পাকিস্তানে নির্বাচনে উঠেছে কারচুপির অভিযোগ। — ফাইল চিত্র।
পাকিস্তানে ভোট কারচুপিতে জড়িত রয়েছেন মুখ্য নির্বাচনী কমিশনার এবং প্রধান বিচারপতি! দাবি করে ইস্তফা দিলেন সে দেশের এক শীর্ষস্থানীয় আমলা। সব ‘কুকর্মের দায়’ নিজের কাঁধে নিয়েছেন তিনি। পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন এই দাবি মানেনি। বিবৃতি দিয়ে অভিযোগ খারিজ করেছে।
৮ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচন হয়েছে। সেখানে কারচুপি হয়েছে বলে দাবি করেছে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পিটিআই (পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ)। দেশজুড়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন সমর্থকেরা। এই আবহে কারচুপির অভিযোগ করলেন রাওয়ালপিণ্ডির প্রাক্তন কমিশনার লিয়াকত আলি চাট্ঠা। রাওয়ালপিণ্ডি ক্রিকেট স্টেডিয়ামের সামনে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘‘যে প্রার্থীরা হারছিলেন, তাঁদের জয়ী করা হয়েছে। আমি এ সবের দায় নিজের কাঁধে নিচ্ছি। পাশাপাশি, এ-ও বলছি যে, মুখ্য নির্বাচনী কমিশনার এবং প্রধান বিচারপতিও এর সঙ্গে জড়িত।’’ তাঁর এই মন্তব্য প্রকাশিত হয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ‘ডন’-এ।
‘ডন’ আরও দাবি করেছে, কারচুপির ‘দায়’ নেওয়ার পর পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন লিয়াকত। তিনি আরও বলেন, ‘‘দেশকে পিছন থেকে ছুরির মারার ঘটনা আমাকে ঘুমোতে দিচ্ছে না।’’ তিনি এর জন্য শাস্তিও চেয়েছেন। লিয়াকতের কথায়, ‘‘আমি যে অবিচার করেছি, তার জন্য আমার শাস্তি হওয়া উচিত। বাকিরা যে দোষ করেছেন, তার জন্য তাঁদেরও শাস্তি প্রাপ্য।’’ প্রাক্তন আমলা এমন দাবিও করেছেন, তাঁর উপর এতটাই চাপ দেওয়া হয়েছিল যে, তিনি আত্মহত্যার কথা ভেবেছিলেন। পরে ঠিক করেন, জনসমক্ষে সব তুলে ধরবেন। এর পর তিনি বাকি আমলাদের উদ্দেশে জানান যে, ‘রাজনীতিক’দের জন্য এ ধরনের ভুল করা উচিত নয়।
পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন বিবৃতি দিয়ে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। বিবৃতিতে তারা জানিয়েছে, ‘‘রাওয়ালপিন্ডির কমিশনার মুখ্য নির্বাচনী কমিশনার বা কমিশনের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করেছেন, তা খারিজ করা হচ্ছে। নির্বাচন কমিশনের কোনও আমলা এ ধরনের কারচুপির কোনও নির্দেশ কখনও দেননি।’’ বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘‘কোনও বিভাগের কোনও কমিশনারকে কখনও ডেপুটি রিটার্নিং অফিসার বা রিটার্নিং অফিসার হিসাবে নিযুক্ত করা হয়নি। নির্বাচন করানোর ক্ষেত্রেও কমিশনারদের সরাসরি কোনও ভূমিকা নেই।’’ বিষয়টি নিয়ে তদন্ত হবে বলেও জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
এর আগে পঞ্জাবের অস্থায়ী তথ্যমন্ত্রী আমির মিরও লিয়াকতের দাবি খারিজ করেছেন। জানিয়েছেন, লিয়াকত নিজের দাবির সপক্ষে কোনও প্রমাণ দিতে পারেননি। তিনি বলেন, ‘‘পদ ছেড়ে রাজনীতিতে নামতে চান লিয়াকত। সে কারণে এ সব কথা বলছেন।’’
পাকিস্তান লোকসভায় মোট ২৬৫টি আসন রয়েছে। তার মধ্যে ৯৩টিতে জিতেছেন পিটিআই সমর্থিত নির্দল প্রার্থীরা। নওয়াজ় শরিফের দল পাকিস্তান মুসলিম লিগ-এন (পিএমএল-এন) জিতেছে ৭৫টি আসনে। বিলাবল ভুট্টো জ়ারদারির দল পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) জয়ী হয়েছে ৫৪টি আসনে। সরকার গড়তে গেলে ১৩৩টি আসনে জয়ী হতে হবে।