ISKON in Bangladesh

ইসকনকে নিষিদ্ধ করার আর্জি জানিয়ে বাংলাদেশে মামলা, শুনানির সিদ্ধান্ত নিল ঢাকার হাই কোর্ট

সোমবার রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় ইসকনের পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ তথা হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে। তার পর ইসকনকে নিষিদ্ধ করতে চেয়ে মামলা দায়ের হল সে দেশের হাই কোর্টে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০২৪ ১৪:৪৬
Share:

সংখ্যালঘু নেতা চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারির পর বাংলাদেশে বিক্ষোভ। ছবি: রয়টার্স।

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নেতা চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারি নিয়ে চাপানউতর অব্যাহত। এ বার ইসকনকে নিষিদ্ধ করতে চেয়ে সে দেশের হাই কোর্টে মামলা দায়ের করা হল। সেই সঙ্গে চট্টগ্রাম এবং রংপুরে জরুরি অবস্থা জারির আবেদনও জানানো হয়েছে আদালতে। চিন্ময়কৃষ্ণের গ্রেফতারি নিয়ে ওই দুই শহরে একাধিক গোলমালের ঘটনা ঘটেছে।

Advertisement

বাংলাদেশের সম্মিলিত সনাতন জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময়কৃষ্ণ ইসকনের পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষও বটে। রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে গত ২৫ নভেম্বর তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। খারিজ হয়েছে জামিনের আবেদনও। আপাতত তিনি বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রয়েছেন। আদালত নির্দেশ দিয়েছে, বন্দি অবস্থায় চিন্ময়ের ধর্মীয় অধিকার সুরক্ষিত রাখতে হবে। চিন্ময়কৃষ্ণের গ্রেফতারি এবং বাংলাদেশের উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ে ইতিমধ্যে নয়াদিল্লির তরফেও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। পাল্টা প্রতিক্রিয়া দিয়েছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারও।

চিন্ময়কৃষ্ণের গ্রেফতারির পর বাংলাদেশে ইসকনের তরফে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে, যার নেতৃত্ব দিচ্ছেন চিন্ময়কৃষ্ণের অনুরাগীরাই। চিন্ময়ের মুক্তির দাবিতে মূলত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ পথে নেমেছেন। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের হাই কোর্টে আবেদন জানানো হয়েছে, ইসকনকে নিষিদ্ধ করা হোক। জরুরি অবস্থা জারি করা হোক চট্টগ্রাম এবং রংপুরে। এ বিষয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের অবস্থান জানতে চেয়েছে আদালত। মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তিকালীন সরকারের তরফে ইসকনকে ‘ধর্মীয় মৌলবাদী সংগঠন’ বলে অভিহিত করা হয়েছে।

Advertisement

মঙ্গলবার চিন্ময়কৃষ্ণকে আদালত থেকে বার করার সময় আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী এবং আইনজীবীদের সঙ্গে তাঁর অনুগামীদের সংঘর্ষ বাধে। ঘটনায় এক আইনজীবী নিহত হয়েছেন। ওই সংঘর্ষে পুলিশকর্মী-সহ ৩৭ জন আহত হয়েছেন বলে খবর। আইনজীবীর মৃত্যুর প্রতিবাদে বুধবার চট্টগ্রাম আদালতে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন আইনজীবীরা। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস এই হিংসার নিন্দা করেছেন।

হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশজোড়া অশান্তির আবহে বেশ কিছু ধর্মীয় সংগঠন মিলে তৈরি করে সনাতনী জাগরণ মঞ্চ। মঞ্চের মুখপাত্র নির্বাচিত হয়েছিলেন চিন্ময়। তাঁরই ডাকে বাংলাদেশের শহিদ মিনার, চট্টগ্রাম ইত্যাদি নানা এলাকায় সমাবেশে যোগ দেন হাজার হাজার সংখ্যালঘু। চট্টগ্রামে সমাবেশের পর তাঁর বিরুদ্ধে দেশদ্রোহের মামলা করেছিলেন স্থানীয় এক বিএনপি নেতা। ওই মামলাতেই সোমবার তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।

গত ৫ অগস্ট বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকেই দেশ জুড়ে সংখ্যালঘুদের উপরে নির্যাতনের একের পর এক অভিযোগ প্রকাশ্যে এসেছে। অভিযোগ, দেশের নানা প্রান্তে সংখ্যালঘুদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। ভাঙচুর চালানো হয় ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলিতেও। ইউনূস-পরিচালিত অন্তবর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পরেও পরিস্থিতি বদলায়নি বলে অভিযোগ। তবে ইউনূস সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা ও ধর্মীয় অধিকার সুনিশ্চিত করার আশ্বাস দিয়েছেন বারবার।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement