প্রতিবাদ। পুতিনের ছবি পোড়াচ্ছে ইউক্রেন সমর্থকেরা। ছবি: এএফপি
পশ্চিমী দেশগুলির লাগাতার তোপের জবাবে এ বার রীতিমতো হুমকি দিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। শুক্রবার মস্কোর কাছে এক যুবসভায় তিনি বলেন, “সকলকে মনে করিয়ে দিতে চাই রাশিয়া কিন্তু পরমাণু শক্তিধর দেশ। সুতরাং আমাদের সঙ্গে অযথা ঝামেলা না করাই ভাল।” অনেকের ধারণা, ইউক্রেনের রুশপন্থী জঙ্গিদের মদত দেওয়ার অভিযোগে রাশিয়াকে যে ভাবে কাঠগড়ায় দাঁড় করাচ্ছে পশ্চিমী দেশগুলি, তার কড়া জবাব দিতেই এমন বয়ান দিয়েছেন পুতিন।
মার্কিন বিশেষজ্ঞদের দাবি, অস্ত্রসংখ্যার নিরিখে এ মুহূর্তে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে রাশিয়া। পরমাণু শক্তিধর দেশগুলির মধ্যেও অন্যতম রাশিয়া। সুতরাং পুতিনের এ দিনের হুমকি যে মোটেও ‘ফাঁকা আওয়াজ’ নয়, সে কথা বিলক্ষণ জানে পশ্চিমী দুনিয়া। কিন্তু তাদের যুক্তি, ইউক্রেন-রাশিয়া সীমান্তে যে ভাবে সেনা সক্রিয়তা বাড়িয়ে চলেছে পুতিন-প্রশাসন, তা অত্যন্ত ‘আপত্তিজনক’। এর প্রতিবাদে আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞা চাপানো যায় কি না, সে বিষয়ে শনিবার সন্ধেয় বৈঠকে বসার কথা রয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের। আগেই অবশ্য আমেরিকা ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন রাশিয়ার কিছু সীমিত ক্ষেত্রে আর্থিক নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছিল। কিন্তু তাতেও রুশ আগ্রাসন না থামায় বৃহত্তর নিষেধাজ্ঞা চাপানোর কথা ভাবা হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে আলাদা করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সঙ্গে কথাও বলেছেন জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা মের্কেল।
অনেকেরই প্রশ্ন, কূটনৈতিক ভাবে এই সমস্যার সমাধান করতে গত মঙ্গলবার ইউক্রেন ও রাশিয়ার দুই রাষ্ট্রপ্রধান মিলে যে বৈঠক করেছিলেন, তা কি তা হলে ফলপ্রসূ হয়নি? ইউক্রেনের দাবি, মুখে সাহায্যের কথা বললেও বার বার সে প্রতিশ্রুতি ভেঙেছে রাশিয়া। এমনকী, মঙ্গলবারের বৈঠকের পর দিনই সীমান্তে আরও বেশি সেনা পাঠিয়ে রুশপন্থী জঙ্গিদের সাহায্য করছে রাশিয়া। ন্যাটোর হিসেবে, এ মুহূর্তে অন্তত ১০০০ রুশ সেনা ইউক্রেনের চৌহদ্দিতে রয়েছে। অসমর্থিত সূত্রের দাবি, সংখ্যাটা নিদেনপক্ষে পাঁচ হাজার।
সংখ্যা যা-ই হোক না কেন, এ ভাবে কোনও দেশের অনুমতি ছাড়া তার চৌহদ্দিতে সেনা পাঠানো ও অস্ত্র সরবরাহ করা যে তার সার্বভৌমত্বের বিরোধী, সে কথা ফের এক বার মনে করিয়েছে ইউক্রেন। একই দাবি মার্কিন-প্রশাসনেরও। তাদের সেনা সূত্রে বৃহস্পতিবার যে ছবি প্রকাশিত হয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে প্রায় কুড়ি হাজার রুশ সেনা সমর্থন জোগাচ্ছে রুশপন্থী জঙ্গিদের। দেশের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে ‘ন্যাটো’য় যোগদানের ইচ্ছা প্রকাশ করেছে ইউক্রেন। যাতে পুতিনের প্রতিক্রিয়া, “অনেকটা ঠিক নাৎসি বাহিনীর মতো আচরণ করছে ইউক্রেন।”