মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় নিরাপত্তায় গাফিলতির কথা স্বীকার পুলিশ প্রধানের। ছবি: রয়টার্স।
পুলিশের পোশাকে পাকিস্তানের পেশোয়ারের মসজিদে ঢুকে পড়েছিল বোমারু জঙ্গি। পুলিশের উর্দিতে থাকায় নিরাপত্তারক্ষীদের নজর এড়িয়ে সহজেই প্রার্থনাস্থলে চলে গিয়েছিলেন তিনি। তার পরই আত্মঘাতী বিস্ফোরণ।
বিস্ফোরণের ঘটনায় নিরাপত্তায় যে ফাঁক ছিল, তা স্বীকার করেছেন খোদ খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের পুলিশ প্রধান মোয়াজ্জম জাহ আনসারি। তিনি বলেন, “পুলিশের উর্দিতে আসায় ঠিকমতো পরীক্ষা করা হয়নি ওই জঙ্গির। এটা নিরাপত্তার বড়সড় গাফিলতি।” তিনি আরও জানান, যেখানে একসঙ্গে এত পুলিশকর্মী প্রার্থনার জন্য জড়ো হয়েছিলেন, নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও আঁটসাঁট করা উচিত ছিল। আর এই সুযোগটাকেই কাজে লাগিয়েছেন বোমারু জঙ্গি।
পুলিশ প্রধানের দাবি, পুরোটাই একটি পরিকল্পিত হামলা ছিল। একা নয়, একটি দল গোটা অপারেশনটি চালিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। একটি স্পর্শকাতর এবং নিরাপত্তায় মোড়া একটি এলাকায় কোথায় গলদ ছিল, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। আরও উল্লেখযোগ্য যে, যে মসজিদে বিস্ফোরণ হয়েছে তার কয়েক হাত দূরেই পাক সরকারের গোয়েন্দা কর্তাদের বাড়ি ছিল। শুধু তা-ই নয়, সন্ত্রাসদমন শাখার আধিকারিকরাও ওই এলাকায় থাকেন। অত্যন্ত স্পর্শকাতর এমন একটি এলাকায় কী ভাবে জঙ্গি ঢুকে পড়লেন, কোথায় গাফিলতি ছিল তার কাটাছেঁড়া চলছে পাক প্রশাসনের অন্দরে।
এই বিস্ফোরণের সঙ্গে ওই এলাকার ভিতরের কেউ জড়িত আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ প্রধান। তবে প্রাথমিক ভাবে পুলিশের একাংশ মনে করছে, ভিতরের কারও সাহায্য ছাড়া এই ঘটনা সম্ভব নয়। পুলিশ প্রধান জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই দু’জনকে পুলিশ সদর দফতরের কাছ থেকে আটক করা হয়েছে। তাঁদের জেরা করে জানার চেষ্টা চলছে এই ঘটনার সঙ্গে পুলিশের অন্দরের কেউ জড়িত কি না। এ ছাড়াও, নিরাপত্তার ফাঁক গলে কী ভাবে বিস্ফোরক ওই স্পর্শকাতর এলাকায় ঢুকল তা-ও জানার চেষ্টা চলছে।
সোমবার পেশোয়ারের মসজিদে আত্মঘাতী বিস্ফোরণের ঘটনায় ইতিমধ্যেই মৃত্যু হয়েছে ১০১ জনের। আহতের সংখ্যাও শতাধিক।