ইমরান খানকে নিশানা বিলাওল ভুট্টো জারদারির। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ নিয়ে ভারত-পাক কূটনীতির পারদ তুঙ্গে। এ বার সেই গনগনে আঁচে তপ্ত হয়ে উঠল ইসলামাবাদের ঘরোয়া রাজনীতিও। নয়াদিল্লির ওই পদক্ষেপ নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলের কাছে নালিশের পালা বজায় রেখেছে পাকিস্তান। আরও কয়েক ধাপ এগিয়ে পরমাণু যুদ্ধের হুঁশিয়ারি পর্যন্ত দিয়ে বসেছেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। কিন্তু, এ সব নিয়ে এ বার নিজের দেশেই তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন তিনি। ইমরানের তীব্র সমালোচনা করেছেন বিরোধী দল পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)-র চেয়ারম্যান বিলাওল ভুট্টো জারদারি।
গত ৫ অগস্ট সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ প্রত্যাহারের ঘোষণা করেছে নয়াদিল্লি। আর তার আঁচে ফুটছে ওয়াঘার ও পার। সোমবার রাওয়ালপিণ্ডির আদিয়ালা জেলে বাবা আসিফ আলি জারদারির সঙ্গে দেখা করতে যান বিলাওল ভুট্টো জারদারি। সেখানেই সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর উচিত শ্রীনগরের কথা ভুলে গিয়ে আগে মুজফফরাবাদে মনঃসংযোগ করা।’’
ইমরানকে আক্রমণ করতে গিয়ে এখানেই থামেননি বিলাওল। ইমরান সরকারের কাশ্মীর নীতি নিয়ে এ দিন সমালোচনায় মুখর হয়ে ওঠেন তিনি। বলেন, ‘‘কাশ্মীর নিয়ে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে পাক সরকার। মোদী যখন কাশ্মীর দখল করতে ব্যস্ত তখন সরকার ঘুমোচ্ছিল। তখন ইমরানের সরকার দেশের অর্থনীতি ধ্বংস করা ও বিরোধীদের কোণঠাসা করতে ব্যস্ত ছিল।’’
আরও পড়ুন: পাখির চোখ উপত্যকার মন জয়, মন্ত্রীগোষ্ঠী গঠন করে উন্নয়নের রূপরেখা তৈরির নির্দেশ কেন্দ্রের
পাকিস্তান তার চিরাচরিত কাশ্মীর নীতি থেকে ইমরান সরকার সরে এসেছে বলেও অভিযোগ করেছেন পিপিপি-র চেয়ারম্যান। বিলাবল বলেন, ‘‘প্রথমে পাকিস্তানের নীতি ছিল কী করে শ্রীনগর হাতে পাওয়া যায়। কিন্তু, এখন ইমরানের সরকারের অদক্ষতা ও লোভের জন্য বর্তমান পাক বিদেশনীতি হচ্ছে, কী ভাবে মুজফফরাবাদ বাঁচানো যায়।’’
কাশ্মীর নিয়ে পাকিস্তানের শোরগোলের মধ্যেও কয়েক দিন আগে নরেন্দ্র মোদীর হাতে সে দেশের সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান তুলে দিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরশাহি। পাকিস্তানের পার্শ্ববর্তী দেশের এমন পদক্ষেপ নিয়েও ইমরান সরকারের সমালোচনা করেছেন বিলাওল। তাঁর অভিযোগ, ‘‘এটা পাক বিদেশনীতির ব্যর্থতা।’’
কাশ্মীর নিয়ে ভারতের পদক্ষেপের পাল্টা হিসাবে ময়দানে নেমেছেন ইমরান খান। শুরু থেকেই বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলকে ভাবানোর চেষ্টা কম করেননি তিনি। বার বার কাশ্মীর ইস্যুতে তৃতীয় পক্ষ টেনে আনার পক্ষে সওয়াল করে গিয়েছেন। কাশ্মীর নিয়ে মধ্যস্থতা করার প্রস্তাব দিয়ে বসেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও। আর তাতে প্রাথমিক ভাবে কিছুটা আশার আলো দেখেছিল ইসলামাবাদ। কিন্তু, তা নিভে গিয়েছে কয়েক দিন আগে জি সেভেন বৈঠকে। সেখানে ডোনাল্ড ট্রাম্প সাফ জানিয়ে দেন, কাশ্মীর নিয়ে মধ্যস্থতা করার তাঁর কোনও ইচ্ছেই নেই। বরং, ইমরান খানের পরমাণু যুদ্ধের নিয়ে হুমকি নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করে জি সেভেন গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলি।
আরও পড়ুন: আমরা জানি কী করতে হবে, ৩৭০ বিলোপ নিয়ে মন্তব্য সুপ্রিম কোর্টের, মামলা সাংবিধানিক বেঞ্চে