ব্রিটেনের আম জনতার একাংশ প্রকাশ্যেই বলছেন, তাঁদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে ব্রিটিশ সরকার। তাঁদের কড়া কোভিড বিধি পালন করতে বলে খোদ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী একাধিক পার্টিতে অংশ নিয়েছেন।
ফাইল চিত্র।
করোনা রুখতে দীর্ঘ দু’বছর লকডাউন বিধি জারি ছিল গোটা ব্রিটেনে। কিন্তু সেই লকডাউন চলাকালীনই খাস ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন ১০ ডাউনিং স্ট্রিটে অজস্র পার্টির আয়োজন করা হয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে। যার মধ্যে অন্তত তিনটিতে প্রধানমন্ত্রী নিজে উপস্থিত ছিলেন বলে জানা গিয়েছিল। কয়েক মাস আগে কয়েকটি প্রথম সারির ব্রিটিশ দৈনিকে জনসনের পার্টিতে উপস্থিত থাকার সেই ছবিও ফাঁস হয়ে যায়। তদন্তে নামে পুলিশ। এ বার তারা জানিয়েছে, কোভিড বিধি লঙ্ঘন করে পার্টির আয়োজন করার জন্য আপাতত ১০ ডাউনিং স্ট্রিটের উপরে কুড়ি দফা জরিমানা ধার্য হয়েছে।
এক বিবৃতিতে লন্ডনের পুলিশ বিভাগ জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত ডাউনিং স্ট্রিটে অন্তত ১২টি পার্টি নিয়ে তারা তদন্ত চালিয়েছে। যার ভিত্তিতে জরিমানার নোটিস পাঠানো হয়েছে। আরও কিছু তথ্য-প্রমাণ তাদের কাছে রয়েছে। সেগুলো এখনও তদন্ত করে দেখা হয়নি। ফলে ভবিষ্যতে জরিমানার সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছে পুলিশ।
পার্টির বিষয়ে জানতে ডাউনিং স্ট্রিটে আমন্ত্রিত শতাধিক অতিথিকে প্রশ্ন পাঠিয়েছে পুলিশ। সেই তালিকায় রয়েছেন ব্রিটিশ অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনকও। শোনা যাচ্ছে, বিধি ভঙ্গ করে চলা পার্টিতে হাজির ছিলেন তিনিও।
ব্রিটেনের আম জনতার একাংশ প্রকাশ্যেই বলছেন, তাঁদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে ব্রিটিশ সরকার। তাঁদের কড়া কোভিড বিধি পালন করতে বলে খোদ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী একাধিক পার্টিতে অংশ নিয়েছেন।
বরিসের নিজের দলেরও একাধিক এমপি প্রধানমন্ত্রীর মিথ্যাভাষণের জন্য তাঁর পদত্যাগ চেয়েছিলেন। পরে ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরু হয়ে যাওয়ায় বিষয়টি খানিকটা ধামাচাপা পড়ে যায়। এখন ওই এমপি-দের একাংশ বলছেন, পুলিশের তদন্ত পুরোপুরি শেষ হওয়া পর্যন্ত তাঁরা অপেক্ষা করতে চান। ডাউনিং স্ট্রিটের তরফে জানানো হয়েছিল, পুলিশি তদন্তে প্রধানমন্ত্রীর নাম উঠে এসেছে কি না, তা তারা প্রকাশ্যে আনবে। তবে এই জরিমানাগুলি ঠিক কাকে দিতে হবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
বিরোধী নেতা-নেত্রীরা অবশ্য এখনও সরব। লেবার পার্টির নেত্রী অ্যাঞ্জেলা রেনারের বক্তব্য, পুলিশ জরিমানা যখন করেছে, তার মানে নিয়ম ভেঙে ডাউনিং স্ট্রিটে পার্টি হয়েছিল। তাঁর কথায়, ‘‘পার্টি নিয়ে দিনের পর দিন মিথ্যে বলে গিয়েছেন স্বয়ং দেশের প্রধানমন্ত্রী। সেই জন্যই তাঁকে গদি ছাড়তে হবে।’’