জো বাইডেন
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট পদে বাইডেনের নির্বাচিত হওয়ার শংসাপত্রে অনুমোদনের ভোটে অনুপস্থিত থাকার সিদ্ধান্ত নিলেন এক দল রিপাবলিকান সেনেট সদস্য। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলকে অবৈধ প্রমাণ করার চেষ্টা করে চলেছেন বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ১১ জন রিপাবলিকান সেনেটরের এই উদ্যোগ সেই প্রচেষ্টারই অংশ বলে মনে করছেন রাজনীতিকেরা।
বুধবার আমেরিকান কংধগ্রেসের দুই কক্ষের যৌথ অধিবেশন হওয়ার কথা। সেখানেই বাইডেনের জয়ের শংসাপত্র অনুমোদনের ভোট হবে। সেনেটর টেড ক্রুজ়-সহ ১১ জন রিপাবলিকান এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, তাঁরা এই ভোটে অংশগ্রহণ করবেন না। কারণ এই ভোটের মতো কারচুপি ও অনিয়মের অভিযোগ তাঁরা আগে দেখেননি। বিশেষ কমিশন গঠন করে জরুরি ভিত্তিতে ১০ দিন ধরে ভোটের ফলের নিরীক্ষা করার দাবি জানাবেন তাঁরা। তার পরে বিভিন্ন প্রদেশ তাদের আইনসভার বিশেষ অধিবেশন ডেকে সেখানে ভোটের ফল পুনর্বিবেচনা করতে পারে।
এই আবেদনে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে রয়েছেন মিসৌরীর সেনেটর জশ হলিও। তিনি আগেই জানিয়েছিলেন, বুধবার বাইড়েনের শংসাপত্র অনুমোদন নিয়ে প্রশ্ন তুলবেন।
কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউজ় অব রিপ্রেজ়েন্টেটিভসের সদস্য লুই গোমার্টও জানিয়েছেন, তিনি এই শংসাপত্র অনুমোদনের বিরোধিতা করবেন। হাউজ়ের আরও ১০০ জন রিপাবলিকান সদস্যও তাঁকে সমর্থন করতে পারেন বলে রাজনৈতিক সূত্রে খবর। গোমার্ট টেক্সাসের আদালতে মামলা করে বিদায়ী ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের হাতে ভোটের ফল পরিবর্তনের ক্ষমতা দেওয়ার আবেদনও জানিয়েছিলেন। কিন্তু পেন্স সেই চেষ্টার বিরোধিতা করেন। আদালতও মামলা খারিজ করে। আগামী সপ্তাহে ট্রাম্পের মদতেই ওয়াশিংটনে তাঁর সমর্থনে একাধিক সভা হওয়ার কথা। তার মধ্যেই শংসাপত্র অনুমোদনের জন্য কংগ্রেসের অধিবেশন বসবে।
আমেরিকান রাজনীতিকদের মতে, এই চেষ্টাতেও কোনও লাভ হবে না। কারণ কংগ্রেসের নিম্নকক্ষে ডেমোক্র্যাটেরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ। আর বুধবারের অধিবেশনে অনেক রিপাবলিকান সদস্যই শংসাপত্র অনুমোদনের পক্ষে ভোট দেবেন। সেনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠ নেতা রিপাবলিকান মিচ ম্যাককনেলও শংসাপত্র অনুমোদন করে বিভেদকামী রাজনৈতিক গোলযোগ বন্ধ করতে অনুরোধ করেছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমেরিকার ইলেকটোরাল কলেজ তার মতামত জানিয়ে দিয়েছে।’’
এই উত্তপ্ত রাজনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যেই সান ফ্রান্সিসকোয় নিম্ন কক্ষের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি ও লুইসভিলে সেনেটের সংখ্যাগরিষ্ঠ নেতা মিচ ম্যাককনেলের বাড়িতে স্প্রে দিয়ে বার্তা লিখল এক দল দুষ্কৃতী। পেলোসির গ্যারাজের দরজায় স্প্রে দিয়ে ‘২ হাজার ডলার’, ‘ভাড়া বাতিল করো’, ‘আমরা সবই চাই’ লেখা হয়েছে। ম্যাককনেলের বাড়িতে লেখা হয়েছে ‘আমার টাকা কোথায়’। গত বছরের শেষ দিকে জনপ্রতি করোনা-সাহায্যের পরিমাণ ৬০০ ডলার থেকে বাড়িয়ে ২ হাজার ডলার করার প্রস্তাবে সায় দেয় আমেরিকান কংগ্রেসের ডেমোক্র্যাট নিয়ন্ত্রিত নিম্নকক্ষ। কিন্তু তা নিয়ে এখনও উচ্চকক্ষ সেনেটে ভোটাভুটির পথে হাঁটেননি সেই কক্ষের সংখ্যাগরিষ্ঠ নেতা ম্যাককনেল।
ম্যাককনেল এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘‘আমি সব সময়েই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণকারীদের সমর্থন করি। তাঁদের সকলের সঙ্গে আমার মত নাও মিলতে পারে। কিন্তু আমাদের সমাজে হিংসা আর দুষ্কৃতী তাণ্ডবের স্থান নেই।’’