বের করতে শুরু হয়েছে তল্লাশি। ইন্ডিয়া হাউসে হামলার পরে হাইকমিশনার ভোরা বলেন, ‘‘ভারত আগেও সন্ত্রাসবাদীদের মোকাবিলা করে এসেছে। নয়াদিল্লিকে এ ভাবে দমিয়ে রাখা যাবে না।’’
মঙ্গলবার সন্ত্রাসবাদী হানা এতেই থেমে থাকেনি। কয়েক ঘণ্টা পরেই হেরাটে জামে মসজিদের পার্কিং চত্বরে প্রবল বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে গোটা এলাকা। মসজিদের ভিতরে তখন প্রার্থনা করছিলেন মানুষ। বিস্ফোরণের জেরে মসজিদের বাইরের চত্বরে আগুন লেগে যায়। হেরাটের বিস্ফোরণে প্রাণ হারিয়েছেন ৭ জন। আহত অন্তত ১৬ জন। এভাবে পর পর সন্ত্রাসবাদী হামলায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে আফগানিস্তানে।
গত সপ্তাহেই ট্রাক-বোমা বিস্ফোরণে বিপর্যস্ত কাবুলে মৃতের সংখ্যা এখন ১৫০ ছাড়িয়েছে। ওই ঘটনার পরে আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রেসিডেন্ট আশরফ ঘনি ‘কাবুল প্রসেস’ সম্মেলন শুরু করেন। সম্মেলনে ভারতও অন্যতম অংশীদার। আজ সকালেই সম্মেলনের উদ্বোধন করতে গিয়ে আফগানিস্তানে সন্ত্রাস ছড়ানোর জন্য পাকিস্তানকে দোষোরোপ করেন ঘনি। কাবুলের গোয়েন্দা বিভাগ এই ধরনের বিস্ফোরণের পিছনে পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই ও জঙ্গি সংগঠন হাক্কানি নেটওয়ার্ককে দায়ী করছে।
আরও পড়ুন: মার্কিন চাপেই ব্রাত্য কাতার, দাবি ট্রাম্পের
গত সপ্তাহেই জঙ্গি হানায় কেঁপে উঠেছিল কাবুল। ভারতীয় দূতাবাসের সামনে বিরাট বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিল জঙ্গিরা। আফগানিস্তান থেকে তালিবানি শাসন শেষ হওয়ার পরে এত বড় বিস্ফোরণ আর ঘটেনি। ওই হামলার রেশ কাটতে না কাটতেই ভারতীয় রাষ্ট্রদূতের বাসভবনে রকেট হানার ঘটনা ঘটল। অনেকেই মনে করছেন, পর পর এই ধরনের হানার মধ্যে দিয়ে শক্তি দেখাতে চাইছে তালিবান। আর আফগানিস্তানকে নতুন করে গড়ে তুলতে যে বিরাট ভূমিকা নিয়েছে নয়াদিল্লি, তাকে আঘাত করতেই নিশানা করা হচ্ছে ভারতীয় দূতাবাসকে।