আলাস্কায় মেরুভালুকের বিরল আক্রমণ। ফাইল ছবি।
মা এবং তাঁর এক বছরের শিশুপুত্রকে ছিঁড়ে খেল মেরুভালুক। আলাস্কায় এই জন্তু বিরল নয়। তবে বরফ ছেড়ে তারা লোকালয়ে সচরাচর আসে না। ফলে এই আক্রমণ বিরল বলেই মনে করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার আলাস্কার ওয়েলস শহরের লোকালয়ে আচমকা ঢুকে পড়ে বড়সড় একটি মেরুভালুক। রাস্তায় সকলের দিকে তেড়ে যাচ্ছিল সে। হিংস্র জন্তুকে দেখে প্রাণভয়ে ছুটে পালাচ্ছিলেন বাসিন্দারা। এলাকায় রীতিমতো হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। স্থানীয় একটি স্কুলের সামনে মা এবং একরত্তি ছেলেকে একা পেয়ে হামলে পড়ে ভালুকটি। আক্রমণে দু’জনেরই মৃত্যু হয়েছে। তাদের দেহাংশ পরে পাঠানো হয়েছে ময়নাতদন্তের জন্য।
মৃতেরা হলেন, সামার মায়োমিক এবং তাঁর ছেলে ক্লাইড অঙ্গটোয়াসরুক। ওয়েলস শহরের বেরিং স্ট্রেট ডিস্ট্রিক্ট স্কুলের সামনে এসে হামলা চালায় মেরুভালুক। রাস্তায় সেই সময় যাঁরা ছিলেন, হুড়মুড় করে ঢুকে পড়েন স্কুলে। ছেলেকে নিয়ে মায়োমিক স্কুলে ঢুকতে পারেননি।
অভিযোগ, স্কুলের দরজাতেও ধাক্কা মারছিল ভালুকটি। কিন্তু শক্ত করে দরজা বন্ধ করে রাখা হয়। পরে ভালুকটিকে গুলি করে মারেন কর্তৃপক্ষ।
আলাস্কায় মেরু ভালুকের এই হামলাকে গত ৩০ বছরের মধ্যে প্রথম বলা হচ্ছে। এর আগে সেখানে ১৯৯০ সালে মেরুভালুকের হানায় মৃত্যু হয়েছিল। আলাস্কার যে এলাকায় মঙ্গলবার মেরু ভালুকটি তাণ্ডব চালায়, সেখানে দেড়শ মানুষের বাস। উত্তর আমেরিকার একেবারে উত্তর প্রান্তের এই অংশে লোকবসতি বরাবরই কম। ভালুকের হানায় তটস্থ এলাকাবাসী।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, বিশ্ব উষ্ণায়নের কারণে মেরুভালুক লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে। সাধারণত তারা বরফের মাঝে থাকে। কমবয়সি পুরুষ ভালুকগুলি মানুষকে আক্রমণ করে থাকে। তবে তা বেশ বিরল। খাবার না পেয়ে ভালুকটি লোকালয়ে এসেছিল বলে মনে করা হচ্ছে।
মেরুভালুক বিপন্ন প্রজাতির প্রাণী। অকারণে এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া তাদের হত্যা নিষিদ্ধ। তবে মানুষের প্রাণ সংশয়ের আশঙ্কা থাকলে কোনও কোনও ক্ষেত্রে মেরুভালুক মারার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।