পুলিশের মুখোমুখি এক আন্দোলনকারী। মঙ্গলবার সকালে মিসৌরির রাস্তায়। ছবি: এএফপি
বর্ণ বিদ্বেষের জেরে ফের উত্তাল আমেরিকা। অভিযোগ, গত অগস্টে মাইকেল ব্রাউন নামে এক কৃষ্ণাঙ্গ তরুণকে নিরস্ত্র অবস্থায় রাস্তায় গুলি করে মারে শ্বেতাঙ্গ পুলিশ। মার্কিন গ্র্যান্ড জুরি সোমবার রাতে এমনকী অভিযুক্ত পুলিশ অফিসারকে বেকসুর বলেও রায় দেয়। এর পরই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে শুরু করে। অভিযুক্ত পুলিশ অফিসার ড্যারেন উইলসনকে বরখাস্ত করার দাবি নিয়ে ফার্গুসন থানার সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন আন্দোলনকারীরা। রাতের অন্ধকারেই বিক্ষোভ ছড়ায় স্থানীয় বাজার চত্বরেও। ব্যাপক ভাঙচুর, লুঠপাট, বেশ কিছু দোকান-গাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে। পুলিশের দাবি, বিক্ষোভ সামলাতেই লাঠিচার্জ ও কাঁদানে গ্যাস ছুড়তে হয় রাতভর।
মঙ্গলবার সকালে সেন্ট লুইস-এর পুলিশ-প্রধান জানান, আন্দোলনের জেরে ভাঙচুর হয়েছে অন্তত ১২টি আবাসনে। লুঠপাট চলে বহু দোকানে। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় গ্রেফতার ২৯।
পুলিশ সূত্রের খবর, ফার্গুসন মিসৌরির পাশাপাশি বিক্ষোভ ছড়ায় নিউ ইয়র্ক, শিকাগো, লস অ্যাঞ্জেলেস, ক্যালিফোর্নিয়া, ওয়াশিংটন ডিসি-তেও। ‘খুনি পুলিশ’ লেখা পোস্টারও চোখে পড়ে বিভিন্ন শহরে। আন্দোলনকারীরা গুলি ছোড়েন বলেই অভিযোগ। চার মাসেও কেন অভিযুক্ত অফিসারের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন হল না, তা নিয়েই আগেই ফুঁসছিলেন ব্রাউনের পরিবার। সোমবার রায়ের পর তার মাত্রা আরও বেড়েছে বলেই স্থানীয় সূত্রের খবর। প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা দেশ জুড়ে শান্তি বজায় রাখার আবেদন জানিয়েছেন।
কিন্তু দেশের একটা বড় অংশ প্রশ্ন তুলছে এই রায় নিয়ে। অগস্টের শেষেই ৯ শ্বেতাঙ্গ ও ৩ কৃষ্ণাঙ্গ বিচারপতিকে নিয়ে গঠন করা হয় এই গ্র্যান্ড জুরি। বয়ান নেওয়া হয় ঘটনার ৬০ জন প্রত্যক্ষদর্শীর। বিশেষ বয়ান নেওয়া হয় সেই সমস্ত চিকিৎসকেরও, যাঁরা নিহত ব্রাউনের দেহ ময়নাতদন্ত করেছিলেন। সরকারি পক্ষের আইনজীবীর বক্তব্য, যাবতীয় সাক্ষ্য-প্রমাণ বিচার করেই গ্র্যান্ড জুরির মনে হয়েছে অভিযুক্ত অফিসার উইলসনের বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের কোনও বাস্তব ভিত্তি নেই। তবে এই সিদ্ধান্ত সর্বসম্মতিক্রমে নেওয়া হয়েছে কিনা, তা জানাতে অস্বীকার করেন তিনি। সূত্রের খবর, ব্রাউনের আইনজীবীরা বলেন পর পর ১২টি গুলি চালিয়ে মেরে ফেলার সময় ব্রাউন দু’হাত তুলেই দাঁড়িয়েছিলেন। পুলিশের দাবি অবশ্য, আত্মরক্ষার তাগিদেই গুলি চালান উইলসন।