রাজনীতি থেকে দূরে থাকুন, সেনাকে পাক কোর্ট

২০১৭-য় ফৈজাবাদে তেহরিক-ই-লাব্বায়েক পাকিস্তান ও অন্যান্য সংগঠনের ধর্নার ফলে ইসলামাবাদে ঢোকার সব পথ বন্ধ হয়ে যায়।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ইসলামাবাদ শেষ আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০১:১৩
Share:

পাকিস্তানের শীর্ষ আদালত।—ফাইল চিত্র।

পাকিস্তানি সেনা, আইএসআই, পুলিশকে রাজনীতি থেকে দূরে থাকতে নির্দেশ দিল সে দেশের সুপ্রিম কোর্ট। পাশাপাশি কোনও ব্যক্তি অন্যের ক্ষতি হতে পারে এমন ‘ফতোয়া’ দিলে তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাস-দমন আইন, পাকিস্তান ফৌজদারি দণ্ডবিধি ও ইলেকট্রনিক অপরাধ রোধ আইন মেনে পদক্ষেপ করারও নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। গত নির্বাচনে ইমরান খানের দলের বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার পিছনে সেনার মদতে রিগিংয়ের অভিযোগ উঠেছিল। এই পরিস্থিতিতে পাক সুপ্রিম কোর্টের এই রায় তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।

Advertisement

২০১৭-য় ফৈজাবাদে তেহরিক-ই-লাব্বায়েক পাকিস্তান ও অন্যান্য সংগঠনের ধর্নার ফলে ইসলামাবাদে ঢোকার সব পথ বন্ধ হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত অভিযান চালাতে বাধ্য হয় পুলিশ। তার ফলে দেশজুড়ে নওয়াজ় শরিফ সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু হয়। বিপাকে পড়ে সেনার সাহায্য নেয় সরকার। ওই ঘটনার প্রেক্ষিতে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা শুরু করে পাক সুপ্রিম কোর্ট।

আজ বিচারপতি কাজি ফয়েজ় ইসা ও বিচারপতি মুশির আলমের বেঞ্চ জানিয়েছে, সামরিক বাহিনী ও আইএসআইয়ের মতো গুপ্তচর সংস্থার সদস্যদের আইনত রাজনীতিতে অং‌শগ্রহণ নিষিদ্ধ। সামরিক বাহিনীর কোনও সদস্য সেই আইন ভাঙলে তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে হবে।

Advertisement

সুপ্রিম কোর্টের মতে, যদি কোনও ব্যক্তি এমন কোনও ‘ফতোয়া’ জারি করে যাতে অন্যের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বা কেউ যদি ঘৃণা, উগ্রপন্থা বা সন্ত্রাস ছড়ায় তবে উপযুক্ত আইন মেনে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে সন্ত্রাস-দমন আইন, পাকিস্তান ফৌজদারি দণ্ডবিধি ও ইলেকট্রনিক অপরাধ রোধ আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় মামলা করা প্রয়োজন।

সুপ্রিম কোর্ট আরও জানিয়েছে, নাগরিকদের দল গড়া ও শান্তিপূর্ণ ভাবে বিক্ষোভ করার অধিকার রয়েছে। কিন্তু সেই অধিকারের উপরেও কিছু বিধিনিষেধ আছে। অন্যের যাতায়াতের অধিকার ও সম্পত্তির অধিকারে কেউ হস্তক্ষেপ করতে পারে না। বিক্ষোভকারীরা সম্পত্তি ভাঙচুর করলে তাদের শাস্তি দিতে হবে।

একাধিক বার অভ্যুত্থান ঘটিয়ে ক্ষমতা দখল করেছে পাক সেনা। পাকিস্তানে নির্বাচিত সরকারের রাশও অনেক সময়েই তাদের হাতে থাকে বলে মনে করেন কূটনীতিকেরা। ইমরান খানের জয়ের পিছনেও পাক সেনার মদত রয়েছে বলে অভিযোগ। সে দেশের সেনার মদতেই লস্কর, জইশের মতো সংগঠন ভারত-বিরোধী জঙ্গি কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছে বলে বারবার দাবি করেছে দিল্লি। মুম্বই হামলার মূল চক্রী হাফিজ সইদের বিরুদ্ধে তথ্য দিলে আর্থিক পুরস্কার ঘোষণা করেছে আমেরিকাও। কিন্তু হাফিজের গড়া রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করেছে সে দেশের গত নির্বাচনেই। ফলে পাক সুপ্রিম কোর্টের এই কড়া অবস্থান তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন কূটনীতিকেরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement