কোভিড অতিমারির সময়ে বিশ্বের বহু সংস্থা ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ চালু করেছিল। কোভিড স্ফীতি কিছুটা কমলেও অনেকই তা বজায় রেখেছে।
‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ করার ফলে পারিবারিক জীবন এবং অফিসের কাজের মধ্যে সমতা রাখা বেশ কঠিন হচ্ছে। এক সমীক্ষা বলছে বাড়ি থেকে কাজ করলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে কাজের সময়ের বাইরেও কাজ করতে হচ্ছে।
অফিসের সময় শেষ হয়ে যাওয়ার পর দিনভর বসের মেসেজে তাল কাটছে পারিবারিক জীবনে। এর মধ্যে রয়েছে অফিসের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে সর্ব ক্ষণ নজর রাখার মতো বিষয়টিও।
অফিস ও পরিবারিক জীবনে মধ্যে সমতা রাখতে পর্তুগালের পার্লামেন্ট অফিসের সময়ের বাইরে বসের মেসেজ পাঠানোকে বেআইনি ঘোষণা করছে। মেসেজ পাঠালে জরিমানাও করা হবে ওই সংস্থাকে।
সম্প্রতি পার্লামেন্টে নয়া শ্রম আইন পাশ হয়েছে। নতুন আইনে ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ চলাকালীন কর্মীদের উপর নজরদারিকে বেআইনি ঘোষণা করা হয়েছে।
বাড়ি থেকে কর্মরত কর্মীদের বিদ্যুৎ এবং ইন্টারনেটের বিল দেওয়াও বাধ্যতামূলক করা হয়েছে নতুন আইনে।
নয়া আইনে বলা হয়েছে, যাঁদের আট বছরের নীচে শিশু সন্তান রয়েছে, সেই সব বাবা-মা যখন খুশি কাজে বসতে পারবেন। এ জন্য সংস্থাকে আগাম নোটিস দিতে হবে না।
পর্তুগিজ সরকারের নয়া আইনে বাড়িতে কর্মরত কর্মীদের উপর সারা ক্ষণ নজরদারি চালানো বন্ধ করারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই ধরনের কর্মীদের অফিসের সঙ্গে বিচ্ছিন্নতা দূর করার জন্য প্রতি দু’মাসে এক বার বসের সঙ্গে দেখা করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
যে সব সংস্থার অন্তত ১০ জন কর্মী রয়েছেন তাদের জন্য এই আইন প্রযোজ্য হবে।
তবে পর্তুগালই প্রথম দেশ নয় যারা অফিসের বাইরের জীবনে শ্রমিকের অধিকারকে স্বীকৃতি দিল। এর আগে ২০১৭ সালে শ্রম আইনে বদল আনে ফ্রান্স। নয়া আইনে বলা হয় অফিসের সময়ের বাইরে পাঠানো ইমেল না দেখা শ্রমিকের অধিকার।
ইউরোপীয় ইউনিয়নও খুব শীঘ্রই ‘সংযোগ বিচ্ছন্ন করার অধিকার’ (রাইট টু ডিসকানেক্ট) আইন আনছে বলে জানা গিয়েছে।
কারণ, এই অতিমারির সময়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলিতে দ্বিগুণ হয়েছে ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ কর্মীর সংখ্যা।
একটি সংস্থার সমীক্ষা বলছে ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ মহিলা কর্মীদের জীবনে বড় প্রভাব ফেলেছে। এতে অংশ নেওয়া ৮২ শতাংশ মহিলার দাবি অতিমারির কারণে তাঁদের জীবনে বিরূপ প্রভাব ফেলেছে অফিস।