যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজ়ায় পথকুকুরদের তাণ্ডব। ছবি: এএফপি।
এক বছর পেরিয়ে গেলেও গাজ়ায় এখনও হামলা জারি রেখেছে ইজ়রায়েল। গত বছরের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া সংঘর্ষে বিমান, রকেট এবং বোমা হামলায় প্রতি দিনই সেখানে ‘মৃত্যুমিছিল’ চলছে। কোথাও বহুতলের ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়ে দেহ, কোথাও আবার রাস্তার যত্রতত্র পড়ে রয়েছে মৃতদেহ। উদ্ধারকারী দল সেই দেহ উদ্ধার করতে গিয়ে ভয়াবহ এক বর্ণনা দিয়েছে।
উদ্ধারকারী দলের প্রাধন ফেয়ার্স আফানা সংবাদমাধ্যম সিএনএন-এর কাছে দাবি করেছেন, তাঁরা মূলত উত্তর গাজ়ায় উদ্ধারকাজ চালাচ্ছেন। সেখান থেকে প্রতি দিন দেহ উদ্ধার হচ্ছে। শুধু তা-ই নয়, পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে, যে সব জায়গায় পৌঁছতে অনেক বেগ পেতে হচ্ছে তাঁদের, সেখানে মৃতদেহ পড়ে থেকে পচন ধরে যাচ্ছে। আকাশ, বাতাস কটূ গন্ধে ভরে উঠেছে। এমনকি এমন দৃশ্যও দেখা গিয়েছে যে, রাস্তায়, ধ্বংসস্তূপে পড়ে থাকা দেহগুলি পথকুকুরেরা ছিঁড়ে খাচ্ছে।
ফেয়ার্স আফানার আরও দাবি, এ দৃশ্য শিউরে ওঠার মতো। কারও মাথা নেই, কারও হাত-পা, কারও আবার দেহের উপরিভাগ উধাও। এই ভয়ানক পরিস্থিতিতে দেহগুলি শনাক্ত করতেও বেগ পেতে হচ্ছে তাঁদের। তাঁর কথায়, ‘‘ইজ়রায়েলি সেনা কোনও কিছুই ছাড়ছে না। ভূমি এবং আকাশ দু’দিক থেকেই হামলা চালাচ্ছে তারা। ফলে উত্তর গাজ়জার জাবালিয়া এখন ‘মৃতের শহরে’ পরিণত হয়েছে। ইজ়রায়েলি সেনার দাবি, হামাস এই অঞ্চলে নিজেদের শক্তি পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করছে। ফলে উত্তর গাজ়ায় হামলা আরও বাড়িয়েছে ইজ়রায়েল।
আফানার আরও দাবি, খাবারের খোঁজে বেরিয়েছিলেন একদল প্যালেস্টাইনি। ক্ষুধার্ত সেই মানুষগুলির উপরে হামলা চালায় ইজ়রায়েলি সেনা। গাজ়ায় গণহত্যা চলছে বলেও দাবি করেছেন উদ্ধারকারী দলের প্রধান। গাজ়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রক দাবি করেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইজ়রায়েলের হামলায় ৬৫ জন প্যালেস্টাইনির মৃত্যু হয়েছে। গত বছরের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইজ়রায়েল-হামাস সংঘর্ষে এখনও পর্যন্ত ৪২ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি গাজ়া প্রশাসনের। আহত প্রায় এক লক্ষ মানুষ।