ঢাকায় আওয়ামী লীগের প্রধান কার্যালয়ে আগুন। ছবি: এক্স।
বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় আওয়ামী লীগের প্রধান কার্যালয়ে দেদার লুটপাট চলছে। সোমবার শেখ হাসিনার সরকার পড়ে যাওয়ার পর ওই দফতরে এক বার আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। মঙ্গলবার নতুন করে আবার সেখানে আগুন লাগিয়ে দেয় উত্তেজিত জনতা। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম প্রথম আলো জানিয়েছে, মঙ্গলবার দুপুর থেকে আওয়ামী লীগের দফতরে লুটপাট শুরু হয়েছে। যে যা পাচ্ছেন, নিয়ে চলে যাচ্ছেন। বাধা দেওয়ার কেউ নেই।
ঢাকার গুলিস্তানের বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের প্রধান কার্যালয় রয়েছে। পুরনো ভবনটি ভেঙে নতুন করে ১০ তলা ভবন তৈরি করা হয়েছিল সেখানে। ২০২৩ সালে সেই নতুন দফতরের উদ্বোধন করেছিলেন স্বয়ং হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে তিনি দেশ ছেড়েছেন সোমবার। তার পর আওয়ামী লীগের দফতরেও অরাজকতা দেখা দিয়েছে।
প্রথম আলো জানিয়েছে, সোমবার আওয়ামী লীগের দফতরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সেই আগুন নিভে যাওয়ার পর মঙ্গলবার সকালে আবার সেখানে আগুন দেওয়া হয়। এর পর দুপুরের দিকে লোকজন দফতরে ঢুকতে শুরু করেন। হাতের কাছে যে যা পেয়েছেন, যা কিছু অক্ষত অবস্থায় ছিল, তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কেউ চেয়ার-টেবিল নিয়ে গিয়েছেন। কেউ কেউ আবার শৌচাগার থেকে কমোড খুলে নিয়ে গিয়েছেন মাথায় করে।
আওয়ামী লীগের দফতরে লুটপাট চালাচ্ছেন যাঁরা, তাঁদের কেউ বিরোধী দলের কর্মী-সমর্থক, কেউ আবার স্থানীয় বাসিন্দা। কেন লুটপাট? প্রশ্ন করলে তাঁরা দেশের প্রাক্তন শাসকদলের বিরুদ্ধে অভিযোগ উগরে দিচ্ছেন। কেউ জানাচ্ছেন, বিরোধী দলের সমর্থক হওয়ায় তাঁদের উপর অত্যাচার করা হয়েছে। কেউ আবার বলছেন, শাসকদলের কাছ থেকে প্রয়োজনে সুযোগ-সুবিধা পাননি। অনেকে আবার অন্যদের দেখাদেখি ১০ তলা ভবন থেকে জিনিসপত্র লুট করছেন বলে জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, সোমবার বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে চলে এসেছেন হাসিনা। আপাতত তিনি দিল্লিতে রয়েছেন। তাঁর ইস্তফা এবং দেশত্যাগের পর দেখা যায়, ঢাকার ‘গণভবনে’ (হাসিনার আবাস) ঢুকে পড়েছেন শয়ে শয়ে মানুষ। দেদার লুটপাট চালানো হয়েছে সেখানেও। ছাগল, হাঁস-মুরগি থেকে শুরু করে পরনের শাড়ি— কিছুই বাদ যায়নি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মূর্তিতেও ভাঙচুর চালানো হয়। আপাতত বাংলাদেশ সেনার শাসনের অধীনে রয়েছে। সেনার অধীনে তদারকি সরকার গঠিত হবে।