এ ভাবেই বিমানে ওঠার আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছেন।
আতঙ্কের পরিবেশ। দমবন্ধ হওয়ার মতো তালিবানি-রাজ। প্রাণে বাঁচতে তাই দেশ ছাড়ার হিড়িক পড়ে গিয়েছে আফগানদের মধ্যে। কাবুল বিমানবন্দরের দিকে ছুটে যাচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ। একে অপরকে ঠেলে ফেলে যে ভাবেই হোক বিমানে ওঠার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। কাবুল বিমানবন্দর জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে। এমনই ভিডিয়ো নেটপাড়ায় ছড়িয়ে পড়েছে।
কাবুল তালিবানদের দখলে চলে আসার দ্বিতীয় দিনে পড়েছে। প্রথম দিন থেকে রাজধানী কাবুলের পরিস্থিতির টুইট করে জানাচ্ছেন জাওয়াদ সুখানওয়ার নামে সে দেশের এক সাংবাদিক। সোমবার তাঁর টুইটে কাবুলের এই আতঙ্কের ছবি ধরা পড়েছে। তিনি টুইটে লিখেছেন, ‘কাবুলের আরও একটি দিনের শুরু। কাবুল বিমানবন্দরের দিকে জনসমুদ্র!’
যে সমস্ত ভিডিয়ো প্রকাশিত হয়েছে তা দেখে আঁতকে উঠতেই হয়। তাতে দেখা গিয়েছে, রানওয়েতে দাঁড়িয়ে থাকা বিমান ঘিরে রয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। তাঁদের একাংশ নিজেদের মধ্যে মারপিঠ করে বিমানে ওঠার চেষ্টা চালাচ্ছেন। কোনও ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে, বিমানে জায়গা পেতে প্রাণপন ছুটছেন একাংশ। জনসমুদ্র সরিয়ে বিমান কী ভাবে উড়বে, তা নিয়েও সংশয় তৈরি হয়েছে।
রবিবার সকালে দক্ষিণের জালালাবাদ দখল নেওয়ার পর দুপুরের মধ্যে বিনা যুদ্ধে কাবুল দখল করে তালিবান। শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে তালিবান প্রধান মোল্লা আবদুল গনি বরাদরের সঙ্গে ৪৫ মিনিট বৈঠকের পরই পদত্যাগ করেছিলেন প্রেসিডেন্ট গনি। তারপর তিনি নিজেও দেশ ছেড়েছেন।
ইতিমধ্যে আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, জাপান, কোরিয়া, কাতার এবং ব্রিটেন-সহ মোট ৬০টি দেশ যৌথ বিবৃতিতে তালিবানদের সাধারণ মানুষের প্রতি সহনশীল হওয়ার আবেদন জানিয়েছে এবং আফগানিস্তানের সমস্ত নাগরিকের সুরক্ষায় তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাসও দিয়েছে।
আফগানিস্তানের পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ, তা আরও একটি টুইট থেকে বোঝা যায়। স্টেফানি গ্লিনস্কি নামে আফগানিস্তানে কর্মরত এক মহিলা সাংবাদিক এক টুইট করে জানিয়েছিলেন, হেরটের দখল নেওয়ার পরই সেখানকার বিশ্ববিদ্যালয়ে মহিলাদের ঢোকা বন্ধ করে দিয়েছে তালিবান। হেরটের সমস্ত অফিস থেকে মহিলাদের বার করে দেওয়া হয়েছে। তাঁদের বাড়ি চলে যেতে বলা হয়েছে এবং জানিয়ে দেওয়া হয়েছে তাঁদের জায়গায় এ বার পুরুষদের নিয়োগ করা হবে।