পারভেজ মুশারফ। —ফাইল চিত্র।
সন্ত্রাসে মদত দেওয়ার অভিযোগে আন্তর্জাতিক মহলে এমনিতেই কোণঠাসা পাকিস্তান। এ বার তাদের অস্বস্তি বাড়াল দেশের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট পারভেজ মুশারফের একটি ভিডিয়ো ক্লিপ। তাতে ভারতীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়তে কাশ্মীরি যুবকদের পাকিস্তানের মাটিতেই প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল বলে মেনেছেন তিনি। সেই সঙ্গে ওসামা বিন লাদেন, জালালউদ্দিন হাক্কানি এবং আয়মান আল-জওয়াহিরির মতো কুখ্যাত সন্ত্রাসবাদীদের পাকিস্তানের ‘বীর’ বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।
সওয়া দু’মিনিট দীর্ঘ ওই ভিডিয়োটি বুধবার টুইটারে পোস্ট করেছেন পাকিস্তান পিপলস পার্টির নেতা ফারহাতুল্লা বাবর। তাতে একটি সাক্ষাৎকার চলাকালীন মুশারফ বলেন, ‘‘১৯৭৯ সালে আমাদের হাত ধরেই আফগানিস্তানে ধর্মীয় সন্ত্রাসের উত্থান, যাতে সোভিয়েতদের তাড়ানো যায়, এবং সব দিক থেকে লাভবান হয় পাকিস্তান। বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে মুজাহিদদের এনে জড়ো করি আমরা। ওদের প্রশিক্ষণ দিই, অস্ত্র সরবরাহ করি। আমাদের কাছে ওরা ছিল বীর। হাক্কানি আমাদের কাছে বীর ছিল। ওসামা বিন লাদেনও। সেইসময় পরিস্থিতি অন্যরকম ছিল, আজকের থেকে একেবারে আলাদা। আগে যারা বীর ছিল, এখন তারা খলনায়কে পরিণত হয়েছে।’’
স্বাধীনতার পর থেকে এখনও পর্যন্ত ভারত-পাকিস্তান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নতির ক্ষেত্রে মূল বাধা হয়ে রয়েছে কাশ্মীর। সীমান্তের ওপার থেকে ইসলামাবাদই উপত্যকায় নাশকতামূলক কাজকর্মে ইন্ধন জুগিয়ে আসছে বলে শুরু থেকেই অভিযোগ ভারতের। তাতে সিলমোহর দিয়েছেন মুশারফ নিজেই। তিনি বলেন, ‘‘কাশ্মীর থেকে যারা পাকিস্তান এসেছে, তাদের বীরের মতো স্বাগত জানাই আমরা। শুরু থেকেই ওদের সমর্থন করে এসেছি আমরা। প্রশিক্ষণও দিয়েছি। ওদেরও মুজাহিদ বলেই মানতাম আমরা, যারা ভারতীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়বে। ওই সময়ই লস্কর-ই-তইবার মতো একাধিক জঙ্গি সংগঠন মাথা তুলে দাঁড়াতে শুরু করে। ওরা সকলেই আমাদের কাছে বীর ছিল।’’
আরও পড়ুন: ‘আর কোনও তদন্তের প্রয়োজন নেই’, রাফাল মামলা পুনর্বিবেচনার আর্জি খারিজ সুপ্রিম কোর্টে
আরও পড়ুন: হল না ঐকমত্য, শবরীমালা মামলা গেল ৭ বিচারপতির বৃহত্তর বেঞ্চে
ঠিক কবে পারভেজ মুশারফের ওই সাক্ষাৎকারটি রেকর্ড করা হয়েছিল, এখনও পর্যন্ত তা নির্দিষ্ট ভাবে জানা যায়নি। তবে কাশ্মীর এবং আফগানিস্তান, পড়শি দুই দেশে সন্ত্রাসের বীজ বুনতে ইসলামাবাদ যে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছিল, মুশারফের বক্তব্যে তা স্পষ্ট। পাকিস্তানে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় অভিযুক্ত মুশারফ ২০১৬ থেকে দুবাইয়ে রয়েছেন। এ নিয়ে তাঁর দল অল পাকিস্তান মুসলিম লিগ (এপিএমএল)-এর তরফে এখনও কোনও মন্তব্য করা হয়নি। তবে সক্রিয় রাজনীতিতে ফিরতে মরিয়া মুশারফ গোটা ঘটনায় নিজের দায় ঝেড়ে ফেলতেই এমন মন্তব্য করেছেন মত কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।