গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
বালুচিস্তানে ফের স্বাধীনতাপন্থী গেরিলাবাহিনীর হামলায় রক্ত ঝরল পাক সেনার। সে দেশের সংবাদমাধ্যম পাক ফৌজের বিবৃতি উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, পঞ্জগুর এবং নৌশকি জেলার দু’টি সেনাচৌকিতে পৃথক হামলার ঘটনায় চার সেনার মৃত্যু হয়েছে। জখম হয়েছেন কয়েক জন। সেনার পাল্টা হানায় ছ’জন বিদ্রোহী নিহত হয়েছেন বলে দাবি পাক অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তামন্ত্রী শেখ রশিদ আহমেদের দাবি।
বালুচিস্তানের স্বাধীনতাপন্থী সংগঠন ‘বালুচিস্তান লিবারেশন আর্মি’ (বিএলএ) হামলার দায় স্বীকার করে জানিয়েছে, পঞ্জগুর সেনাচৌকির প্রবেশপথে বিস্ফোরক বোঝাই গাড়ি নিয়ে আত্মঘাতী হামলা চালানো হয়। বিস্ফোরণে অন্তত ৪০ জন পাক সেনার মৃত্যু হয়েছে বলে বালুচ স্বাধীনতাযোদ্ধাদের দাবি। শীতকালীন অলিম্পিক্সের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে চিনে যাচ্ছেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তাঁর সফরের ঠিক আগে পরিকল্পনা মাফিক বালুচ বিদ্রোহীরা আঘাত হেনেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
ইমরান বৃহস্পতিবার টুইটারে লেখেন, ‘বালুচিস্তানের পঞ্চগুর এবং নৌশকির সেনাঘাঁটিতে জঙ্গিহানা প্রতিহত করার জন্য আমাদের নিরাপত্তাবাহিনীকে কুর্নিশ জানাই। যে সেনারা নিজেদের জীবন বিপন্ন করে আমাদের রক্ষা করে চলেছেন, গোটা জাতি তাঁদের পাশে রয়েছে।’
চলতি বছরের গোড়া থেকে বালুচিস্তান প্রদেশে বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে নতুন করে অভিযান শুরু করেছে পাক সেনা এবং ‘ফ্রন্টিয়ার কোর’ বাহিনী। যার জেরে নতুন করে অশান্ত হয়ে উঠেছে ওই এলাকা। গত ২৬ জানুয়ারি দক্ষিণ-পশ্চিম বালুচিস্তানের কেচ জেলায় একটি সড়কে পাক নিরাপত্তাবাহিনীর চেকপোস্টে হামলা চালায় বালুচ বিদ্রোহীরা। গুলির লড়াই এবং বিস্ফোরণে ১০ পাক সেনার মৃত্যু হয়। এর দু’দিন পরেই ডেরা বুগতি জেলায় একটি সরকারি দফতরে বালুচ বিদ্রোহীদের আক্রমণে চার জন নিহত হন।
‘চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর’ (সিপিইসি) এবং তেলের পাইপলাইন বালুচ বিদ্রোহীদের ‘মূল নিশানা’ বলে পাকসেনার দাবি। ১৩০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সিপিইসি-র উপর সাম্প্রতিককালে বেশ কয়েকবার হামলা চালিয়েছে বিএলএ, ‘বালুচ ন্যাশনালিস্ট আর্মি’ (বিএনএ)-র মতো স্বাধীনতাপন্থী বালুচ গোষ্ঠীগুলি। পশ্চিম চিনের শিনজিয়াং প্রদেশের কাশগড় থেকে শুরু হওয়া ওই রাস্তা কারাকোরাম পেরিয়ে ঢুকেছে পাকিস্তানে। শেষ হয়েছে বালুচিস্তান প্রদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম প্রান্তে চিন নিয়ন্ত্রিত গ্বদর বন্দরে।