শপথ নিচ্ছেন রনিল বিক্রমসিঙ্ঘে। ছবি রয়টার্স।
কঠিন অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক দোলাচলের মধ্যে গত কালই শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত হয়েছেন রনিল বিক্রমসিঙ্ঘে। আজ ছিল শপথ গ্রহণের অনুষ্ঠান। কিন্তু শুরুতেই বিপত্তি। শপথ গ্রহণের জন্যে পার্লামেন্ট কক্ষের লাল কার্পেটে সবে পা রেখেছেন রনিল। আচমকা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল বিদ্যুৎ সংযোগ। এমনিতে এমন ঘটলে মিনিট দু’য়েকের মধ্যে জেনারেটরের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সংযোগ ফের চালু করা হয়। সরকারি সূত্রের খবর, এ দিন প্রায় ১০ মিনিট পরে বিদ্যুৎ সংযোগ ফিরেছে। ফলে শপথ অনুষ্ঠানের সরাসরি সম্প্রচার দেখানো যায়নি। ঠিক ছিল, সরকারি রূপবাহিনী চ্যানেলে অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচারিত হবে। সেখান থেকে অন্যান্য চ্যানেলে দেখানো হবে গোটা অনুষ্ঠান। কিন্তু বিদ্যুৎ বিভ্রাটের জেরে এ দিন পুরো পরিকল্পনাই বাতিল হয়ে যায়। এই ঘটনায় ফৌজদারি অপরাধ সংক্রান্ত বিভাগকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।
বিষয়টি নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি রনিল-বিরোধীরা। তাঁদের অনেকের মতে, দেশ জুড়ে চলতে থাকা বিদ্যুৎ সঙ্কটের ছবিটাই আজ প্রকট হয়েছে। আবার অনেকের কটাক্ষ, আগামী দিনে রনিল জমানা যে কঠিন হতে চলেছে, এ দিনের ঘটনাটি হয়তো তারই আভাস দিচ্ছে। এটি সাধারণ যান্ত্রিক ত্রুটি নাকি পরিকল্পিত কিছু, তা তদন্তের রিপোর্ট না-আসা পর্যন্ত বোঝা যাচ্ছে না।
তবে এইটুকু বিপর্যয় ছাড়া বাকি অনুষ্ঠান নির্বিঘ্নেই সম্পন্ন হয়েছে। শ্রীলঙ্কার অষ্টম প্রেসিডেন্ট হিসাবে দেশের শীর্ষ বিচারপতি জয়ন্ত জয়সূর্যের কাছে শপথ নিয়েছেন ৭৩ বছরের রনিল। পাশে ছিলেন তাঁর স্ত্রী মৈত্রী বিক্রমসিঙ্ঘে। তবে এ দিনও প্রেসিডেন্টের বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন রনিল-বিরোধীরা। তাঁদের অভিযোগ, শাসক দল এসএলপিপি-র নেতা তথা দেশের প্রাক্তন ও পলাতক প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষের মনোনীত প্রার্থী রনিল। তাঁকে সমর্থন করার অর্থ গোতাবায়াকেই সমর্থন করা। আজ বিক্ষুব্ধদের প্রতি রনিল বার্তা দিয়েছেন, তিনি গোতাবায়া রাজাপক্ষের বন্ধু নন, তিনি সাধারণ মানুষের বন্ধু।
ভেঙে পড়া অর্থনীতি ও সঙ্কটের মুখে দেশকে ফেলে রেখে ১৪ জুলাই শ্রীলঙ্কা ছেড়ে পালান গোতাবায়া। মলদ্বীপ ঘুরে তিনি সিঙ্গাপুরে পৌঁছন। সূত্রের খবর, সিঙ্গাপুর সরকারের কাছে আশ্রয়ের আবেদন জানিয়েছিলেন তিনি। আজ সিঙ্গাপুরের অভিবাসন দফতর জানিয়েছে, ১৪ দিন থাকার অনুমতি পেয়েছেন গোতাবায়া। তার পরে থাকতে চাইলে ফের আবেদন জানাতে হবে তাঁকে। সংবাদ সংস্থা