রাষ্ট্রপুঞ্জ। —ফাইল চিত্র।
ইজ়রায়েলের বিরুদ্ধে গাজ়া স্ট্রিপে গণহত্যা চালানোর অভিযোগ তুলে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিজে)-এর দ্বারস্থ হয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। বিশেষ করে গাজ়ার একেবারে দক্ষিণে মিশর সীমান্তবর্তী রাফা অঞ্চল নিয়ে দুশ্চিন্তা প্রকাশ করেছিল তারা। কারণ, এই মুহূর্তে মানবাধিকার ভঙ্গের সবচেয়ে করুণ নিদর্শন রাফা। ইজ়রায়েলের নির্দেশে উত্তর ছেড়ে দক্ষিণ গাজ়ার রাফায় চলে এসেছেন কমপক্ষে ১৪ লক্ষ মানুষ, গাজ়ার জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি। কার্যত কোণঠাসা অবস্থায় তাঁদের উপর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, গোলাবর্ষণ চালিয়ে যাচ্ছে ইজ়রায়েলি বাহিনী। রাফার এই অবস্থা আদালতের সামনে তুলে ধরেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। কিন্তু রাফার সুরক্ষা সংক্রান্ত আবেদনটি খারিজ করেছে রাষ্ট্রপুঞ্জের শীর্ষস্থানীয় আদালত। জানিয়েছে, রাফা-সহ গোটা গাজ়া স্ট্রিপ নিয়ে আগেই সতর্ক করা হয়েছে। এ দিন ফের তারা বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সরকারকে সাবধান করেছে।
গত ২৬ জানুয়ারিই গাজ়া স্ট্রিপে মানবাধিকার লঙ্ঘন সংক্রান্ত একটি রায় দিয়েছিল আইসিজে। এ দিন তারা ফের একটি বিবৃতি জারি করে জানিয়েছে, ‘জিনোসাইড কনভেনশন’ মেনে চলতে বাধ্য ইজ়রায়েল। রাফার পরিস্থিতি মাথায় রেখে দ্রুত ও কার্যকরী পদক্ষেপ করতে হবে ইজ়রায়েলকে। আদালত জানিয়েছে, রাফা-সহ গোটা গাজ়া স্ট্রিপের জন্যই নির্দেশিকা জারি রয়েছে। আলাদা করে শুধু রাফার জন্য কোনও রায় ঘোষণার প্রয়োজন নেই। রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুতেরেসের বয়ান উল্লেখ করে আদালত জানিয়েছে, ‘‘আঞ্চলিক দ্বন্দ্বে গাজ়া স্ট্রিপ এমনিতেই দুঃস্বপ্নের মতো হয়ে রয়েছে। সাম্প্রতিক কালে সেটা চক্রবৃদ্ধিহারে বেড়েছে।’’
ইজ়রায়েলের বক্তব্য, এখন গাজ়া স্ট্রিপে রাফা-ই হল হামাসের সর্বশেষ শক্তিশালী ঘাঁটি। হামাসকে নিশ্চিহ্ন না-করা ইস্তক তারা হামলা বন্ধ করবে না। অথচ রাফার মতো একটা ছোট্ট অঞ্চলে লক্ষ লক্ষ মানুষ প্লাস্টিক-ত্রিপলের তাঁবু খাটিয়ে কার্যত কোনও মতে দিন কাটাচ্ছে। ইজ়রায়েলের দাবি, তারা সাধারণ মানুষের ক্ষতি করছে না। বড়সড় হামলার আগে সকলকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। যদিও কোথায় সরানো হবে, তার উত্তর নেই। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলির দাবি, গাজ়া স্ট্রিপে কোনও জায়গা নিরাপদ নেই।