(বাঁ দিকে) ভ্লাদিমির জ়েলেনস্কি ও নরেন্দ্র মোদী (ডান দিকে) —ফাইল চিত্র।
১০ ঘণ্টার রেলযাত্রার শেষে সাত ঘণ্টার কিভ সফর। আবার ১০ ঘণ্টার রেলযাত্রায় প্রত্যাবর্তন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পূর্ব ইউরোপ সফরের তৃতীয় দিন কাটতে চলেছে এই রুটিনেই। পোল্যান্ডের রাজধানী ওয়ারশ থেকে ‘রেল ফোর্স ওয়ান’-এ চড়ে বৃহস্পতিবার ইউক্রেনের রাজধানী কিভের উদ্দেশে রওনা হয়েছিলেন তিনি। শুক্রবার সেখানে পৌঁছেছেন তিনি। সাকুল্যে সেখানে সাত ঘণ্টা সময় কাটাবেন। ইউক্রেন পৌঁছনোর আগে মোদী বলেন, ‘‘ভারত শান্তির সেতু হতে চায়, কোনও পক্ষ নিতে নয়।’’
১৯৯১ সালের পর এই প্রথম ভারতের কোনও প্রধানমন্ত্রী ইউক্রেনে এলেন। রাশিয়ার হামলা শুরুর পরে অবশ্য একাধিক বার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কির সঙ্গে তাঁর আলোচনা হয়েছে। গত ৮ জুলাই ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে অংশ নিয়ে রাশিয়া সফরে গিয়েছিলেন মোদী। মনে করা হচ্ছে, কূটনৈতিক ক্ষেত্রে ভারসাম্যের বার্তা দিয়েই এ বার রাশিয়ার শত্রু দেশে যাচ্ছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। সমালোচকেরা অবশ্য বলছেন, আমেরিকা-সহ পশ্চিমি দুনিয়াকে সন্তুষ্ট করতেই তাঁর এই সফর।
জ়েলেনস্কির চিফ অফ স্টাফ অ্যান্ড্রি ইয়রমাক সম্প্রতি বলেছিলেন, ‘‘মোদী শান্তি প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন।’’ যদিও বিদেশ মন্ত্রকের তরফে ইতিমধ্যেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা নেবে না ভারত। তবে শান্তি ফেরানোর মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বার্তা সমন্বয়ের দায়িত্ব নিয়ে রাজি নয়াদিল্লি। এই আবহে মোদীর কিভ সফরে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের পাশাপাশি শান্তি প্রক্রিয়া নিয়েও জ়েলেনস্কির সঙ্গে আলোচনা হতে পারে বসে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানাচ্ছে।
গত জুন মাসে জি৭ সম্মেলনে যোগ দিতে ইটালি গিয়ে জ়েলেনস্কির সঙ্গে পার্শ্ববৈঠক করেছিলেন মোদী। তার আগে জাপানেও দু’জনের একান্তে আলোচনা হয়েছিল। ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি রুশ সেনার অভিযান শুরুর পরে একাধিক বার ফোনে জ়েলেনস্কি এবং পুতিনের সঙ্গে মোদীর কথা হয়েছে। রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের আবহে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে উজবেকিস্তানে শাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজ়েশন (এসসিও)-এর বৈঠকের ফাঁকে রুশ প্রেসিডেন্টের সঙ্গে মুখোমুখি বৈঠক করেছিলেন মোদী। তিনি সেই বৈঠকেই পুতিনকে বলেছিলেন, ‘‘এটা যুদ্ধের সময় নয়।’’ পোল্যান্ডেও বৃহস্পতিবার একই কথা বলেছেন তিনি।