কাশ্মীর সীমান্তে পাহারারত বিএসএফ জওয়ান।—ছবি পিটিআই।
জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা লোপের পরে এক মাসে পর্যায়ক্রমে কখনও সুর চড়াচ্ছে, আবার কখনও সুর নরম করছে ইমরান খান সরকার। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের মতে, এক দিকে ঘরোয়া রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতার জন্য কাশ্মীর নিয়ে কট্টর মনোভাব নিতে হচ্ছে তাদের। অন্য দিকে সেই মনোভাব ধরে রাখার জন্য যথেষ্ট আন্তর্জাতিক সমর্থন জোগাড় করে উঠতে পারেনি ইসলামাবাদ। তাই এই বিষয়টি নিয়ে কোনও ধারাবাহিক অবস্থান নেওয়া পাকিস্তানের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না।
কাশ্মীর সংক্রান্ত সিদ্ধান্তের মাসপূর্তি হল আজ। চটজলদি প্রতিক্রিয়ায় চিনকে পাশে নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের রুদ্ধদ্বার বৈঠক করাতে সমর্থ হয়েছিল পাকিস্তান। কিন্তু ওই পর্যন্তই। আমেরিকা, ফ্রান্স, রাশিয়া, ব্রিটেনের মতো সব শক্তিধর দেশই প্রকাশ্যেই বিবৃতি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছে, কাশ্মীর সমস্যা দ্বিপাক্ষিক। এর মধ্যে তাদের নাক গলানোর কোনও প্রশ্ন উঠছে না। এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর লাগাতার দৌত্য চালিয়ে গিয়েছেন পশ্চিমী দেশগুলির সঙ্গে। কখনও ফোনে, কখনও ব্যক্তিগত সফরে গিয়ে রাষ্ট্রনেতাদের সঙ্গে কাশ্মীর নিয়ে কথা বলছেন তাঁরা। এই কূটনৈতিক প্রয়াসের ফলও মিলছে বলেই দাবি সাউথ ব্লকের।
শুধু পশ্চিমী দেশগুলিই নয়। পাকিস্তানের পরম মিত্র ইসলামিক রাষ্ট্রগুলির সংগঠন ওআইসি-র (অর্গ্যানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন) মধ্যে একমাত্র তুরস্ক বাদে অন্য কেউই কাশ্মীর নিয়ে নাক গলানোর ইঙ্গিত দেয়নি। বরং প্রধানমন্ত্রীকে সংযুক্ত আরব আমিরশাহি সে দেশের সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মানও দিয়েছে ইমরানের রক্তচাপ বাড়িয়ে। ইতিমধ্যে পাক সরকার বর্তমান কাশ্মীর বিতর্ককে আফগানিস্তানের শান্তি প্রক্রিয়ার সঙ্গেও জড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। সেই চেষ্টাও ব্যর্থ হয়। সাউথ ব্লকের দাবি, পাকিস্তান ক্রমশ বুঝতে পারছে যে কাশ্মীর প্রশ্নে আন্তর্জাতিক ভাবে একঘরে হয়ে পড়ছে তারা। তাই বারবার পরমাণু অস্ত্র নিয়ে প্রচ্ছন্ন হুমকি দিলেও গত কাল প্রথমে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার না-করার কথা বলেছিলেন ইমরান। আজ আবার পাক সরকার জানিয়েছে, দেশের পরমাণু অস্ত্রনীতিতে কোনও পরিবর্তন হয়নি।