প্রতীকী ছবি।
তিন বছর আগে সিন্ধু নদের এ পারে ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিয়ে ‘ভারত বিরোধী’ তকমা পেয়েছিলেন জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় (জেএনইউ)-এর পড়ুয়ারা। তিন বছর পরে সিন্ধু নদের ও পারে ছাত্র আন্দোলনে যোগ দিয়ে ‘পাকিস্তান বিরোধী’ তকমা জুটল সিন্ধ বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের একাংশের।
পাকিস্তানে ফৈজ সাহিত্য উৎসবে কয়েক দিন আগে ‘প্রোগ্রেসিভ স্টুডেন্টস কালেক্টিভ’ নামে একটি বামপন্থী ছাত্র সংগঠন পিতৃতন্ত্র, পুলিশি নির্যাতন এবং ইমরান সরকারের বিরুদ্ধে ‘আজাদি’র স্লোগান দেয়। যার ভিডিয়ো নিমেষে ভাইরাল হয়ে পার হয়ে আসে সিন্ধু নদ। সেখানে দেখা যাচ্ছে, ২০১৬ সালে জেএনইউ-তে কানহাইয়া কুমারের নেতৃত্বে ছাত্র আন্দোলনে যে স্লোগান উঠেছিল, অবিকল সেই সুর, সেই ভঙ্গি, সেই ভাষা। শিক্ষায় ব্যয় বরাদ্দ কমানোর প্রতিবাদে ও ছাত্র সংসদের অধিকার রক্ষার দাবিতে আগামী ২৯ নভেম্বর একটি মিছিলও ডাকা হয়েছে পাকিস্তানে। তারই প্রস্তুতি হিসাবে ছাত্রছাত্রীদের সংগঠিত করতে ‘আজাদি’ স্লোগান সহযোগে একটি প্রচার সমাবেশ করে ‘প্রোগ্রেসিভ স্টুডেন্টস কালেক্টিভ’।
তবে শুধু ওই একটি আন্দোলন নয়। পাকিস্তানে সরকার বিরোধী আন্দোলন চলছে প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে। ৩১ অক্টোবর সিন্ধ বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা হস্টেলে জলাভাবের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেন। তার জেরে ১৭ জন ছাত্রের বিরুদ্ধে ‘পাকিস্তান বিরোধী’ স্লোগান দেওয়ার অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করা হয়েছে। পিটিআই সূত্রের খবর, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা বিভাগের প্রধান গুলাম কাদির পানহওয়ারের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তাঁদের বিরুদ্ধে ওই মামলা করেছে। পানহওয়ার দাবি করেছেন, হস্টেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত তিন ব্যক্তি গত ৩১ অক্টোবর তাঁকে জানিয়েছিলেন, জিয়া সিন্ধ গোষ্ঠীর ১৭-১৮ জন ছাত্র পাক বিরোধী এবং সরকার বিরোধী স্লোগান দিয়েছেন। পাকিস্তানকে টুকরো করার স্লোগান দিতে দিতে তাঁরা হস্টেলের দিকে এগোচ্ছিলেন। পানহওয়ারের দাবি, তিনি এবং হস্টেল ইন চার্জ ওই ছাত্রদের শনাক্ত করতে পারেন। তাঁর কাছে ওই স্লোগানের ভিডিয়ো রেকর্ডিংও রয়েছে। যদিও সেই ভিডিয়ো তিনি প্রকাশ করেননি।
ভারতের বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলির বক্তব্য, তিন বছর আগে জেএনইউয়ে কানহাইয়াদের সম্পর্কে যেমন বলা হয়েছিল, তাঁরা ভারতকে টুকরো করার স্লোগান দিয়েছেন, পাকিস্তানেও ঠিক তেমনই হচ্ছে। জেএনইউ-তেও ওই অভিযোগের সমর্থনে কোনও ভিডিয়ো ক্লিপ পাওয়া যায়নি। সিন্ধ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রেও এখনও পর্যন্ত পাকিস্তানকে টুকরো করার স্লোগানের ভিডিয়ো মেলেনি।
সিন্ধ-এর অভিযুক্ত ছাত্ররা দাবি করছেন, তাঁরা হস্টেলে পর্যাপ্ত জলের দাবিতে বিক্ষোভ দেখিয়ে প্রশাসনিক চক্রান্তের শিকার হয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ফতেহ মহম্মদ বুরফতও বলেন, ‘‘ওই পড়ুয়ারা পাক-বিরোধী স্লোগান দেননি। ওঁদের হাতে জিয়া সিন্ধের পতাকাও ছিল না। ওঁরা জলের দাবিতে বিক্ষোভ করেছিলেন। আমি পুলিশের সঙ্গে কথা বলব এবং দেখব কী ভাবে ওঁদের বিরুদ্ধে এমন মামলা হল।’’