— ছবি সংগৃহীত
বিদায় নিয়েছে শীত। বছরের এই সময়টা মানুষের ঢল নামে মায়ামি সৈকতে। যত রাত বাড়ে, তত রঙিন হয় সৈকত। কিন্তু গত বছরের মতো এ বারেও অতিমারি পরিস্থিতি। ৩ কোটির উপরে সংক্রমণ। সাড়ে ৫ লক্ষ মৃত্যু। ভিড়ের আশঙ্কা তাই সে ভাবে করেইনি প্রশাসন। যদিও সেটাই হল। সপ্তাহান্তের ভিড় আছড়ে পড়ল ফ্লরিডার মায়ামি সৈকতে। পরিস্থিতি এমনই হল, শেষে কার্ফু জারি করতে হয়েছে প্রশাসনকে।
সপ্তাহ শেষে শনিবার মায়ামি সৈকতে ভিড় করেন অসংখ্য মানুষ। মাস্ক পরা বা পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখার বালাই নেই। পুরোদমে পার্টির আয়োজন। আর সেই সঙ্গে নাচ-গান-হুল্লোড়। মায়ামির নৈশজীবনও বেশ জনপ্রিয়। পরিস্থিতি হাতের বাইরে যাচ্ছে দেখেই মাঠে নামে পুলিশ-প্রশাসন। ঘোষণা করা হয়, রাস্তা ফাঁকা করে দিতে হবে। সৈকত লাগোয়া রেস্তরাঁগুলিকে রাত ৮টার মধ্যে ঝাঁপ ফেলে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। রাতের বিচ-পার্টিগুলোকে বন্ধ করতে রাত ১০টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত মায়ামির মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে মায়ামি বিচ আইল্যান্ডের যোগাযোগ রক্ষাকারী তিনটি সেতু বন্ধ করে দেওয়া হয়। বলা হয়, শুধুমাত্র স্থানীয় বাসিন্দা, হোটেল-কর্মীরা প্রবেশ করতে পারবেন সৈকত এলাকায়। পুলিশি তৎপরতায় দু’ঘণ্টায় ফাঁকা হয়ে যায় সৈকত। সেই ছবিও পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছে স্থানীয় পুলিশ।
এখন জোর গতিতে টিকাকরণ চলছে আমেরিকায়। দু’মাসে ১০ কোটি টিকা (একটি ও দু’টি ডোজ় মিলিয়ে) দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেটাও মোট জনসংখ্যার টিকাকরণের মাত্র ১৩ শতাংশ। পুলিশের নিষেধাজ্ঞা উড়িয়ে বন্ধুদের সঙ্গে মায়ামি সৈকতে বসে মদ্যপান করছিলেন ২২ বছরের যুবক জন পেরেজ়। বললেন, ‘‘আর পারা যাচ্ছে না। অসহ্য। কত মজা করছিলাম আমরা।’’
জবাবটা দিয়েছেন আর এক স্থানীয়। জ্যালেন রব নামে পড়ুয়া বলেন, ‘‘সবাই ভ্যাকসিন নিন। তার পর অনেক মজা করা যাবে। মায়ামি শহরের কার্যনির্বাহী কর্তা রাউল আগুলিয়া বলেন, ‘‘মানুষের নিরাপত্তার কথা ভেবে এই কার্ফু জারি করা। সবাইকে বুঝতে হবে।’’
রাউল আরও বলেন, ‘‘ভিড় দেখে মনে হচ্ছিল রক-কনসার্ট হবে। এতটুকু রাস্তা দেখা যাচ্ছিল না।’’ মায়ামি বিচের মেয়র ড্যান গেলবার বলেন, ‘‘গত বছরের থেকে বেশি ভিড় হয়েছিল এ বার। জনস্রোত।’’
ইউরোপে চূড়ান্ত বিতর্কের মাঝেই আমেরিকার ট্রায়ালে ৭৯ শতাংশ ‘নম্বর’ পেয়ে পাশ করল অ্যাস্ট্রাজ়েনেকা-অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ভ্যাকসিন চ্যাডক্স১। জার্মানি, ফ্রান্স, ইটালি, অস্ট্রিয়া, নরওয়ে-সহ অন্তত ১০-১২টি ইউরোপীয় দেশ চ্যাডক্স১-এর টিকাকরণ বন্ধ রেখেছে। অভিযোগ উঠেছে, এই টিকাটি নিয়ে অনেকের শরীরে রক্ত জমাট বেধে যাওয়ার মতো উপসর্গ দেখা দিয়েছে।
তবে বিতর্কের মাঝেই আমেরিকা নিজেদের মতো করে পরীক্ষা চালায়। সব ঠিক থাকলে শীঘ্রই আমেরিকায় ছাড়পত্র দিয়ে দেওয়া হবে চ্যাডক্স১-কে। অ্যাস্ট্রাজ়েনেকার তরফ থেকেও সুখবরটি দিয়ে জানানো হয়েছে যে, চিলি, পেরু এবং আমেরিকার ট্রায়ালে সাফল্য পেয়েছে তাদের টিকা। রক্ত জমাট বাধার মতো কোনও বিপদ ঘটেনি।