প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
গত এক দশকে অস্ত্র এবং প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম রফতানি প্রায় ৩০ গুণ বাড়িয়েছে ভারত। ২০১৪ সাল থেকে চলতি অর্থবর্ষ পর্যন্ত পরিসংখ্যান পর্যালোচনা করে এই তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তথ্য জানাচ্ছে ২০২৪-২৫ সালের প্রথম ত্রৈমাসিকে রফতানি প্রায় ৭৮ শতাংশ বেড়েছে। এপ্রিল-জুন মাসে প্রতিরক্ষা রপ্তানি বেড়ে ৬ হাজার ৯১৫ কোটি টাকা হয়েছে। আগের অর্থবর্ষের (২০২৩-২৪) প্রথম ত্রৈমাসিকে যা ছিল ৩ হাজার ৮৮৫ কোটি টাকা।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর স্লোগানে ভর করে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রেও ভারত ক্রমশ ‘আত্মনির্ভর’ হয়ে উঠছে, পরিসংখ্যান থেকে তা স্পষ্ট। একসময়ে বিশ্বের উন্নত দেশগুলির অস্ত্রের জন্য মুখাপেক্ষী থাকা ভারত বর্তমানে বিশ্বের ৯০টি দেশকে অস্ত্র বিক্রি করছে। বেসরকারি অর্থানুকুল্যে দেশীয় প্রতিরক্ষা উৎপাদনও বাড়ছে দ্রুত গতিতে। ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে মোট ১৫ হাজার ৯২০ কোটি টাকার অস্ত্র ও প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম ভারত বিক্রি করেছিল। ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে তা প্রায় ৩২ শতাংশ বেড়ে দাঁড়ায় ২১ হাজার ৮৩ কোটিতে। চলতি অর্থবর্ষে বৃদ্ধির হার আরও বাড়ার সম্ভাবনা।
সম্প্রতি প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ জানিয়েছিলেন, ভারতের লক্ষ্য ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে প্রতিরক্ষা রফতানির অঙ্ক ৩৫ হাজার কোটি টাকায় নিয়ে যাওয়া। টাটা, মাহিন্দ্রা বা কল্যাণী গ্রুপের মতো শিল্পগোষ্ঠীর হাত ধরে প্রতিরক্ষা উৎপাদনে বেসরকারি বিনিয়োগের জোয়ার এলেও রফতানির ক্ষেত্রে শীর্ষস্থানে রয়েছে বেঙ্গালুরুর সংস্থা ইন্দো-এমআইএম। যার অন্যতম অংশীদার আমেরিকার সংস্থা এমআইএম।
ভারতীয় সেনার উত্তরাঞ্চলীয় কম্যান্ডের প্রাক্তন প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল এইচএস পনাগ (অবসরপ্রাপ্ত) বলেছেন, ‘‘১৯৫৯ সাল থেকে ভারত নিয়ন্ত্রিত ভাবে অস্ত্র এবং প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম রফতানি শুরু করেছিল। কিন্তু গত এক দশকে তাতে জোয়ার এসেছে।’’ মূলত আফ্রিকা, পশ্চিম এশিয়া, মধ্য এশিয়া এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলি ভারতীয় অস্ত্রের ক্রেতা। ফিলিপিন্সের সঙ্গে সম্প্রতি ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহের চুক্তি করেছে ভারত। আর্মেনিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ হেলিকপ্টার-সহ নানা অস্ত্র বিক্রির সমঝোতা হয়েছে। লেফটেন্যান্ট জেনারেল পনাগ (অবসরপ্রাপ্ত)-এর মতে মোদী জমানার আগে এত বড় অঙ্কের প্রতিরক্ষা রফতানি কল্পনাতেও আনা যেত না।