Assam flood

ব্রহ্মপুত্রের জলে ভাসছে কাজিরাঙা, প্রাণ বাঁচাতে জাতীয় সড়কে আশ্রয় নিচ্ছে সাপ, হরিণ, গন্ডারের দল

ব্রহ্মপুত্রের উপচে পড়া জলে ভাসছে কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যানের বিস্তীর্ণ অংশ। এর ফলে সেই অংশে বসবাসকারী পশুরা প্রাণ বাঁচাতে অপেক্ষাকৃত উঁচু জায়গায় আশ্রয় নিচ্ছে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০২৩ ১১:২৯
Share:

বন্যার জলে ভাসছে কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যানের বিশাল অংশ। ছবি: পিটিআই।

প্রতি বছরের মতো এ বারও বন্যায় ভাসছে অসম। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন কমপক্ষে এক লক্ষ মানুষ। ঘরছাড়ার সংখ্যা পাল্লা দিয়ে বাড়ছে, জায়গা কুলোচ্ছে না ত্রাণশিবিরে। কিন্তু সবচেয়ে চিন্তার বিষয় হয়ে উঠেছে কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যান। দু’কূল ছাপিয়ে বইছে ব্রহ্মপুত্র। তারই দাপটে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে কাজিরাঙার অভয়ারণ্যের বিস্তীর্ণ এলাকা। ফলে সেই এলাকায় যে বন্য জন্তুদের বাস, তারা প্রাণ বাঁচাতে ছুটে অরণ্যের বাইরে লোকালয়ে চলে আসছে।

Advertisement

পর্যটকদের কাছে কাজিরাঙার অন্যতম বড় আকর্ষণ আগোরাতলি রেঞ্জ। সেই এলাকা পুরোটাই চলে গিয়েছে ব্রহ্মপুত্রের জলের তলায়। পরিস্থিতি এমনই যে কিছু কিছু জায়গায় প্রায় সাত ফুট জল জমে রয়েছে। ফলে সেই এলাকায় যে বন্য জন্তু-জানোয়ারের বসবাস, তাদের প্রাণ বাঁচাতে পালাতে হচ্ছে। কিন্তু পালিয়ে যাবে কোথায়!

সূত্রের খবর, ৬৮টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জঙ্গল ক্যাম্প জলের তলায় চলে গিয়েছে। তার মধ্যে ১৫টি ক্যাম্প রয়েছে কোহোরা রেঞ্জে, ন’টি বাগোরিতে এবং ছ’টি বুড়াপাহাড় রেঞ্জে। অরণ্যে বসবাসকারী পশুরা প্রাণ বাঁচাতে আশ্রয় নিয়েছে অপেক্ষাকৃত উঁচু জায়গায়। আবার কিছু পশু ৩৭ নম্বর জাতীয় সড়ক পেরিয়ে অন্য ধারে যাওয়ার চেষ্টা করছে। এতে সমস্যা আরও বাড়ছে বনকর্মীদের।

Advertisement

ওয়াকিবহাল মহল বলছে, এই সময়েরই অপেক্ষায় থাকে চোরাশিকারিরা। কারণ, এই সময় পশুরা বিভ্রান্ত থাকে। ফলে তাদের ফাঁদে ফেলে মেরে দেওয়া অপেক্ষাকৃত সহজ। বন দফতরের কর্মীদের সে দিকে খেয়াল রাখতে হচ্ছে। পাশাপাশি ৩৭ নম্বর জাতীয় সড়ক পেরোনোর সময়ও দুর্ঘটনা ঘটছে আকছার। এ ছাড়া কুকুরের আক্রমণের দিকটিও রয়েছে। সম্প্রতি বনকর্মীরা ছ’টি হরিণের দেহ উদ্ধার করে। অনুমান, প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে গিয়ে হরিণগুলি কুকুরের মুখে পড়ে। রক্তাক্ত, ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় পড়ে থাকা মৃত হরিণের দেহগুলি বনকর্মীদেরও হৃদ্‌স্পন্দন বাড়িয়ে দিয়েছে। জাতীয় সড়ক পারাপার করতে গিয়ে গাড়ির তলায় পড়ে মৃত্যুর ঘটনাও বিরল নয়।

২০২১ সালের বন্যায়ও একই ভাবে ভেসে গিয়েছিল কাজিরাঙার বিস্তীর্ণ অংশ। সেই সময় জাতীয় সড়ক পেরোতে গিয়ে গাড়ির ধাক্কার বলি হয়েছিল ১১টি পশু। তার মধ্যে রয়েছে ন’টি হরিণ এবং একটি পাইথন। এ ছাড়াও বন্যার জলে ডুবে মৃত্যু হয়েছিল একটি এক শৃঙ্গ বিশিষ্ট গন্ডার-সহ ২৪টি পশুর। এ বার যাতে তেমন ঘটনা রুখে দেওয়া যায়, সে জন্য দিনরাত লড়াই চালাচ্ছেন বনকর্মীরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement