ফাইল চিত্র।
আগামী মাসের শেষে প্রথম বারের জন্য ভারত সফরে আসার কথা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের। তাঁর সেই সম্ভাব্য সফরের আগে ভারত-আমেরিকা সম্পর্কের মধ্যে কিন্তু ধারাবাহিক ভাবে ছায়া ফেলে চলেছে পাকিস্তান।
গত সপ্তাহে পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশি আমেরিকায় গিয়ে দৌত্য সেরে এসেছেন। সন্ত্রাসবাদে পুঁজির জোগান কমাতে নজরদারি সংস্থা এফএটিএফের খাঁড়া ঝুলছে ইসলামাবাদের উপর। পাকিস্তানের দাবি, ধূসর তালিকা থেকে তাদের সরিয়ে নিতে সাহায্য করুক ট্রাম্প প্রশাসন। বিনিময়ে তারাও আমেরিকার ইরান ও আফগানিস্তান নীতিতে সাহায্য করবে। এর পরে ভারতের রক্তচাপ বাড়িয়ে কাল ডাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকনমিক ফোরামের পার্শ্ববৈঠকে কাশ্মীর নিয়ে কথা বলেছেন ট্রাম্প এবং পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। কাশ্মীর সমস্যার সমাধানে ফের মধ্যস্থতা করার প্রস্তাব দিয়ে ট্রাম্প বলেছেন, বাণিজ্য ও সীমান্ত পরিস্থিতির মত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে ইমরানের সঙ্গে কথা হয়েছে তাঁর। পাশে বসে ইমরান জানিয়েছেন, আলোচনা হয়েছে আফগানিস্তান নিয়েও। ইমরানকে ‘আমার বন্ধু’ সম্বোধন করে তাঁর অতীত বক্তব্যের পুনরাবৃত্তি করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তাঁর বক্তব্য, ‘‘ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে যা চলছে তার সমাধানে যদি আমরা কোনও সহায়তা করতে পারি, অবশ্যই করব। আমরা খুবই ঘনিষ্ঠ ভাবে বিষয়টির দিকে নজর রাখছি। আমার বন্ধুর সঙ্গে এখানে এসে আমি গর্বিত।’’ তার পরে আজই পাক বিদেশমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি দাবি করেছেন, খুব শীঘ্রই পাকিস্তানে যাবেন ট্রাম্প। ফলে জল্পনা শুরু হয়েছে, ভারতে আসার সময়ে কি ইসলামাবাদ ঘুরে আসবেন ট্রাম্প?
এই পরিস্থিতিতে ভারত ইসলামাবাদকে যতটা সম্ভব কোণঠাসা করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর, আমেরিকা থেকে পরমাণু প্রযুক্তি পাকিস্তান নিজের দেশে পাচার করছে বলে যে সাম্প্রতিক বিতর্কটি তৈরি হয়েছে তা বিশদে ট্রাম্প সরকারের কাছে জানতে চাইবে নয়াদিল্লি। ভারত আমেরিকাকে বলবে, পাকিস্তানের হাতে গোপন মার্কিন পরমাণু প্রযুক্তি যাওয়া গোটা অঞ্চলের জন্যই বিপজ্জনক। পরমাণু-প্রশ্নে পাকিস্তানের দায়িত্বজ্ঞানহীনতা ও পাক জঙ্গিদের হাতে পরমাণু অস্ত্র
যাওয়ার আশঙ্কার দিকটিকেও আলোচনায় আনতে চায় সাউথ ব্লক।
এ দিকে, চলতি বছরের জুলাই মাসে একই বৈঠক মঞ্চে বসতে চলেছেন মোদী ও ইমরান। সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজ়েশনের বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলনে, রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গে। সেখানে আট দেশভুক্ত এই সংগঠনের সব নেতা উপস্থিত থাকবেন। নতুন দুই সদস্য ভারত এবং পাকিস্তানের শীর্ষ নেতারাও থাকবেন সেখানে। তবে দুই নেতা উপস্থিত থাকলেও তাঁদের মধ্যে কোনও দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। ফলে জুলাইয়ে দু’দেশের মধ্যে বরফ গলার কোনও সম্ভাবনা দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না।