India

বাইডেনের নীতি জানতেই পাক হানা, মত দিল্লির

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফল স্পষ্ট হওয়ার পরেই পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান টুইট করে বাইডেনকে অভিনন্দন জানান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০২০ ০৪:২৪
Share:

ছবি: গেটি ইমেজেস।

আগামী ২০ জানুয়ারি আমেরিকার সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার কথা বাইডেনের। তারপরেই জম্মু ও কাশ্মীর নিয়ে সীমান্তে এবং কূটনীতিতে পাকিস্তান আরও সক্রিয় হবে বলেই আশঙ্কা করছে নয়াদিল্লি। উপত্যকায় পাকিস্তানের মদতে সন্ত্রাসও বাড়বে।

Advertisement

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফল স্পষ্ট হওয়ার পরেই পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান টুইট করে বাইডেনকে অভিনন্দন জানান। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে তিনি লেখেন, ‘‘আফগানিস্তান এবং গোটা অঞ্চলের শান্তির জন্য আমেরিকার সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করতে আগ্রহী পাকিস্তান।’’ কূটনৈতিক শিবিরের মতে, গত কয়েক মাসে পাকিস্তানের কূটনীতির সবচেয়ে বড় সাফল্য, ভারতের গণতন্ত্র সম্পর্কে আমেরিকার উদারপন্থী অংশের মধ্যে সন্দেহের মনোভাব তৈরি করতে পারা। জম্মু ও কাশ্মীরে মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং সিএএ এবং এনআরসি সংক্রান্ত বিষয়ে ডেমোক্র্যাটরা গত এক বছরে মোদী সরকারের ভূমিকার সমালোচনা করেছেন বিভিন্ন স্তরে। এর পিছনে পাকিস্তানের ধারাবাহিক দৌত্যের কিছুটা হলেও প্রভাব রয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে।

কূটনৈতিক শিবিরের মতে, বাইডেন ক্ষমতায় এসে আফগানিস্তানে তালিবানের সঙ্গে যুদ্ধংদেহি মনোভাব নেবেন — ব্যাপারটা এমন নয়। ২০১০ সালের মতো বিপুল আমেরিকান সেনাবাহিনীও এখন আর কাবুলে নেই। রিপাবলিকানদের নীতি অনুসরণ করে ধীরে ধীরে বাকি সাড়ে চার হাজার সেনাও ফিরিয়ে নেওয়ার পথেই হাঁটবেন বাইডেন। তবুও আফগানিস্তান প্রশ্নে পাকিস্তানের উপর নির্ভরতা কিছুটা হলেও থাকবে আমেরিকার, ভূকৌশলগত কারণে। সেটুকুকে কাজে লাগিয়ে ইমরান সরকার তাদের ভারত বিরোধিতার তাস কতটা খেলে এখন সেদিকেই নজর রাখতে চাইছে সাউথ ব্লক।

Advertisement

আরও পড়ুন: অতিমারি রোখার জন্য প্রতিষেধকই যথেষ্ট নয়, সতর্কবার্তা হু প্রধানের

বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে অবশ্য এটাও মনে করা হচ্ছে, ক্ষমতায় বসার পরে বাইডেনের হাত ভর্তি থাকবে অন্যান্য অনেক আপৎকালীন বিষয়ে। যার সরাসরি সংযোগ রয়েছে আমেরিকার জাতীয় স্বার্থের সঙ্গে। ফলে কাশ্মীর নিয়ে মাথা গলানোর অবসর আপাতত তাঁর না পাওয়ারই কথা। বাইডেনের পক্ষ থেকে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা যা ওয়েবসাইটে দেওয়া হয়েছে, সেখানে চারটি অগ্রাধিকারের কথা বলা হয়েছে। কোভিড সঙ্কট, বর্ণবৈষম্য, অর্থনৈতিক নিরাপত্তা এবং পরিবেশ।

আরও পড়ুন: ‘রাহুলের পথ নিষ্কণ্টক করতেই মনমোহনকে প্রধানমন্ত্রী করেছিলেন সনিয়া’, লিখেছেন ওবামা

তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে গত কয়েক সপ্তাহে নিয়ন্ত্রণ রেখায় সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘনের ঘটনা বারবার ঘটাচ্ছে পাক সেনা। ভারতও জবাব দিয়েছে স্বাভাবিক ভাবেই। কূটনৈতিক শিবিরের মতে, কাশ্মীর নিয়ে আন্তর্জাতিক নজর ঘোরাতে এটা পাকিস্তানের খুবই পুরনো কৌশল। নিয়ন্ত্রণরেখায় সামরিক সংঘর্ষ এবং উপত্যকায় হিংসার ঘটনা বাড়িয়ে ওয়াশিংটনের কাছে দরবার করা। কাশ্মীরকে যাতে আলোচনার টেবিলে ভারত নিয়ে আসে তার জন্য নয়াদিল্লির উপরে চাপ বাড়ানো। ১৯৮০ সাল থেকেই ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে কাশ্মীর প্রসঙ্গে উত্তেজনা বাড়লে অনেক সময়ই নাক গলাতে দেখা গিয়েছে আমেরিকাকে। উত্তেজনা যাতে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের প্রচ্ছন্ন হুমকির পর্যায়ে পৌঁছায় সেটিও সময়ে সময়ে নিশ্চিত করতে দেখা গিয়েছে পাকিস্তানকে।

বাইডেনের দক্ষিণ এশিয়া নীতি কোন পথে এগোয় তা পরীক্ষা করতে নতুন করে কাশ্মীরে উত্তেজনা তৈরি করা পাকিস্তানের সম্ভাব্য পদক্ষেপের মধ্যে পড়বে, আঁচ করছে নয়াদিল্লি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement