মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পরিবেশ আন্দোলনের মঞ্চেও ধ্বনিত হলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
ভারত জুড়ে প্রতিবাদের ঢেউয়ে বারংবার উচ্চারিত হচ্ছে তাঁর গান, তাঁর কবিতা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পরিবেশ আন্দোলনের মঞ্চেও ধ্বনিত হলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। প্রখ্যাত অভিনেতা মার্টিন শিনের কণ্ঠে শোনা গেল, ‘হোয়েন দ্য হার্ট (শিন ‘হার্ট’ বলেছেন, মূলে ছিল ‘মাইন্ড’) ইজ উইদাউট ফিয়ার...।’ ‘চিত্ত যেথা ভয়শূন্য, উচ্চ যেথা শির’। বক্তব্য শেষ করার সামান্য পরেই গ্রেফতার হন শিন।
অ্যাপোক্যালিপ্স নাও, গাঁধী, জেএফকে, দ্য ডিপার্টেড-এর মতো ছবি এবং ওয়েস্ট উইং-এর মতো টিভি সিরিজের অভিনেতা শিন ডেসমন্ড টুটুর অনুগামী। বারবারই যুদ্ধবিরোধী আন্দোলন, শ্রমিক আন্দোলন, পরিবেশ আন্দোলনের সঙ্গে থেকেছেন। একবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়ার ডাকও এসেছিল। শিন বলে দেন, ‘‘কোনও শান্তিবাদীর পক্ষে মার্কিন প্রেসিডেন্টের চেয়ারে বসা সম্ভব নয়।’’
কিছুদিন আগে ট্রাম্প-বিরোধী কথা বলে শাসানির মুখেও পড়েছিলেন। ওয়াশিংটন ডিসিতে ইদানীং প্রতি শুক্রবার পরিবেশ আন্দোলনের সমর্থনে ‘ফায়ার ড্রিল ফ্রাইডে’ সমাবেশ হচ্ছে বেশ কিছুদিন ধরে। প্রবীণ অভিনেত্রী, সমাজকর্মী জেন ফন্ডা এর নেত্রী। বেশ কয়েক বার গ্রেফতারও হয়েছেন। গত কাল জেনের মঞ্চে উপস্থিত হন শিন, সুসান সারানডন, জোয়াকিন ফিনিক্সরা। শিন প্রথমেই জেন ফন্ডার প্রতি তাঁর শ্রদ্ধার কথা জানান। বলেন, ‘‘পৃথিবীকে বাঁচালে মেয়েরাই বাঁচাবেন। ভাগ্যিস ওঁরা সংখ্যায় বেশি!’’ সার্বিক জনসংখ্যায় না হলেও আমেরিকায় বর্তমানে বেতনভুক কর্মচারীর তালিকায় মেয়েদের সংখ্যা ছেলেদের চেয়ে বেশি। শিনের ইঙ্গিত সে দিকেই বলে মনে করা হচ্ছে। এর পরেই তিনি পরিবেশ আন্দোলনের গুরুত্বের কথা মনে করিয়ে দিয়ে গোটা দেশকে এক হওয়ার আহ্বান জানান। সেই সূত্রেই আসেন রবীন্দ্রনাথ। আসে ‘গীতাঞ্জলি’র ৩৫ নম্বর কবিতা।
আরও পড়ুন: হ্যারি-মেগান প্রসঙ্গে নিষ্পত্তি চান রানি
শিন অবশ্য রবীন্দ্রনাথের নাম করেননি। রবীন্দ্রনাথের স্বকৃত অনুবাদে ‘চিত্ত যেথা ভয়শূন্য’র ইংরেজি ছিল ‘হোয়েন দ্য মাইন্ড ইজ উইদাউট ফিয়ার’। শিন ‘মাইন্ড’কে বদলে নিয়েছেন ‘হার্ট’-এ। আর শেষ লাইনে ‘মাই কান্ট্রি’কে বদলেছেন ‘আওয়ার কান্ট্রি’তে। গোটা কবিতাটাই তিনি আবৃত্তি করেছেন উদাত্ত কণ্ঠে, সমবেত জনতার করতালির মধ্যে। ২০১৬-র প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগেও শিন কবিতাটি বলে জনতাকে সচেতন মনে ভোট দেওয়ার ডাক দিয়েছিলেন।