International News

পাকিস্তান এখন সন্ত্রাসের স্বর্গরাজ্য: চমকে দিয়ে মন্তব্য চিনা মুখপত্রের

বালুচিস্তানে এক সপ্তাহ আগেই ঘটেছে অপ্রীতিকর ঘটনাটা। দুই চিনা নাগরিককে সন্ত্রাসবাদীরা অপহরণ করে খুন করেছে। অভিযোগের তির ইসলামিক স্টেটের (আইএস) দিকে। এই ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে চিন।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০১৭ ১৭:৩৪
Share:

ভারত বিরোধী সন্ত্রাসবাদীদের আশ্রয় দিতে দিতে নিজেই আজ সন্ত্রাসের সবচেয়ে বড় শিকার পাকিস্তান।মিত্র দেশ চিনও তা নিয়ে কথা শোনাতে ছাড়ছে না। বিড়ম্বনা রোজ বাড়ছে নওয়াজের। —ফাইল চিত্র।

পাকিস্তান এখন সন্ত্রাসবাদীদের স্বর্গরাজ্য। ভারত নয়, আমেরিকাও নয়, এই মন্তব্য এ বার চিনের। শাসক কমিউনিস্ট পার্টির যে মুখপত্রে আন্তর্জাতিক এবং কূটনৈতিক বিষয় নিয়ে বেজিং-এর মনোভাব বিশদে প্রকাশ করা হয়, সেই গ্লোবাল টাইমসেই পাকিস্তানে বাড়তে থাকা সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ সম্পর্কে এমন কথা লেখা হয়েছে। গ্লোবাল টাইমসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে— পাকিস্তানে যে বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ করছে চিন, তা যে কোনও সময় নাশকতার কবলে পড়তে পারে। চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডরের নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে চিনা মুখপত্রটিতে।

Advertisement

বালুচিস্তানে এক সপ্তাহ আগেই ঘটেছে অপ্রীতিকর ঘটনাটা। দুই চিনা নাগরিককে সন্ত্রাসবাদীরা অপহরণ করে খুন করেছে। অভিযোগের তির ইসলামিক স্টেটের (আইএস) দিকে। এই ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে চিন। কর্মসূত্রে পাকিস্তানে গিয়েছেন যে চিনা নাগরিকরা, তাঁদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতেই হবে ইসলামাবাদকে— বেশ কড়া ভাবেই এই বার্তা দেওয়া হয় বেজিং-এর তরফ থেকে। এ বার গ্লোবাল টাইমসে প্রকাশিত প্রতিবেদনের মাধ্যমে ফের পাকিস্তানকে সতর্ক করে দিতে চাইল চিন।

ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড বা ওবিওআর নীতির রূপায়ণে চিন এখন অত্যন্ত উৎসাহী। চিনের এই বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের আওতায় এ যাবৎ যে সব প্রকল্প গৃহীত হয়েছে, তার মধ্যে চিন-পাক অর্থনৈতিক করিডরই (সিপিইসি) সবচেয়ে বড় প্রকল্প। এই প্রকল্পের জন্য চিন ইতিমধ্যেই পাকিস্তানে বিপুল বিনিয়োগ করেছে। আবার এই করিডরকে কেন্দ্র করেও গড়ে উঠছে নানা প্রকল্প। সে সব প্রকল্পের রূপায়ণের জন্য চিনা ইঞ্জিনিয়ার, শ্রমিক এবং অন্যান্য পেশার নাগরিকদের ভিড়ও প্রায় রোজই বাড়ছে পাকিস্তানে। এই চিনা নাগরিকদের নিরাপত্তার প্রশ্নে বেজিং কোনও রকম আপোসের পক্ষপাতী নয়। স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে গ্লোবাল টাইমসে।

Advertisement

আন্তর্জাতিক মহলে কোণঠাসা পাকিস্তান এখন আরও বেশি করে আঁকড়ে ধরতে চাইছে চিনকে। একমাত্র অবলম্বন চিনই। কিন্তু সন্ত্রাসের আঁচ বেজিং-এর গায়ে লাগতেই নওয়াজকে সতর্কবার্তা দিতে শুরু করেছেন চিনফিং। —ফাইল চিত্র।

চিনা কাগজে লেখা হয়েছে, ‘‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ যত এগোবে, চিনের ইঞ্জিনিয়র, শ্রমিক ও নাগরিকরা ততই বেশি সংখ্যায় সেই সব দেশে কাজ করতে যাবেন, যে সব দেশ এই প্রকল্পের পথে পড়বে। এতে চিনা নাগরিকদের নিরাপত্তা সংক্রান্ত ঝুঁকি আরও বেড়ে যাবে।’’ পাকিস্তানে কাজ করতে গিয়ে চিনা নাগরিকরা যে ধরনের বিপদের মুখে পড়ছেন, তার প্রেক্ষিতেই যে চিনা সংবাদপত্রে এ কথা লেখা হয়েছে, তা নিয়ে কোনও মহলেরই সংশয় নেই।

আরও পড়ুন: মোদী-ট্রাম্প বৈঠকে বিশেষ গুরুত্ব পাবে সন্ত্রাসবাদ, জানাল হোয়াইট হাউস

চিন অবশ্য নিজেকে সন্ত্রাসবাদীদের অন্যতম বড় নিশানা হিসেবে এখনও মনে করছে না। গ্লোবাল টাইমসে লেখা হয়েছে, ‘‘এমন নয় যে সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীগুলি এখন চিনকেই তাদের নিশানা বানিয়েছে।’’ চিনের অনেকগুলি সংস্থা এখন বহুজাতিক হয়ে গিয়েছে, সেই সূত্রে আগের চেয়ে অনেক বেশি চিনা নাগরিক এখন কর্মসূত্রে বিদেশে থাকছেন। এই প্রসারের কারণেই চিনারা এখন আগের চেয়ে বেশি সংখ্যায় সন্ত্রাসের কবলে পড়ছেন। মত বেজিং-এর।

আরও পড়ুন: চিনাদের নিরাপত্তা বাড়াচ্ছে পাকিস্তান

পাকিস্তানে কর্মরত চিনা নাগরিকদের বিপদ অদূর ভবিষ্যতে আরও বাড়তে পারে বলে মনে করছে বেজিং। পৃথিবীর যে দেশগুলিতে সন্ত্রাসের বিপদ সবচেয়ে বেশি, সেই দেশগুলির মধ্যে পাকিস্তান অন্যতম। পাকিস্তানের নিরাপত্তা ব্যবস্থাও অত্যন্ত দুর্বল। মত গ্লোবাল টাইমসের। পাকিস্তানে কর্মরত চিনা নাগরিকদের ঝুঁকি আরও বাড়তে পারে বলেও চিনা কমিউনিস্ট পার্টির মুখপত্রে লেখা হয়েছে। পাকিস্তানকে ‘চিনের ঘনিষ্ঠ মিত্র’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনটিতে। সেখানে লেখা হয়েছে, ‘‘বেজিং যে ইসলামাবাদে বিপুল বিনিয়োগ করবে, সেটাই কাঙ্ক্ষিত। ফলে সহজেই সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীগুলির হামলার শিকার হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যাচ্ছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement