বাংলাদেশে বন্যা পরিস্থিতি। ছবি: পিটিআই।
ত্রিপুরায় গোমাতী নদীর বাঁধের স্লুইস গেট খোলার ফলে বাংলাদেশে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে যে অভিযোগ উঠেছে, তা খারিজ করল ভারত। বিদেশ মন্ত্রকের তরফে বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে প্রসঙ্গের উল্লেখ করে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে এমন একটি উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ছড়িয়ে পড়েছে, যা সঠিক নয়।
ধলাই জেলায় গোমাতী নদীর ডুম্বুর বাঁধের গেট খুলে দেওয়ার কারণেই বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলের সীমান্তবর্তী জেলাগুলোয় সাম্প্রতিক বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে ইতিমধ্যেই। সমাজমাধ্যমের পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলির নেতৃত্বের একাংশও এ বিষয়ে অভিযোগের আঙুল তুলেছে নয়াদিল্লির দিকে।
কূটনৈতিক মহলের একাংশের মতে, বাংলাদেশে সাম্প্রতিক ক্ষমতার পালাবদলের পরে মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে টানাপড়েন এড়াতে সতর্ক ভারত। তাই সরকারি স্তরে কোনও অভিযোগ না এলেও বিষয়টির গুরুত্ব বুঝে বিদেশ মন্ত্রকের তরফে বিবৃতি দিয়ে অবস্থান স্পষ্ট করা হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘আমরা উল্লেখ করতে চাই যে, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত গোমাতী নদীর অববাহিকা (ক্যাচমেন্ট) এলাকায় কয়েক দিন ধরে এ বছরের সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশে এ বন্যা মূলত বাঁধের ভাটার (নিম্নপ্রবাহের) দিকের বৃহৎ অববাহিকার বৃষ্টিজনিত জলপ্রবাহের কারণে ঘটেছে।’’ বুধবার সকাল থেকে পুরো ত্রিপুরা এবং বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী জেলাগুলোয় ভারী বৃষ্টি শুরু হয়েছিল। যার জেরে বিকেল ৩টের পর জলপ্রবাহ অতিরিক্ত বেড়ে যায়। যার পরিণামে স্বয়ংক্রিয় ভাবেই বাঁধের স্লুইস গেট খুলে কিছু জল প্রবাহিত হয়ে যায় বাংলাদেশের দিকে।
সেই সঙ্গে বিদেশ মন্ত্রকের যুক্তি, বাংলাদেশের সীমান্ত থেকে ১২০ কিলোমিটারেরও বেশি উজানে ডুম্বুর বাঁধের অবস্থান। এটা কম উচ্চতার (প্রায় ৩০ মিটার) একটি বাঁধ। এখানে উৎপাদিত বিদ্যুৎ একটি গ্রিডে যুক্ত হয় এবং ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ত্রিপুরা থেকে বাংলাদেশে যায়। প্রায় ১২০ কিলোমিটার দীর্ঘ গোমাতী নদীর অববাহিকায় দ্বিপাক্ষিক চুক্তির ভিত্তিতে তিনটি জায়গায় (অমরপুর, সোনামুড়া ও সোনামুড়া–২) জলপ্রবাহ পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে। সেখানে বাঁধ থেকে অতিরিক্ত জল ছাড়ার বিষয়টি নজরে আসেনি।