২০২১ সালের শেষের দিকে চিনের জনসংখ্যার বৃদ্ধি দেখা দিয়েছিল। ছবি: রয়টার্স।
বিশ্বের জনবহুল দেশ হিসাবে চিন এবং ভারত যেন সব সময় একে অপরকে টক্কর দিয়ে চলেছে। তবে, গত ৬ দশকে এই প্রথম চিনের জনসংখ্যার গ্রাফ নীচের দিকে নেমেছে। মঙ্গলবার সরকারি পরিসংখ্যান সংস্থা ‘ন্যাশনাল ব্যুরো স্ট্যাটিস্টিকস্’-এর তরফে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে। সেই রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২২ সালে চিনের জনসংখ্যা গত ৬০ বছরে এই প্রথম বার এমন হারে কমেছে। এমনকি, ২০২২ সালে জন্মহারেও কমতি দেখা দিয়েছে চিনে।
পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, আগের বছর ১৪১ কোটির মধ্যে চিনের জনসংখ্যা ৮ লক্ষ ৫০ হাজার কমেছে। রিপোর্ট সূত্রের খবর, চিনে গত বছর জন্ম হয়েছে ৯৫ লক্ষ শিশুর। তবে, ২০২২ সালে চিনে মৃত্যু হয়েছে বেশি। গত বছর চিনে মৃতের সংখ্যা ১ কোটি ৪ লক্ষ। ২০২১ সালের শেষের দিকে চিনের জনসংখ্যার বৃদ্ধি দেখা দিয়েছিল। তবে ওই বছর জন্মহারে কমতি দেখা দিয়েছিল। ২০২১ সালে চিনে জন্মহার ১৩ শতাংশ কমে। চিনের স্বাস্থ্য আধিকারিকেরা জানিয়েছেন যে, ২০২২ সালের ৮ ডিসেম্বর থেকে ২০২৩ সালের ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৬০ হাজার ব্যক্তি মারা গিয়েছেন।
এই পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে কয়েক জন বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন যে, চিনের জনসংখ্যা যদি ধীরে ধীরে কমতে থাকে, তা হলে তার উল্টো প্রভাব পড়বে। চিনের অর্থনীতির পাশাপাশি সারা বিশ্বের অর্থনীতিও ধাক্কা খাবে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী চিনে বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের সংখ্যা অনেকটা বেশি হয়ে পড়েছে বলে জানা যায়। তার উপর জন্মহার কমে আসার ফলে দেশের অর্থনীতি এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য লোকবলের অভাব দেখা দিতে পারে বলে তাঁরা আশঙ্কা প্রকাশ করছেন।
দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস জানাচ্ছে, ১৯৬০ সালে চিনে জনসংখ্যা অস্বাভাবিক হারে কমে গিয়েছিল। বর্তমানে আবার চিন একই রকম পরিস্থিতিতে এসে দাঁড়িয়েছে। ক্যালিফোর্নিয়া ইউনিভার্সিটির এক অধ্যাপক ওয়ান ফেঙ্গ চিনের জনসংখ্যার গতিপ্রকৃতি নিয়ে পড়াশোনা করেছেন। ওয়ানের মন্তব্য, ‘‘সারা বিশ্ব এক নতুন চিনকে দেখতে চলেছে। এই চিন জনবহুল নয়। বরং ধীরে ধীরে চিনের জনসংখ্যা আরও কমতে দেখা যাবে।’’