Malala Yousafzai

Malala Yousafzai: ‘ভারত ঘেঁষা’ মালালার ‘আসল রূপ’ সামনে আনতে প্রচার শুরু পাকিস্তানে

মালালার বিরুদ্ধে পাক প্রশাসনের এই তৎপরতার পিছনে অবশ্য অন্য রকম গন্ধও পাচ্ছেন অনেকে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

লাহৌর শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০২১ ০৭:০৫
Share:

ইউরোপীয় ইউনিয়নের অনুষ্ঠানে তসলিমা ও মালালা। —ফাইল চিত্র।

তালিবানি ফতোয়ার তোয়াক্কা না করে স্কুলে যাওয়ায় গুলি করেছিল জঙ্গিরা। আর এক জন শিশুদের পড়াশোনা ও অন্যান্য অধিকার নিশ্চিত করতে দীর্ঘদিন ধরে লড়াই করছিলেন। পাকিস্তানের মালালা ইউসুফজাই এবং ভারতের কৈলাস সত্যার্থীর মতো দুই লড়াকু মানুষকে কুর্নিশ জানিয়ে ২০১৪ সালে একসঙ্গে নোবেল শান্তি পুরস্কার দিয়েছিল সুইডেনের নোবেল কমিটি। গুলি খাওয়া সেই কিশোরী সোমবার ২৪ বছরে পা দিয়েছেন। আর সেই দিনেই তাঁকে ‘ভারত-ঘেঁষা এবং পশ্চিমি সংস্কৃতির নির্মাণ’ বলে দেগে দিয়ে মালালার বিরুদ্ধে মাঠে নামল পাকিস্তানের বেসরকারি স্কুলের সর্বোচ্চ সংগঠন।

Advertisement

মালালার বিরুদ্ধে পাক প্রশাসনের এই তৎপরতার পিছনে অবশ্য অন্য রকম গন্ধও পাচ্ছেন অনেকে। আফগানিস্তান থেকে আমেরিকার সেনা সরানোর প্রক্রিয় চলছে। সে দেশে ফের মাথা তুলছে তালিবান। তার প্রভাব প্রতিবেশী পাকিস্তানেও পড়বে বলে আশঙ্কা কূটনৈতিক মহলের। ভারতেরও তা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে যথেষ্ট। এমতাবস্থায় মালালা-বিরোধী এই প্রচার উৎকণ্ঠা বাড়াচ্ছে।

পাকিস্তানের বেসরকারি স্কুল সংগঠনের প্রেসিডেন্ট কাশিফ মির্জা সোমবার লাহৌরের গুলবার্গে একটি তথ্যচিত্রের উদ্বোধন করেন। মালালার আত্মকথন ‘আই অ্যাম মালালা’ বইটিকে চ্যালেঞ্জ করে বানানো ওই তথ্যচিত্রের নাম ‘আই অ্যাম নট মালালা।’ মির্জা বলেন, ‘‘দেশের ২ লক্ষ বেসরকারি স্কুলের ২ কোটি পড়ুয়ার কাছে মালালার আসল রূপ তুলে ধরতে চাই।’’ গুলবার্গের সাংবাদিক বৈঠকে মির্জা বলেন, ‘‘বিয়ের মতো পবিত্র সামাজিক প্রতিষ্ঠানের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মালালা। তার বদলে নারী-পুরুষের একসঙ্গে থাকা বা ‘পার্টনারশিপ’-এর হয়ে সওয়াল করেছেন তিনি। ইসলামি মতে যা আসলে অবৈধ।’’ আরও অভিযোগ, কোরানের নানা নিদান, ধর্মীয় আদর্শ এবং পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা মহম্মদ আলি জিন্না-সহ পাক সেনাবাহিনীর সমালোচনা করেছেন মালালা। ওই বইয়ে পশ্চিমি জীবনধারা ও আদর্শের প্রচার করেছেন। মির্জার মতে, ভারতে আশ্রয় নেওয়া বিতর্কিত বাংলাদেশি লেখিকা তসলিমা নাসরিনের সঙ্গে মালালাকে এক ছবিতে দেখা গিয়েছে। মালালা আসলে পশ্চিমি দেশগুলির নির্মাণ এবং ভারতের ঘনিষ্ঠ। কাজেই স্কুল পড়ুয়ারা যাতে মালালার গল্পে প্রভাবিত না-হয়, সে কারণে তথ্যচিত্রটি তৈরি করা হয়েছে।

Advertisement

মালালা-বিরোধী তথ্যচিত্র প্রকাশের পাশাপাশি পঞ্জাব প্রদেশে মালালার ছবি দেওয়া বেশ কিছু পাঠ্য বই বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। অভিযোগ, পঞ্জাবের স্কুলশিক্ষা সংক্রান্ত বোর্ডের (পিসিবিটি) চূড়ান্ত ছাড়পত্র ছাড়াই বইটি ছাপা হয়েছে। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস কর্তৃক প্রকাশিত সপ্তম শ্রেণির ওই পাঠ্য বইয়ে পাকিস্তানের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বের তালিকায় নাম ছিল মালালার। ১৯৬৫ সালে ভারতের সঙ্গে যুদ্ধে প্রয়াত সেনাকর্তা আজিজ ভাট্টি, পাকিস্তানের রূপকার মহম্মদ আলি জিন্না, কবি আলামা ইকবাল, শিক্ষাবিদ স্যর সৈয়দ আহমেদ খান, প্রথম প্রধানমন্ত্রী লিয়াকৎ আলি খানের পাশাপাশি বিশ্বের সর্বকনিষ্ঠ নোবেলজয়ী হিসেবে ছবি ছিল মালালারও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement