Mexico

সামুদ্রিক ঝড়ের কবলে পড়ে ভেসে ছিলেন মাঝসাগরে, তিন মাস পর উদ্ধার প্রৌঢ় এবং তাঁর পোষ্য কুকুর

মেক্সিকো থেকে নৌকা নিয়ে ফ্রেঞ্চ পলিনেশিয়ার উদ্দেশে এপ্রিল মাসে যাত্রা শুরু করেছিলেন টিম। একমাত্র সঙ্গী ছিল তাঁর কুকুর বেলা।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

সিডনি, অস্ট্রেলিয়া শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০২৩ ১২:২৩
Share:

টিম শ্যাডক এবং তাঁর একমাত্র সঙ্গী ছিল বেলা। ছবি: সংগৃহীত।

সমুদ্রের ঠিক কোথায় টুনা মাছের সংখ্যা বেশি তা বোঝার জন্যই প্রশান্ত মহাসাগরের উপর দিয়ে আকাশে ভেসে বেড়াচ্ছিল একটি হেলিকপ্টার। হঠাৎ হেলিকপ্টারের পাইলটের চোখে ধরা পড়ল এক অবিশ্বাস্য দৃশ্য। জনবসতি থেকে প্রায় ১৯০০ কিলোমিটার দূরে মাঝ সমুদ্রে সাদা রঙের কী একটা ভেসে রয়েছে যেন! ভাল করে লক্ষ করে পাইলট দেখেন, সাদা বিন্দুটি আসলে একটি নৌকা, ভাঙাচোরা। তার মধ্যে রয়েছেন এক প্রৌঢ়। প্রৌঢ়ের সঙ্গে রয়েছে একটি কুকুরও। সঙ্গে সঙ্গে মাছের ট্রলারে খবর পাঠান হেলিকপ্টারের পাইলট। নির্দিষ্ট জায়গা মতো পৌঁছনোর পর উদ্ধার করা হয় ৫৪ বছর বয়সি টিম শ্যাডক এবং তাঁর কুকুর বেলাকে।

Advertisement

স্থানীয় সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, মেক্সিকো থেকে নৌকা নিয়ে ফ্রেঞ্চ পলিনেশিয়ার উদ্দেশে এপ্রিল মাসে যাত্রা শুরু করেছিলেন টিম। মাঝেমধ্যেই নৌকা নিয়ে বেড়িয়ে পড়ার হুজুগ ওঠে তাঁর। কিন্তু এ বার চরম বিপদের মুখে পড়ে টিম। ঝড়ের মুখে পড়ে নৌকার অধিকাংশই ভেঙে যায়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় যোগাযোগের মাধ্যমও। মাঝ সমুদ্রে সঙ্গী কুকুর বেলার সঙ্গে টিম তখন সম্পূর্ণ একা। গভীর সমুদ্রে নিজের ভাঙা নৌকায় ভেসে থেকেই তিন মাস কাটিয়েছেন তিনি। এত দিন কী ভাবে বেঁচেছিলেন তা জিজ্ঞাসা করা হলে টিম জানান, নিজেই কোনও ভাবে বঁড়শি জাতীয় হাতিয়ার তৈরি করে ফেলেছিলেন। খিদে পেলে কাঁচা মাছ চিবিয়ে খেয়েছেন। তৃষ্ণা পেলে ভরসা ছিল বৃষ্টির জল।

উদ্ধারের পর টিমের যে ছবি প্রকাশ্যে এসেছে তাতে দেখা যায় মুখভর্তি পাকা দাড়ি, শরীর অর্ধভগ্ন, তবুও মুখে হাসি। টিমের মুখ দেখে কোথাও যেন মনে পড়ে যায় টম হ্যাঙ্কসকে। ‘কাস্ট আওয়ে’ ছবিতে অভিনয় করে বহুল প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন হলি অভিনেতা টম। ছবিতে টম অভিনীত চরিত্রের কাহিনিও ছিল অনেকটা টিমের মতো। টিমকে দেখে মনে হল গল্প কখনও কখনও সত্যিও হয়। উদ্ধার হওয়ার পর ট্রলারের নাবিক থেকে শুরু করে হেলিকপ্টারের পাইলট— কাউকেই ধন্যবাদ জানাতে ভোলেননি টিম। তিনি বলেন, ‘‘আমাকে বাঁচানোর জন্য সকলকে ধন্যবাদ। সমুদ্রে সময় কাটাতে আমার খুব ভাল লাগে।

Advertisement

কিন্তু যখন সময় কঠিন হয়ে যায়, তখন মাথায় খালি একটা চিন্তাই ঘুরপাক খেতে থাকে। কী ভাবে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে সে চিন্তাই করতে হয়। কোনও এক দিন কঠিন পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেলে আবার নতুন করে জীবন উপভোগ করার ইচ্ছা জেগে ওঠে। তবে আমার থেকে বেশি সাহস দেখিয়েছিল বেলা।’’ তবে তিন মাস সমুদ্রে কাটিয়ে শরীর ভেঙে পড়েছে টিমের। তিনি জানিয়েছেন, বহু দিন ভাল খাবার খাননি তিনি। এখন তাঁর প্রচুর খাওয়াদাওয়া এবং বিশ্রামের প্রয়োজন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement