এই ইঁদুরের নাম মাগাওয়া। ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া।
আকারে ছোট হলেও কাজে অনেক বড়। আর সেই বড় কাজের জন্যই সম্মানিত কম্বোডিয়ার এই ইঁদুর। বহু মানুষের প্রাণ বাঁচানোর কৃতিত্ব দেখানো এই ইঁদুরের নাম মাগাওয়া। স্নিফার কুকুরের মতো স্নিফার ইঁদুর। গন্ধ শুঁকেই সে মাটির নিচে লুকিয়ে থাকা ল্যান্ডমাইন খুঁজতে পারে। নিজের কেরিয়ারে মোট ৩৯টি ল্যান্ডমাইন ও ২৮টি বিস্ফোরক সনাক্ত করেছে সে। এরই পুরস্কার হিসেবে ‘পিডিএসএ স্বর্ণপদক’ পেল মাগাওয়া।
ব্রিটিশ সংস্থা পিডিএসএ সাহসী পশুদের এই সম্মান দিয়ে থাকে। এর আগে অনেক পশু এই পদক জিতলেও এই প্রথম তা কোনও ইঁদুর পেল। এবার ৩১তম পুরস্কার দেওয়া হল। সাহসী পশুর শিরোপা পাওয়া মাগাওয়া একটি আফ্রিকান প্রজাতির ইঁদুর। এদের ঘ্রাণশক্তি অত্যন্ত প্রখর। সেটা কাজে লাগিয়েই দেওয়া হয় প্রশিক্ষণ। বিস্ফোরকে যে সব রাসায়নিক উপাদান থাকে, তার গন্ধ শুঁকেই মাইন খুঁজে পায়। আর সেটা পেলেই মাটিতে আঁচড় কেটে সহযোদ্ধাদের জানিয়ে দেয় তারা। এই ইঁদুরদের প্রশিক্ষণ দেয় বেলজিয়ামের একটি সংস্থা।
ল্যান্ডমাইন কম্বোডিয়ায় এক বড় আতঙ্ক। বহু প্রাণঘাতী বিস্ফোরণেরও সাক্ষী কম্বোডিয়া। সারা বছরই সেনাবাহিনীর অন্যতম কাজ থাকে ল্যান্ডমাইন খোঁজা। আর তাতে বড় ভরসা মাগাওয়া। ১ লক্ষ ৪১ হাজার বর্গ কিলোমিটার মানে ২০টি ফুটবল মাঠের সমান এলাকা পরীক্ষা করে বিস্ফোরক উদ্ধারে সাহায্য করেছে মাগাওয়া। জানা গিয়েছে, মাইন ডিটেক্টরের থেকেও দ্রুত কাজ করেছে মাগাওয়া। মাটির অনেক গভীরে পুঁতে রাখা ল্যান্ডমাইনেরও খোঁজ দিয়েছে সে।
আরও পড়ুন: এক ডোজেই কাজ! প্রাথমিক ট্রায়ালে সফল জনসনের করোনার টিকা
শুধু কম্বোডিয়াই নয়, এই ধরনের কাজে আফ্রিকান ইঁদুরকে ব্যবহার করে অনেক দেশের সেনা। তবে মাগাওয়ার মতো সাফল্য সবাই দেখাতে পারে না। যে পরিমাণ এলাকা মাইন ডিটেক্টর দিয়ে তল্লাশিতে তিন-চার দিন লাগে সেটাই ২০ মিনিটের মধ্যে সেরে ফেলতে পারে প্রশিক্ষণ নেওয়া মাগাওয়া। জন্ম ও বেড়ে ওঠা তানজানিয়ায়। ওজন দেড় কেজির মতো আর লম্বায় ২৮ ইঞ্চি। অন্যান্য ইঁদুরের তুলনায় মাগাওয়া অনেকটা বড় হলেও ওজন এতটাই কম যে ল্যান্ডমাইনের উপর দিয়ে হেঁটে গেলেও পায়ের চাপে বিস্ফোরণের সম্ভাবনা থাকে না।