বিস্ফোরণে নিহত পাক সেনার ক্যাপ্টেন কাশিফ। ছবি: সংগৃহীত।
খাইবার-পাখতুনখোয়ার পরে এ বার বালুচিস্তান। ফের আফগানিস্তান সীমান্ত লাগোয়া এলাকায় রক্ত ঝরল পাক সেনার। সে দেশের সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, রবিবার টোবো-গিরচিক এলাকায় পাক সেনার একটি গাড়ি আইইডি বিস্ফোরণে উড়ে যায়। ঘটনায় মৃত্যু হয় কাশিফ নামে এক সেনা ক্যাপ্টেনের। জখম হন দুই সেনা।
পাক সেনার দাবি, ওই অঞ্চলে সক্রিয় বালুচ বিদ্রোহীরাই বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। ঘটনার পরে এলাকা জুড়ে তল্লাশি অভিযান শুরুর কথাও জানিয়েছে পাক সেনা। বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, আহত দুই সেনা জেলা সদর খুজদরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এর আগে শুক্রবার বালুচিস্তানের গদর বন্দরের অদূরে একটি অসামরিক গাড়িতে আইইডি বিস্ফোরণে দুই শিশু-সহ তিন জনর মৃত্যু হয়েছিল। ওই ঘটনার জন্যও বিদ্রোহী-গোষ্ঠী ‘বালুচ লিবারেশন আর্মি’-কে দায়ী করেছিল পাক সরকার।
তিন মাস আগে আফগানিস্তান থেকে আমেরিকার সেনা প্রত্যাহার শুরু হওয়ার পরে বালুচিস্তান সীমান্ত থেকেই তালিবান অভিযান পরিচালিত করেছে বলে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের দাবি। বারে বারেই বালুচিস্তানের রাজধানী কোয়েটায় তালিবান নেতাদের ‘উপস্থিতি’ খবরে এসেছে। বালুচিস্তান সীমান্ত পেরিয়েই তালিব জঙ্গিরা ইরান এবং তুর্কমেনিস্তান সীমান্তবর্তী আফগান প্রদেশগুলি দখল করেছিল। পাশাপাশি, কন্দহর এবং হেলমন্দ প্রদেশে তালিবান অভিযানও পরিচালিত হয়েছিল বালুচিস্তান থেকে।
গত ১৬ জুলাই বালুচ সীমান্ত লাগোয়া স্পিন বল্ডোকে তালিবান হামলায় নিহত হয়েছিলেন, ভারতীয় চিত্রসাংবাদিক দানিশ সিদ্দিকি। জুলাই মাসেই বালুচিস্তান-আফগান সীমান্তের চৌকিগুলি থেকে ‘ফ্রন্টিয়ার কনস্টেব্যুলারি’ বাহিনীকে সরিয়ে সেনা মোতায়েনের কথা জানিয়েছিলেন পাক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ রশিদ আহমেদ। প্রসঙ্গত, ১৯৯৬ সালে আফগানিস্তানে দখলদারি চালানোর সময় মূলত খাইবার-পাখতুনখোয়া প্রদেশের সীমান্ত ব্যবহার করেছিল তালিবান। ওই প্রদেশের রাজধানী পেশোয়ার থেকেই তৈরি হয়েছিল আফগানিস্তান দখলের পরিকল্পনা।
আফগানিস্তানে সাম্প্রতিক অশান্তির আঁচ ইতিমধ্যেই পড়েছে পাকিস্তানের খাইবার-পাখতুনখোয়া প্রদেশে। গত বুধবার দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানে তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি) গোষ্ঠীর সঙ্গে সংঘর্ষে পাক সেনার এক নায়েব সুবাদার নিহত হয়েছিলেন। এই পরিস্থিতিতে বালুচিস্তানে স্বাধীনতাপন্থী বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলির সক্রিয়তা ইমরান খান সরকারের চিন্তা বাড়াবে বলেই মনে করা হচ্ছে।