শনিবার আততায়ীদের গুলিতে নিহত হন খলিস্তানপন্থী জঙ্গি নেতা পরমজিৎ সিংহ পঞ্জওয়ার। ফাইল চিত্র।
গত শনিবার পাকিস্তানে খুন হয়েছিলেন খলিস্তানপন্থী জঙ্গি নেতা পরমজিৎ সিংহ পঞ্জওয়ার ওরফে মালিক সর্দার সিংহ। পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের মদতে ভারতে একাধিক নাশকতার অভিযোগ ছিল তাঁর বিরুদ্ধে। এই পরমজিৎ দীর্ঘ দিন ধরেই ছিলেন ভারতের মোস্ট ওয়ান্টেড তালিকায়। বারো বছর আগে, ২০১১ সালের মার্চ মাসে ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে স্বরাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠকে নয়াদিল্লির তরফে ইসলামাবাদের হাতে ৫০ জন অপরাধীর তালিকা তুলে দেওয়া হয়। ওই তালিকায় নাম ছিল পরমজিতেরও। তাঁকে ভারতের হাতে তুলে দেওয়ার আর্জি জানানো হয়। কিন্তু পাকিস্তানের তরফে দাবি করা হয়েছিল যে, খলিস্তানপন্থী এই নেতা পাকিস্তানে থাকেন না। কিন্তু শনিবারের ঘটনায় পাকিস্তানের ‘মিথ্যাচার’টিই স্পষ্ট হয়ে গেল বলে মনে করা হচ্ছে।
অন্য দিকে, পরমজিতের ঘাতক কারা, তা এখনও পর্যন্ত প্রকাশ্যে আনেনি পাকিস্তান। সে দেশের সংবাদমাধ্যমগুলির তরফে রবিবারও বলা হয়েছে, অজ্ঞাতপরিচয় আততায়ীরা হত্যা করেছে পরমজিৎকে। বাবার শেষকৃত্য করতে পাকিস্তানি ভিসার জন্য আবেদন করেছেন পরমজিতের পুত্র। কিন্তু পাকিস্তান প্রশাসন সূত্রে খবর, সেই আবেদন নাকচ করে দেওয়া হয়েছে। ২০২০ সালের ১ জুলাই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক ইউপিএ আইনে ‘সন্ত্রাসবাদী’ বলে ঘোষণা করে। পরমজিতের বিরুদ্ধে মাদক চোরাচালান কিংবা নকল ভারতীয় নোটের কারবার করার অভিযোগ তো আছেই, পটিয়ালার একটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ১৮ জন ছাত্রকে খুন করার অভিযোগও রয়েছে।
খলিস্তানপন্থী গোষ্ঠী দল খালসার প্রধান কুঁয়ার পাল সিংহ শনিবার দুপুরে পরমজিতের মৃত্যুর কথা জানান। সামাজিক মাধ্যমে খলিস্তানপন্থীদের একাংশ এই খুনের নেপথ্যে ভারতীয় গুপ্তচর সংস্থা ‘র’-এর হাত রয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে। নব্বইয়ের দশকে খলিস্তান কমান্ডো ফোর্সের প্রধান হয়েছিলেন পরমজিৎ। তার কিছু দিনের মধ্যেই গোপনে সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তানে আশ্রয় নিয়েছিলেন। পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের মদতে ভারতে একাধিক নাশকতার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। ষাটের দশকে পঞ্জাবের তরণতারণে পরমজিতের জন্ম। আশির দশকে উত্তাল পঞ্জাবে তিনি সমবায় ব্যাঙ্কের চাকরি ছেড়ে খলিস্তান আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন বলে পুলিশ সূত্রের খবর। পরমজিতের তুতো ভাই লব সিংহ খলিস্তান কমান্ডো ফোর্সের শীর্ষ নেতা ছিলেন। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে লবের মৃত্যুর পরে পরমজিৎ সংগঠনের প্রধান হন।